|
|
|
|
অনলাইনে অভিযোগ পৌঁছবে থানা থেকে ডিজিপি পর্যন্ত |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের কথা শোনেনি কড়েয়া থানা। আমিনুলের অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও তদন্ত তো দূরে থাক, উল্টে অভিযুক্তের সঙ্গে পুলিশের একাংশের অশুভ আঁতাতের জেরে থানার সামনে আমিনুল গায়ে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হন। আমিনুলের মৃত্যুর পর সমস্ত ঘটনা পুলিশের বড় কর্তাদের নজরে আসে। নড়েচড়ে বসে লালবাজারের কর্তারা। আমিনুলের মতো এমন অনেক ঘটনাই আকছার ঘটছে। আভিযোগ, থানা সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনে না। আর সেই ক্ষোভের কথা আম জনতা পুলিশের বড় কর্তাদের কাছে পৌঁছে দিতেও পারে না ।
পশ্চিমবঙ্গে এর প্রতিকারের ব্যবস্থা এখনও হয়নি। ঝাড়খণ্ডের পুলিশ প্রশাসন কিন্তু এই ‘সিস্টেম’-এই একটি বড়সড় পরিবর্তন আনল। থানার খবর আর ‘জানি না’ বলে পার পাবেন না পুলিশের বড় কর্তারা।
শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতেই ঝাড়খণ্ডে চালু হল ‘ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিস্টেমস’ (সিসিটিএনএস)। এর ফলে যে কোনও থানায় দায়ের হওয়া যে কোনও ধরনের অভিযোগ থানার অফিসার ইন-চার্জ থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের সামনে থাকবে। এই নয়া তথ্য প্রযু্ক্তি ব্যবস্থায় থানায় না গিয়েও কোনও সাইবার কাফে, এমনকী নিজস্ব ল্যাপটপ থেকেও অভিযোগ দায়ের করার সুবিধা থাকছে। যার ফলে থানা অভিযোগ না নিতে চাওয়ার কোনও সুযোগই আর থাকছে না। সাধারণ মানুষের অভিযোগ চলে আসছে পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের নজরে।
রাঁচির জগন্নাথপুর থানায় গত কাল ওই সিসিটিএনএস ব্যবস্থা চালু করেন ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল গৌরীশঙ্কর রথ। তিনি বলেন, “ এটা একটা ছোট্ট প্রয়াস। কিন্তু অসংখ্য মানুষের অনেক কাজে আসবে।” ঝাড়খণ্ড পুলিশের আইজি (ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড অপারেশনস) সত্যনারাণ প্রধান বলেন, “শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হল। আশা করছি এক বছরের মধ্যে গোটা রাজ্যের সব থানাকেই এই ব্যবস্থার আওতায় আনা যাবে।” আপাতত সিসিটিএনএস ব্যবস্থা ব্যবস্থা চালু হচ্ছে রাঁচি ও খুঁটি—ঝাড়খণ্ডের এই দুই জেলাতে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ হোক কিংবা কলকাতা শহর, এখনও সেখানে এই ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। সদ্য তৈরি হওয়া কমিশনারেটগুলিতেও এই ব্যবস্থা নেই। কলকাতার দুই প্রান্তের দু’টি থানা, বাগবাজার ও নিউ মার্কেটে টেলিফোন করে জানা গেল অন-লাইনে অভিযোগ দায়ের করার ব্যবস্থা এখনও চালু হয়নি। বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রধান নীলু শেরপা বলেন, “আমরা এই ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছি।” বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনেই রয়েছে রাজ্যের তথ্য প্রযুক্ত নগরী, পাঁচ নম্বর সেক্টর।
ঝাড়খণ্ড পুলিশ জানাচ্ছে, নতুন ওই ব্যবস্থায় অভিযোগ দায়ের করা ছাড়াও বাড়ির ভাড়াটে কিংবা পেয়িং গেস্ট সম্বন্ধে পুলিশি খোঁজ খবরের আবেদন করা যাবে। এলাকায় কোনও অপরাধ ঘটলে তার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ জানানো যাবে। রয়েছে আরও অনেকগুলি ব্যবস্থা। অর্থাৎ সরাসরি পুলিশের সব মহলেই সাধারণ মানুষ নিজেদের সমস্যার কথা পৌঁছে দিতে পারবেন। প্রধান বলেন, “গত ৪ জানুয়ারি দিল্লিতে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। দেশের মধ্যে আমরা দ্বিতীয়। একবার কোনও অভিযোগ নথিভুক্ত হলেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, নিতে বাধ্য হবে।” |
|
|
|
|
|