মালদহ মেডিক্যাল
বিজ্ঞাপন দিয়েও অমিল হাউসস্টাফ
প্রতিদিন যেখানে হাজার থেকে বারোশো রোগীর চাপ থাকে, সেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজে কোনও হাউসস্টাফ নেই। হাউসস্টাফ চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েও ফাঁপরে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার, ১৪ জানুয়ারি সেই পদে আবেদন করার শেষ দিন। শূন্য পদ ৬১টি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আবেদন জমা পড়েছে মাত্র ১টি।
দু’বছর আগে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতেই এই মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করতে আসছেন মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার (এমসিআই) প্রতিনিধি দল। তার পরেই রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই ৬১ জন হাউসস্টাফের পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতো বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়। কিন্তু এখন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমসিআই মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদনও আটকে দিতে পারে। ছ’মাস আগেই এমসিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল এক বার পরিদর্শনে এসে এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ঘাটতির প্রসঙ্গ তোলে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন মুচলেকা দিয়েছিলেন যে, দ্রুত সেই শূন্য পদ পূরণ করা হবে। কিন্তু সে কথা এখনও পর্যন্ত রাখা যায়নি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মালদহ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল ভদ্র চাইছেন নতুন করে আবার বিজ্ঞাপন দিয়ে শূন্য পদে হাউসস্টাফ নিয়োগ করতে। উচ্ছ্বলবাবু বলেন, “এখনও পর্যন্ত মাত্র এক জন আবেদন করেছেন। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যদি দেখা যায়, আবেদনকারীর সংখ্যা এমনই অল্প রয়ে গিয়েছে, তা হলে পুনরায় হাউসস্টাফ নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে।”
কিন্তু কেন হাউসস্টাফ পাওয়া গেল না? উচ্ছ্বলবাবু বলেন, “তা বলতে পারব না। নতুন করে বিজ্ঞাপন দিয়ে দেখা যাক হাউসস্টাফ পাওয়া যায় কি না। যদি আবারও না পাওয়া যায়, তবে হাসপাতাল সঙ্কটের মুখে পড়বে।” চিকিৎসক মহলের অবশ্য বক্তব্য, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে গেলে ডাক্তারির ছাত্রদের আগে কেবল সরকারি হাসপাতালেই হাউসস্টাফের কাজ করা বাধ্যতামূলক ছিল, কিন্তু এখন আর সেই কড়াকড়ি নেই। রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ডাক্তারির ছাত্রদের এই কড়াকড়ি উঠে যাওয়াতে সত্যিই সমস্যা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি ইনটার্নদের মধ্যে থেকে জুনিয়র রেসিডেন্ট নিয়োগ করে সমস্যার সমাধান করতে। কিন্তু তা-ও বাধ্যতামূলক করা যাচ্ছে না এই মুহূর্তে। ফলে সমস্যা রয়েই যাবে।” জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “মালদহে হাউসস্টাফ হতে কেউ আসতে চাইছেন না, এ কথা আমাকে কেউ জানাননি। তবে আমি চিকিৎসকদের বলব, আপনারা নির্ভয়ে মালদহে আসুন। মালদহ শান্তিপ্রিয় এলাকা। এখানে কোনও অসুবিধা হবে না।”
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি আড়ির বক্তব্য, ৬৫০ শয্যার এই হাসপাতালে গড়ে হাজার থেকে বারোশো রোগী সব সময় ভর্তি থাকছেন। ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “রোগীদের ঠিকঠাক পরিষেবা দিতে আমাদের ৬১ জন হাউসস্টাফই দরকার।”
তবে চিকিৎসকদের সঙ্কট এই মেডিক্যাল কলেজে সম্প্রতি বেড়েছে অন্য কারণেও। এখানে ৪১ জন চিকিৎসককে বিভিন্ন শিক্ষকপদে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। ৯ জানুয়ারির মধ্যে তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৭ জন চিকিৎসক-শিক্ষক কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যেও ১১ জন চিকিৎসক-শিক্ষককে আবার রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তাই পরিষেবায় আরও বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.