বাগান ফেরতের গচ্চা দু’কোটি
যাক আমরা দ্বিতীয় ডিভিশনে নামছি না

মার প্রিয় মোহনবাগান ক্লাবের গায়ে কখনও দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যাওয়ার কালি না লাগার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ থাকায় সবচেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে। দু’কোটি টাকার বিরাট পেনাল্টি দেওয়া আমার মতে ওই লজ্জার কাছে কিছুই নয়। এআইএফএফ মোহনবাগানের ওপর থেকে সাসপেনশন তুলে না নিলে ক্লাবের ১২৪ বছরের সুপ্রাচীন ঐত্যিহের গায়ে পরের আই লিগে দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলার কালি লাগত। যে মোহনবাগান কি না কোনও কালে কোনও টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় ডিভিশনে নামেনি।
অনেকে বলাবলি করছেন, ফেডারেশন নিজের দেওয়া শাস্তি দু’কোটি টাকার বিনিময়ে উল্টে দিয়ে আই লিগের আইনকানুনকেই অপমান করল। আমি এই ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত নই। ফুটবল নিয়ে, শুধু ফুটবল কেন, সব খেলারই আইনের মূল লক্ষ্য কী? না, সবার আগে সেই খেলার স্বার্থ রক্ষা করা। দেখা যে, নিয়ম মানতে গিয়ে যেন খেলা বা খেলোয়াড়দের ক্ষতি না হয়। ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগানের মতো ঐতিহাসিক ক্লাবকে বাদ দিয়ে কি আই লিগের জৌলুস থাকত? যে ক্লাব ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। যে ক্লাবের অংসখ্য ফুটবলার ভারতের হয়ে বিরাট সুনামের সঙ্গে খেলেছেন, সেই ক্লাবের পা থেকে একটা ম্যাচে খেলার মতো পরিস্থিতি ছিল কি ছিল না, তার বিচারে ফুটবলটাই কেড়ে নেওয়া কি ন্যায্য হত? আমি তো প্রফুল্ল পটেলকে সাধুবাদ দেব যে, একটু দেরিতে হলেও তিনি মোহনবাগানের প্রতি সুবিচার করেছেন। মঙ্গলবার আমার প্ল্যাটিনাম বছরের জন্মদিনে মোহনবাগানের ‘বেঁচে’ যাওয়াটাই আমার পাওয়া সেরা উপহার। ওডাফাকেও মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত ফুটবলের স্বার্থেই ডিসিপ্লিনারি কমিটি ক্ষমা করে দেবে।
দু’কোটি টাকাটা মোহনবাগানের মতো বড় ক্লাবের কাছে বিরাট না হলেও আই লিগ-সহ ভারতের অনেক ফুটবল ক্লাবের কাছেই বিরাট ব্যাপার। এ দিনই তো আনন্দ টিভি-তে ভাইচুং বলছিল, ওর ইউনাইটেড সিকিমের পুরো বাজেটই দু’কোটি টাকা। আমার মতে না খেলে ফেডারেশনকে জরিমানা দিয়ে বেঁচে যাওয়ার চিন্তা করার আগে অন্য অনেক ক্লাব দু’বার ভাববে, এত টাকা যোগাড় করা নিয়ে।
শুভ দিনেও অবশ্য একটা কর্কশ কথা না বলে থাকতে পারছি না। মোহনবাগানের যে বিশেষ কয়েকজন কর্তা সে দিন মাঠ থেকে দল তুলে নেওয়ার মহাভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাঁরা যদি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আগেই পদত্যাগ করতেন, তা হলে এ দিন আমার ক্লাবের পুরো কার্যকরী কমিটির গায়ে আগামী এক বছর ফেডারেশনের সভা থেকে সাসপেন্ড হয়ে থাকার কলঙ্কও লাগত না। বরং ওই তিন-চারজন মোহনবাগান কর্তার আরও শাস্তি প্রাপ্য ছিল। তবে এখন আর মোহনবাগানে সচিব, প্রেসিডেন্ট কিংবা ফুটবল বিষয়ক প্রধান কর্তার কোনও গুরুত্ব থাকল না আমার মতে। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার কোনও সভাতেই তো ওঁদের আর মুখ দেখাবার রাস্তা থাকল না। এত অপমানিত হওয়ার পরেও ওঁরা মোহনবাগান থেকে পদত্যাগ না করলে আর কবে করবেন?
সব শেষে একজন প্রাক্তন মোহনবাগান ফুটবলার হিসেবে ক্লাবের বর্তমান টিমকে আমার একটা পরামর্শ। নবি, তোমরা আরও উৎসাহিত হয়ে বাকি ষোলোটা ম্যাচ খেলো। আই লিগকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নাও। অবনমন বাঁচানোর চেয়ে অনেক-অনেক বেশি পয়েন্ট পাবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.