সঙ্গিনীর দখল নিয়ে পূর্ণ বয়স্ক দুই গন্ডারের রেষারেষির বলি হল প্রায় ‘বৃদ্ধ’ এক পুরুষ গন্ডার। এ ঘটনা অবশ্য নতুন নয়, দিন কয়েক আগেই গরুমারা জাতীয় উদ্যানে একই ভাবে মারা গিয়েছিল বছর পনেরোর একটি গন্ডার। সেই তালিকায় ‘কান চেরা’ নয়া সংযোজন। জলদাপাড়া পশ্চিমের রেঞ্জের বাসিন্দা বছর পঁত্রিশের ওই গন্ডারটিকে ওই নামেই ডাকতেন বনকর্মীরা। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে অন্য একটি গন্ডারের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয়েছিল কানাচেরা। খড়্গের আঘাতে তার পেটে বেশ কিছুটা অংশ ফালা ফালা হয়ে গিয়েছিল। বন কর্মীরা তার উপরে নজর রাখছিলেন। চেষ্টা চলছিল তার চিকিৎসারও। কিন্তু ওই দিন রাতেই জখম অবস্থায় সে হলং বনাঞ্চলে চলে যায়। বনকর্মীরা ঠিক করেছিলেন জঙ্গলের মধ্যে কোনও ফাঁকা জায়গায় ঘুমপাড়ানি গুলি করে তার চিকিৎসা করা হবে। কিন্তু সে সুযোগ আর মেলেনি। |
বৃহস্পতিবার সকালে হলং নদীর পাড়ে মুখ থুবড়ে তার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বনকর্মীরা। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, ওই দিন রাতে হলং পেরিয়ে সে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে কুকুরের তাড়া খেয়ে পালানোর সময়েই পড়ে যায় নদীর খাতে। কিছুক্ষণ পরে মারা যায় সে। এ দিন ফালাকাটা ব্লকের শিবনাথপুর গ্রামের কয়ে কজন বাসিন্দা মৃত গন্ডারটিকে দেখতে পেয়ে বন দফতরে খবর দেন। বনকর্মীরা পরে ক্রেন এনে দেহটি নদী থেকে তুলে নিয়ে যান। জঙ্গলেই ময়না তদন্তের পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ডিএফও (কোচবিহার) রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “গন্ডারটি গুরুতর জখম ছিল। ঘুমপাড়ানি গুলি করলে তার ধকল সে কতটা নিতে পারত তা নিয়েও সংশয় ছিল। ভেবেছিলাম ফাঁকা জায়গায় এলে এক বার চেষ্টা করে দেখা হবে। সে সুযোগ মিলল কই!” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলদাপাড়ায় ১৫৫ টি গন্ডার রয়েছে। তার মধ্যে টিইসি বিটের ঘাস বনই অন্তত ১০টি গন্ডারের ঠিকানা। কান চেরার একটি কান কাটা ছিল। দলের সঙ্গীদের সঙ্গে লড়াই করে ওই হাল হয়েছিল তার। বনকর্মীরা নাম রেখেছিলেন ‘কান চেরা’। |