কলকাতা ও বর্ধমান: আশঙ্কাটা ছিলই। তা সত্যি হয়ে গেল বর্ধমানে।
ডাক্তারদের মর্জিমাফিক হাসপাতালে ঢোকা-বেরনোয় রাশ টানতে ‘বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স মেশিন’ বসিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। দশ দিন না পেরোতেই সেই নজরদার যন্ত্রের মুখ আঠা দিয়ে সেঁটে বন্ধ করে দেওয়া হল।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এই ঘটনাকে অবাধ্য কর্মীদের ‘জেহাদ’ বলেই মনে করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য-কর্তারা। সপ্তাহ দুয়েকও হয়নি, হাসপাতাল সুপারের দফতরে এবং ইনডোর নিউ বিল্ডিংয়ে দু’টি যন্ত্র বসানো হয়েছিল। যে সংস্থা সেগুলি বসিয়েছিল, তারা বৃহস্পতিবার সুপার অসিতবরণ সামন্তকে জানায়, ইনডোরের যন্ত্র বিকৃত করা হয়েছে। তা কাজ করছে না।
শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “ফেভিকল লাগিয়ে যন্ত্রটি বিকল করে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর।” চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, “কিছু কিছু ডাক্তারের কাজ না করার সংস্কৃতি চালু রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর মৌচাকে ঢিল ছুড়েছে, তাই ওঁরা হুল ফোটাচ্ছেন।”
বছরখানেক আগে স্বাস্থ্যভবনে প্রথম বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো হয়। এতে আঙুলের ছাপ দিয়ে কর্মস্থলে ঢোকা-বেরনো নিয়ম। মাসখানেক আগে কলকাতায় এসএসকেএম এবং এম আর বাঙুর হাসপাতালে পরীক্ষামূলক ভাবে যন্ত্র বসানো হয়েছিল। দিন দশেক আগে বসে বর্ধমানেও। এই পদ্ধতি সফল হলে রাজ্যের সব হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই এই যন্ত্র বসানোর কথা রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতি হাসপাতালেই অন্তত দু’টি যন্ত্র রয়েছে। আপাতত প্রথম শ্রেণির কর্মী অর্থাৎ ডাক্তার, নার্স এবং অফিসারেরা সেগুলির মাধ্যমে হাজিরা দিচ্ছেন। পরে সব কর্মীকেই এর আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। যন্ত্রের উপরে নজর রাখতে বসছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
রাতে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “কেউ যদি মনে করে থাকেন, এই ভাবে বায়োমেট্রিক হাজিরা বন্ধ করা যাবে, ভুল ভাবছেন। আমরা এমন পন্থা বের করব, যা ওঁরা কল্পনাও করতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে কে অপরাধী, তা আমরা জানতে পেরেছি। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |