|
|
|
|
উত্তরের চিঠি |
|
প্রতিদিনই নারীদিবস |
গল্পটা ভালবাসার হলে গান দিয়ে শুরু হত। ভয়ের হলে সংলাপ দিয়ে। কিন্তু গল্পটা যেহেতু ঘেন্নার, তাই খিস্তি দিয়ে শুরুই মানবিক কর্তব্য আমাদের সকলের। মনের মধ্যে জড়ো হওয়া প্রশ্নের সরণি বেয়ে হেঁটে চলেছে পার্ক স্ট্রিট, দিল্লির বসন্তবিহার। তবু এমনই কিছু কিছু সমস্যা শুধু ভাবায় আর সমাধানের পথ নিয়ে যায় আরও অন্ধকারে। জল কামান, ১৪৪, ভিজিল যার শেষ আপডেট। তবু ছবিটা বদলাবে কি? নারী নির্যাতনের মতো হাইলাইটেড এজেন্ডা আজ থিমপুজোর চক্করে। ৪ দিন কোনও মহিলা মালালার হয়ে কলম ধরলে বা দেশে রেপের পরিসংখ্যান তুলে মিছিলে আগে হাঁটলেই বলে দিই সে ফেমিনিস্ট। অথচ এ প্রহরা আজ ভীষণ জরুরি। স্মৃতির কোনটা সেকেন্ডারি, কোনটা প্রাইমারি বলা যায় না। কিন্তু লঙ্কা ফেরত সীতাকে আগুনের সামনে দাঁড় করায় রামচন্দ্র। যে দেশের এপিক পুরুষকে রিপ্রেজেন্ট করে, যেখানে পাশা খেলার লাইম লাইটে দ্রোপদী, সেই মহাভারতে আইন, শাসন, কমিশন তৈরি করে যদি চোখের পর্দা খোলাতে হয়, তবে মেয়েরাই কোনও পুরুষের একমাত্র চাঁদমারি সে কারণ খোঁজার জন্য দেশের ‘নারী সম্পদ’ নামের দফতর পর্যন্ত খুলে দিয়েছে সরকার। এখনও বহু মধ্যবিত্ত সংসারে মেয়েরা রোজগারের যন্ত্র। সংসারের এ টু জেড ঠিকঠাক চালানোর দায়ভার শুধু তাদের! তাই তো সেই ক্লাস শুরু হয় পুতুল খেলা দিয়ে। |
|
ছবি: সন্দীপন নন্দী। |
জন্মদিনের উপহারে উঠে আসে বার্বিডল কিংবা স্টিলের রান্নাবাটি। নামটা ছেলের হলে আপত্তি উঠত। কিন্তু যেহেতু সে মেয়ে তাই প্রশ্ন ওঠাটা অনিবার্য নয়। একটা মেয়ে তখনই সুরক্ষিত, যখন তার পাশে পুরুষ থাকবে। সেই পুরুষই ঠিক করবে কোন পোশাকে নারী সাবলীল বা কোন গলি তাদের জন্য প্রোহিবিটেড অথবা রাত্রি ক’টার পর ব্যাচ থেকে ফেরার সময় পাশে গার্জিয়ান রাখতে হবে। সুতরাং মেয়েদের এখন সবচেয়ে বড় ভয় পুরুষ। লোকসভা, বিধানসভায় বিল এল, সংরক্ষণ হল তবু স্বরাজ এল কই? শুধু সুষমার দল আরও আঁধার নিয়ে মুখ লুকিয়ে লড়াই করছে এই সমাজে। বাঁচার লড়াই, বাস্তুতন্ত্রের সবশ্রেণির কনজিউমার থেকে বাঁচার লড়াই। যেখানে রুলমেকাররাই রুল ব্রেকার। তাই মনে হয় মেয়েদের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়াটা খুব জরুরি। তবু পার্কস্ট্রিটের এগারো মাস পরেও চার্জশিট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তৈরি হয়নি। অথচ ‘ঘোর দোষী’ দময়ন্তী সেনকে সরে যেতে হয়। এই ঘোরতর অন্যায়ে একটা মোমবাতিও জ্বলেনি কোথাও। একটাকে লঘু করতে আরও অন্যায় হল। প্রতিবাদ মিছিলও দেশের নাগরিক সমাজ বেছে বেছে করবে, এটা অনভিপ্রেত। তাই গভীর রাতে আরও পুলিশ থাকলেই কাল থেকে রেপ হবে না, অন্ধকার বাছাই করে নিয়ন আলো ভরিয়ে দিলেই মেয়েদের সম্ভ্রম লকারের মতো সেফ, এটা অসম্ভব। চাই আত্মনিয়ন্ত্রণ, চাই সংযম, চাই মেয়েদের প্রতি আরও সম্মানের বাড়াবাড়ি। শুধু ৮ মার্চ নয়, প্রতিদিন নারীদিবস ভেবে ওদের সুরক্ষা দিতে হবে পুরুষদেরই। যে পুরুষের শিক্ষা মার্জিত, আত্মনিয়ন্ত্রণও তত মাননীয়। এই বোধ, চেতনা আসে তার বেড়ে ওঠা আর শিক্ষা থেকে। শুধু জীবনে বড় হওয়ার জন্য নয়, মানুষ হয়ে বড় হতে দরকার ভীষণ দরকার শিক্ষা। যে পাঠ শুরু হয় নিজের মতো করে, নিজের বাড়িতে। আমরা আমাদের বদলালেই যে সব সমাধানের জাদুকাঠি সমাজ পাবে তা নয়। তবু পুরুষরা ধীরে ধীরে যে ভাবে দিন দিন মেয়েদের চোখে ব্রাত্য হয়ে উঠেছে সেখানে দাঁড়িয়ে আগামী দিনে সম্পর্কের উপর একটা ভারী জিজ্ঞাসা চিহ্ন বসা জাস্ট সময়ের অপেক্ষা। এই পরিস্থিতিতে মেয়েদের কাছে সম্মানের ল্যাপটাকে ভিকট্রি স্ট্যান্ড পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে পুরুষের ব্যবহার। চেতনা আর মনন। তখন পুরুষের আত্মনিয়ন্ত্রণে এক জন করে পুলিশকে প্রহরায় বসাতে হবে না। পুলিশকে আরও বড় সামাজিক ব্যাধি, অবক্ষয় রোধে ছুটে যেতে হবে! মেয়েদের কাছে গভীর রাতের কোনও আলাদা ডেফিনেশন তৈরি হবে না। এক সঙ্গে বেড়ে ওঠা আদম-ইভের স্টোরিটা এত দিনে মন দিয়ে পড়বে মানবীরা। অপেক্ষায় রইলাম।
সন্দীপন নন্দী। বালুরঘাট
|
এরা কেন উপেক্ষিত |
১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমির উদ্যোগে শিলিগুড়ি বাঘাযতীন পার্কে অনুষ্ঠিত হল অষ্টম উত্তরবঙ্গ লিটল ম্যাগাজিন মেলা। মেলার উদ্বোধক ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী গৌতম দেব। সংবর্ধিত হন সাহিত্যিক অশ্রুকুমার সিকদার ও নেপালি কবি ইন্দ্রবাহাদুর রাই। উত্তরের ৬ জেলা নিয়ে সাজানো ছিল মেলা। কোচবিহারের ‘উত্তরপ্রসঙ্গ’, রায়গঞ্জের ‘চয়ন’, বালুরঘাটে ‘দধীচি’, শিলিগুড়ি শহরের ‘বৈতানিক’, জলপাইগুড়ির ‘জেলেপিগুড়ি’, মালদহের ‘সূর্যাবর্ত’-সহ আরও অনেকে স্টলগুলিকে সমৃদ্ধ করেছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও সুর কাটে যখন উত্তরবঙ্গের লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের পুরোধা আনন্দগোপাল ঘোষ, সৌমেন নাগ কিংবা সুখবিলাস বর্মার মতো মানুষ ডাক পান না। ভালবেসে যতটা আনন্দ, আঘাত করে কি তার থেকেও বেশি পাওয়া যায়? এ থেকেই কি আমরা-ওরার উৎপত্তি।
সমিত ঘোষ। বালুরঘাট। |
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ
নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
উত্তরের চিঠি
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি-৭৩৪৪০১ |
|
|
|
|
|
|