বাগান ফেরতের গচ্চা দু’কোটি
আমাদের কলঙ্কটা তো থেকেই গেল
নন্দ না দুঃখ, ঠিক কোন অভিব্যক্তি দিয়ে লেখাটা শুরু করা উচিত বুঝতে পারছি না।
বিশ্বাস করুন, মোহনবাগান নির্বাসিত হওয়ার দিন থেকে আজ পর্যন্ত এক রাতও ঠিক করে ঘুমোতে পারিনি। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে ক্লাবের সঙ্গে আমি জড়িয়ে। ক্লাবের কলঙ্ক নিয়ে সমাজের নানা জায়গায় আমাকেও কথা শুনতে হয়েছে, জবাবদিহি করতে হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ফুটবল ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত দমকা হাওয়ার মতো এল ঠিকই, কিন্তু পুরো কলঙ্কমুক্ত কোথায় হলাম?
আমি ভাবতে পারছি না, মোহনবাগানকে দু’কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। ভাবতে পারছি না, দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী ক্লাবের আই লিগে প্রথম দশ ম্যাচের পয়েন্ট কেটে নেওয়া হল, শুরু করতে হবে আবার শূন্য থেকে! বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, মোহনবাগান কর্তারা ফেডারেশনের সভায় এক বছর ঢুকতে পারবে না!
ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলকে ধন্যবাদ। তিনি ক্লাবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আবেগকে বুঝতে পেরেছেন। দুপুর থেকে শুনছি, ফেডারেশনের এই সিদ্ধান্তে নাকি বাকি ক্লাবগুলো মোহনবাগানের মতোই ইচ্ছেমতো মাঠে ইট ছুড়বে। ছুড়ে রেহাই পেয়ে যাবে মোহনবাগানের উদাহরণ টেনে। যাঁরা এটা ভাবছেন তাঁদের বলে রাখি, অঞ্জন-দেবাশিসদের কথায় কিন্তু নির্বাসন ওঠেনি। উঠেছে সমর্থকদের আবেগকে মনে রেখে, মানস-বিদেশের মতো প্রাক্তন মোহনবাগান ফুটবলারদের আবেদনে। সাতাত্তরে আমাদের যে টিম ত্রিমুকুট জিতেছিল, তাতে মানসরা ছিল। আজও ওরাই জেতাল।
উচ্ছ্বাস যখন বল্গাহীন। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
আর ওদের যতটা প্রশংসা প্রাপ্য, ততটাই ধিক্কার দেব মোহনবাগান কর্তাদের। অঞ্জন-দেবাশিসদের যদি সামান্যতম আত্মমর্যাদা থাকে, তা হলে এর পর ওরা পদত্যাগ করবে। কী করেছে ওরা এত দিন ক্লাবের জন্য? একটা প্লেয়ার তুলেছে? ক্লাব সদস্যদের জন্য কিছু করেছে? মোহনবাগান তাঁবুতে যান। দেখতে পাবেন, সেখানে মারাদোনার সঙ্গে অঞ্জনের ছবি। টুটু বসু দাঁড়িয়ে অলিভার কানের সঙ্গে! কিন্তু চুনী গোস্বামীর গর্বের কোনও মুহূর্ত খুঁজতে যান, পাবেন না। আলফ্রেডো ডি’স্টিফানো যদি রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, চুনীদা কেন মোহনবাগানের হবে না? কেন সচিব করা যাবে না প্রদীপ চৌধুরীকে?
আসলে এই কর্তাদের দল এত দিন যথেচ্ছাচার করে এসেছে ক্লাবের সঙ্গে। মোহনবাগানকে ব্যবহার করেছে। আজ মোহনবাগানকে দু’কোটি টাকা দিতে হবে টিম তুলে নেওয়ার অপরাধে। মোহনবাগান কেন দেবে? টিম তোলার সিদ্ধান্ত ছিল ওই চার কর্তার। ওরা দিক। আজ ওদের শাস্তি পাওয়া নিয়ে আমাদের লজ্জা হচ্ছে। অপমানিত লাগছে। কিন্তু ওদের লাগছে কী?
তাই একজন কট্টর মোহনবাগান সমর্থক হিসেবে, ক্লাবের প্লেয়ার হিসেবে, দেশের প্রাক্তন প্লেয়ার হিসেবে মোহনবাগান সদস্য, সমর্থকদের কাছে একটা বিনীত অনুরোধ রাখছি। ক্লাবের মাথা যথেষ্ট হেঁট হয়েছে এত দিন। অনেক কলঙ্ক গায়ে লেগেছে। এই কর্তাদের আর আপনারা ক্ষমা করবেন না। যদি এরা চলে যায়, ভাল। না গেলে আপনারাই এদের ক্লাব থেকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা করুন।

‘ম্যাচ’ কী ভাবে ঘুরল

এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গে মোহনবাগান প্রেসিডেন্ট টুটু বসুর ৩২ বছরের বন্ধুত্ব।

মোহনবাগানের ঐতিহ্য এবং সমর্থকদের আবেগকে ঢাল বানানো।

মোহনবাগানের শাস্তি কমানোর জন্য লেখা চিঠিতে আই লিগের এগারো ক্লাব কর্তার সই।

এআইএফএফ ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত-সহ কর্মসমিতির প্রায় সব সদস্যকে ম্যানেজ।

নির্বাসনে যাওয়ার পর দিন থেকেই ফেডারেশনের একটা বিশেষ অংশের পূর্ণ সাহায্য পাওয়া।

অপ্রকাশিত থাকল আরও কিছু তথ্য।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.