আধ ঘণ্টার মধ্যে ফেরার কথা জানিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি বাঁকুড়া সদর থানার ধর্মদাসপুর এলাকার বাসিন্দা গৌরপদ মাঝি (২৩)। সোমবার সকালে বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট এলাকার গন্ধেশ্বরী নদীর চর থেকে তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। এই খুন নিয়ে অন্ধকারে নিহতের পরিবারের লোকজন। ওই পরিবার-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ-কুকুর এনে ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবিতে দেহটি কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখেন। দুপুর প্রায় বারোটা নাগাদ ২০৭ নম্বর কোবরা ব্যাটালিয়নের ‘বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজাল’-এর কুকুর আনা হয়।
নিহতের দাদা জগন্নাথ মাঝি বলেন, “ভাইয়ের কোনও নেশা বা বদ সঙ্গ ছিল না। সারা দিন দোকানের কাজ নিয়েই থাকত। কে বা কারা এ ধরনের ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না। তাঁর দাবি, এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাঁদের কঠোর শাস্তি চাই।” এ দিন বিকেলেই নিহতের পরিবারের তরফ থেকে বাঁকুড়া থানায় একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ। |
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে তিনটি কার্তুজের খোল, নিহতের মোটরবাইক ও হেলমেট উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত চলছে।” কোবরা ব্যাটালিয়নের কুকুরটি ওই চর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে দুর্গাপুর-বাঁকুড়া ৯ নম্বর রাজ্য সড়কের পাশে নির্মীয়মাণ একটি ঘরের পিছনে যায়। সেখান থেকে তিনটি মদের বোতল, কয়েকটি প্লাস্টিকের গ্লাস ও চায়ের কাপ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের অনুমান, গৌরপদকে খুনের পরে এই জায়গায় মদ্যপান করে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া শহরের শাঁখারিপাড়া এলাকার একটি ওষুধের দোকানে কাজ করতেন গৌরপদবাবু। রবিবার অসুস্থতার কারণে তিনি দোকানে যাননি। সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বহু ক্ষণ পরেও তিনি না ফেরায় বাড়ির লোকজন শহরের নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। শেষে সোমবার সকালে স্থানীয় লোকজনই দেহটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।
নিহতের দাদা বলেন, “রবিবার সন্ধ্যায় একটা ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ভাই। বলেছিল আধ ঘণ্টার মধ্যে ফিরবে। কিন্তু আর ফেরেনি। সারা রাত ধরে রেল স্টেশন, থানা-সহ গোটা শহর ঘুরেও ভাইয়ের খোঁজ পাইনি।”
বাঁকুড়া সদর থানার নাকের ডগায় এই ধরনের ঘটনা ফের শহরবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। রাতে সতীঘাট এলাকায় পুলিশের টহলদরি বাড়ানোর দাবিও তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “সতীঘাট এলাকায় প্রতিদিনই টহল দেয় পুলিশের গাড়ি। তবে, ওখানে সারারাত পুলিশের একটি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করার বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করছি আমরা।” |