নতুন ইউনিফর্ম (শাড়ি) দেওয়া হবে। তার বদলে জমা দিতে হবে পুরনো ইউনিফর্ম! স্বাস্থ্য আধিকারিক এ হেন ‘নির্দেশে’ অসন্তোষ ছড়াল হিঙ্গলগঞ্জের কিছু আশাকর্মীর মধ্যে।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে শতাধিক আশাকর্মী কাজ করেন। তাঁদের ‘ইউনিফর্ম’ হিসাবে ব্যবহৃত হয় বেগুনি রঙের শাড়ি। সোমবার সান্ডেলের বিল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জনা চল্লিশ আশাকর্মীদের শাড়ি, ওষুধ দেওয়ার কথা ছিল। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও মহিলারা এসেছিলেন। পুরনো শাড়ির বদলে নতুন শাড়ি দিতে হবে বলে কেউ জানতেন না। তেমন কোনও প্রস্তুতিও ছিল না তাঁদের। ফলে বেশিরভাগ মহিলাই শাড়ি পাননি। কেউ কেউ পুরনো ইউনিফর্ম পরে এসেছিলেন। তাঁরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘরেইই শাড়ি বদলে জমা দিয়ে নতুন শাড়ি নিয়ে যান। বসিরহাট মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত পাণ্ডে বলেন, “পুরনো শাড়ি জমা দিয়ে নতুন শাড়ি নিতে হবে এ রকম কোনও সরকারি নিয়ম নেই। ঠিক কী হয়েছে, সে বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।”
গোটা ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে ওই আশাকর্মীদের মধ্যে।
সাহানারা বিবি বলেন, “পুরনো শাড়ি তো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সামান্য একটা কাপড়ের জন্য এতটা অপমানিত হতে হবে ভাবিনি।”
ঘটনার তীব্র নিন্দা করে গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েতের প্রধান দেবেশ মণ্ডল বলেন, “পুরনো শাড়ির বদলে নতুন শাড়ি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। এটা মহিলাদের কাছে অত্যন্ত অসম্মানের। বিডিওকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। আমার পঞ্চায়েতের মেয়েদের বলেছি, শাড়ি আমরা কিনে দেব। অসম্মানিত হওয়ার জন্য কারওকে স্বাস্থ্য দফতরে যেতে হবে না।” ঘটনার প্রতিবাদ করে সান্ডেলের বিল পঞ্চায়েতের প্রধান সহিদুল্লা গাজি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের এমন কোনও নির্দেশ নেই। ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়।” হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও বিশ্বজিৎ বসু বলেন, “বিষয়টি প্রধানদের মুখ থেকে শুনেছি। এমন ঘটনা অভিপ্রেত নয়। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য আধিকারিকের থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে।”
এ ব্যাপারে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অঞ্জনকুমার মল্লিকের সাফাই, “বিষয়টির ভুল ব্যাখা করা হচ্ছে। অনেক আশাকর্মী ইউনিফর্ম থাকা সত্ত্বেও পড়েন না। অনেকে খারাপ মানের শাড়ি দেওয়ার অভিযোগ করেন। ফলে যে কোম্পানির থেকে শাড়ি নেওয়া হয় তাঁদের নমুনা হিসাবে দেখানো এবং স্টক মেলানোর জন্যই খারাপ শাড়ি জমা দিয়ে যেতে বলা হয়েছিল।” |