তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য রায়গঞ্জের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলেই রাজ্যের মন্ত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। রবিবার হেমতাবাদের শেরপুর বাগরোল ঘাটে একটি সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওই অভিযোগ করেছেন দীপাদেবী। তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের মদতে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি রায়গঞ্জেরও আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসক দল পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভাল চোখে দেখছেন না। এই জন্যই রায়গঞ্জে দুই মন্ত্রীকে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছে।”
গত দুমাসে রায়গঞ্জ থানা এলাকায় ১১টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও দুষ্কৃতীদের মধ্যে গুলিবোমা লড়াই লেগে থাকার ঘটনাও নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি কেবল টিভির কর্তা খুনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। তৃণমূল বাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গত সোমবার পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের বদলির দাবিতে ১২ ঘণ্টা বনধও ডাকে। গত শুক্রবার স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। |
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী সুব্রত সাহাকে। এ দিন দীপাদেবী অভিযোগ করে জানান, ওই দুই তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় কংগ্রেসকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তৃণমূলের নেতা কর্মী সমর্থকরাও তাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। রায়গঞ্জে দুষ্কৃতীরা অবাধে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা মজুত করছে। একের পর এক খুন ও অপরাধের ঘটনা বাড়তে থাকায় বাসিন্দারা নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। শুধু পুলিশ সুপারই নয়, নিষ্ক্রিয় সমস্ত পুলিশ অফিসারদেরই অবিলম্বে সরে যাওয়া উচিত।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের পাল্টা বক্তব্য, “দল দুষ্কৃতীদের মদত দেয় না। বাজে কথা বলছে কংগ্রেস। পুলিশকে সরকার দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছে। কংগ্রেসের প্ররোচনাতেই স্থানীয় কিছু বাসিন্দা দুই মন্ত্রীর পথ আটকে অশালীন মন্তব্য করেন। দীপাদেবীর পঞ্চায়েতের আগে রাজনীতি শুরু করেছেন”
কেন্দ্রীয় সরকারের সীমান্ত উন্নয়ন তহবিলের প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকায় কুলিক নদীর ওপরে তৈরি ৮৫ মিটার লম্বা সেতু ও চার কিলোমিটার লম্বা অ্যাপ্রোচ রোডের উদ্বোধন করেন দীপাদেবী। এতদিন হেমতাবাদ ব্লকের বাসিন্দাদের রায়গঞ্জ হয়ে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে বিন্দোলে যেতে হত। এবারে হেমতাবাদ থেকে বিন্দোলের দূরত্ব কমে দাঁড়াল ১০ কিলোমিটার। |