জমি-বিবাদ ঘিরে রাজাবাগানে বোমাবাজি, গুলিবিদ্ধ ২
মি নিয়ে বিবাদকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বন্দর এলাকার রাজাবাগান। জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বোমাবাজি এবং গুলি চলে রাজাবাগান থানার পাঁচপাড়া রোডে। পুলিশ জানায়, নৌশাদ আলি (৫২) নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর ছেলে মইদুল ইসলাম (২২) গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকেই স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সবের জেরে এলাকায় দিনভর
জখম মইদুল ইসলাম।
উত্তেজনা থাকায় দফায় দফায় পুলিশি টহল চলেছে। বসেছে পুলিশ পিকেট। মহম্মদ বাবলু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সামনেই গুলি বোমা চললেও পুলিশ কার্যত দাঁড়িয়ে ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গণ্ডগোলের সূত্রপাত পাঁচপাড়া রোডে ১৩ কাঠার একটি জমির মালিকানা নিয়ে। ডি সি (বন্দর) ভি সলমন বলেন, “পাঁচপাড়া রোড ও পাশের কুলুকপাড়ার দুই বাসিন্দার মধ্যে ওই জমির মালিকানা নিয়ে গণ্ডগোল চলছিল। বিষয়টা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই জমিতে কাউকেই কোনও নির্মাণকাজ না-করার নির্দেশ দেন।”
যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, আদালতের এই নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওই জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মাঝেমধ্যেই উত্তেজনা ছড়াত। আগেও ওই জমিতে কে বা কারা রাতে বোমা পর্যন্ত ছুড়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত চার মাস ধরে রাতে ওই জমির কাছে পুলিশি টহলও চলত। রবিবার সকালে এক পক্ষ ওই জমিতে পাঁচিল তুলতে গেলে আর এক পক্ষ বাধা দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে ওই জমি ছেড়ে পালায় পাঁচিল তুলতে আসা লোকজন। কিছুক্ষণ পরেই মোটরবাইকে চেপে ফিরে আসে চার যুবক।
বিতর্কিত সেই জমি। —নিজস্ব চিত্র
জমিটির কাছে এসে ছ’টি বোমা ছোড়ে তারা। জমি সংলগ্ন নৌশাদ আলির কারখানায় ঢুকে গুলিও চালায়। নৌশাদ ও তাঁর ছেলে মইদুল কারখানার ভিতরেই ছিলেন। দু’জনকেই খুব কাছ থেকে গুলি করে মোটরসাইকেলে চেপে পালায় দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ নৌশাদ ও মইদুল রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাঁদের একবালপুরের এক নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মইদুলের বুকের বাঁ দিকে ও নৌশাদের বুক ও পেটের মাঝে গুলি লেগেছে।
এ দিকে, এই ঘটনার পরেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। নৌশাদের পাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমিটির কাছেই পুলিশের দুই সাব-ইনস্পেক্টর টহল দিচ্ছিলেন। পুরো ঘটনাটি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন তাঁরা। এমনকী ওই দুই পুলিশকর্মীর কাছে বন্দুক থাকলেও তাঁরা কিছুই করেননি বলে অভিযোগ। যদিও ডেপুটি কমিশনার বলেন, “স্থানীয়দের থেকে এমন একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিভাগীয় তদন্ত করছি। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” নৌশাদ ও মইদুলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। নৌশাদের এক আত্মীয় জাভেদ আলি মোল্লা বলেন, “অনেক দিন ধরেই এই জমিটা নিয়ে গণ্ডগোল চলছে। আগেও এখানে বোমা পড়েছে। আমাদের বাড়ি ওই বিতর্কিত জমি সংলগ্ন হওয়ায় বাড়ির কাচ ভেঙেছে। আমরা থানায় অভিযোগও করেছি। কিন্তু আজ পুলিশের সামনেই যা ঘটল, এর পরে এই এলাকায় কী ভাবে বসবাস করব, বুঝতে পারছি না।” ডি সি (বন্দর) ভি সলমন অবশ্য জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র রাখার অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.