বাঁকুড়া জেলার ১৭টি কলেজের মধ্যে ১৫টি কলেজেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতল টিএমসিপি। বাঁকুড়ার খ্রিস্টান কলেজ ও ইঁদপুর ব্লকের শালডিহা কলেজে শুধু নির্বাচন হচ্ছে। এসআফআইয়ের দাবি, টিএমসিপি তাদের মনোনয়ন পত্র জমা করতে দেয়নি। যদিও টিএমসিপি নেতৃত্ব তা মানতে চায়নি।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, “এ বার জেলার ১৭টি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টিএমসিপি-র সন্ত্রাস চালিয়ে আমাদের প্রার্থীদের প্রায় সব কলেজেই মনোনয়ন পত্র তুলেতে দেয়নি। শুধুমাত্র খ্রিস্টান কলেজে ৭টি ও শালডিহা কলেজে কোনওরকমে আমরা ১৯টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছি। বাকি ১৫টি কলেজে ওরা আমাদের প্রার্থীই দিতে দেয়নি।” এসআফআইয়ের দাবি, ইন্দাস, চাতরা, পাত্রসায়র, বিষ্ণুপুর ও পাঁচমুড়া কলেজে টিএমসিপি ব্যাপক সন্ত্রাস চালিয়েছে। কোথাও কোথাও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও তাদের প্রার্থীদের টিএমসিপি-র সদস্যেরা চমকায় বলে অভিযোগ।
এসএফআইয়ের আরও অভিযোগ, তাদের সংগঠনের সদস্য ছাত্রছাত্রীদের কলেজে ক্লাস করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাইরে থেকে ছেলে ঢুকিয়ে কলেজে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। ওদের সন্ত্রাস থেকে কলেজের এমনকী অধ্যাপকেরাও রেহাই পাচ্ছেন না। শুক্রবারই বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজে বহিরাগতদের কলেজে ঢুকিয়ে এক অধ্যাপককে নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। তার আগে শালতোড়া নেতাজি সেন্টেনারি কলেজ ও সোনামুখী কলেজে ভোটার তালিকা দেখা ও মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে টিএমসিপি এবং এসএফআইয়ের মধ্যে সংঘর্ধ বাধে। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজে ছাত্র সংসদের ২৪টির মধ্যে ৭টি ও ইঁদপুরের শালডিহা কলেজে ২৪টির মধ্যে ১৯টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে এসএফআই। বৃহস্পতিবার খ্রিস্টান কলেজে এবং শনিবার শালডিহা কলেজে নির্বাচন হওয়ার কথা।
গত বছর এই জেলায় ১৮টি কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়েছিল। তার মধ্যে ছাতনা বাদে বাকি ১৭টি কলেজে টিএমসিপি জিতেছিল। এ বার নির্বাচনের আগেই ১৫টি কলেজ তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজেদের দখলে রাখল।
কলেজে শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই-- এই অভিযোগকে সামনে রেখে ব্লকে-ব্লকে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষা সচেতন মানুষদের নিয়ে কনভেনশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসএফআই। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক জানান, ১৯ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলার সবকটি ব্লকেই এই কনভেনশন করা হবে। লিফলেটও বিলি করা হচ্ছে।
টিএমসিপি-র বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। আসলে এসএফআইয়ের সংগঠন এতই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে ওরা প্রার্থীই দিতে পাচ্ছে না।” জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। নির্বাচনে যাতে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। |