ঠান্ডা কমার লক্ষণ নেই উত্তরবঙ্গে
শৈত্য প্রবাহ চলছেই উত্তরবঙ্গে। দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছেপিঠেই রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। প্রবল ঠান্ডায় কোথাও আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে প্রশাসনের কাছে। আবার কোথাও ৬টি শিশু মৃত্যুর খবর পেলেও তার সঙ্গে ঠান্ডার যোগসূত্র নেই বলে প্রশাসন দাবি করেছে।
এ দিন সকালে শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে রোদের দেখা মিললেও হাওয়ায় কনকনে ঠান্ডা ভাব ছিল। দিনভর আকাশ পরিষ্কার থাকায় দু’দিন পরে বুধবার বাগডোগরা বিমানবন্দর ছিল স্বাভাবিক। বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন ১০টি বিমান ওঠানামা করেছে। কোনও বিমান বাতিল করা হয়নি।
বুধবার জলপাইগুড়ি শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪ ডিগ্রি। যা কিনা গত ৪৯ বছরের রেকর্ড বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। ১৯৬৪-র ৩০ জানুয়ারি শেষ বার জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রিতে নেমেছিল। শিলিগুড়ির তাপমাত্রা এ দিন ছিল ৭ ডিগ্রি। বুধবার আকাশ পরিষ্কার থাকায় ঝলমলে রোদে জলপাইগুড়িতে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১০ ডিগ্রির আশেপাশে ছিল। তবে সন্ধে থেকে ফের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আকাশ পরিষ্কার থাকায় সূর্যাস্তের পরেই মাটি থেকে ক্রমশ তাপ বেরিয়ে যেতে থাকায় রাতের তাপমাত্রা দ্রুত কমতে শুরু করে। বুধবারকে সিকিমেরও এই মরসুমের শীতলতম দিন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন রাজধানী গ্যাংটকের তাপমাত্রা ছিল ৩ ডিগ্রি, যা কিনা এই মরসুমের সবচেয়ে কম।
জলপাইগুড়ি বা গ্যাংটকের মত উত্তরবঙ্গের অনান্য এলাকাতেও এ দিন তাপমাত্রা অনেক কম ছিল। শিলিগুড়ি, বালুরঘাট, কোচবিহার, মালদহ সর্বত্রই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি কম ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “আরও একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তরবঙ্গে দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। তবে আগামী দুদিন আকাশ পরিষ্কার থাকবে। দিনের তাপমাত্রা বেশি থাকবে। তবে রাতের তাপমাত্রা উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমতে পারে। কুয়াশাও থাকতে পারে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, মালদহে আগুন পোহাতে গিয়ে পুড়ে মৃত্যু হয়েছেন ২ মহিলার। বুধবার মালদহের তাপমাত্রা নেমে হয়েছে ৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার থেকে বুধবার দুপুরের মধ্যে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালের শিশু বিভাগে ৬টি সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকলেই শ্বাসকষ্ট ও নিমোনিয়ায় ভুগছিল। ওই শিশু বিভাগের ২টি ওয়ার্মার ঘন্টা তিনেকের জন্য বুধবার বিকল হয়ে যায়। তাতে চিকিৎসাধীন শিশুদের বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যন্ত্র সারানো হয়। কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল মহম্মদ রসিদ বলেন, “নিমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশু বিভাগের ওয়ার্মার কোন কারণে কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল। এখন সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে পুরাতন মালদহের পোঁপড়ায় মাক্ষু মন্ডল (৭০) ও রতুয়ার কুমারগঞ্জের ফতেমা বেওয়া ( ৫৫) আগুন পোহাচ্ছিলেন।

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
কালিম্পং ২ ডিগ্রি • গ্যাংটক ৩ ডিগ্রি • জলপাইগুড়ি ৪ ডিগ্রি •
শিলিগুড়ি ৭ ডিগ্রি • বালুরঘাট ৪ ডিগ্রি • বাগডোগরা ৫ ডিগ্রি
মালদহ ৫ ডিগ্রি • কোচবিহার ৫ ডিগ্রি

তাঁদের গায়ে আগুন ধরে যায়। মালদহের জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা বলেছেন, “জেলায় শৈত্যপ্রবাহের জন্য দুদিন সমস্ত স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে। ঠিকই তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে ঠান্ডায় মারা যাওয়ার কোনও খবর নেই।”
এ দিকে, মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উজ্জল চৌধুরী জানান, তিনি প্রচন্ড ঠান্ডায় জেলায় ৮-৯ জনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন। মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি বলেন, “জেলায় ঠান্ডার মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ জেলা প্রশাসনের কোনও হোলদোল নেই। প্রশাসন ঘুমিয়ে রয়েছে।”
তিনদিন পর সূর্যের মুখ দেখেছে কোচবিহার। তবে বুধবারও আগের মতই শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত ছিল। এদিন সকালেও দীর্ঘ সময় গোটা জেলা ছিল কুয়াশায় ঢাকা। সন্ধ্যের পরেও কুয়াশার দাপট শুরু হয়। এদিন কোচবিহারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কোচবিহার, বালুরঘাট, জলপাইগুড়ির তিস্তা সেতু ও রায়গঞ্জের কুলিকে বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.