|
|
|
|
ছাত্রছাত্রীদের পোশাক দেওয়া নিয়ে বিতর্ক |
প্রধানশিক্ষিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ হাসনাবাদের স্কুলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হাসনাবাদ |
সব ছাত্রকে পোশাক না দেওয়ায় স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষিকাকে চড় এবং তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানা এলাকার একটি স্কুলে। ওই শিক্ষিকা এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও অভিযোগ জানানোর পর থেকে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত মনিরুল গাজি পলাতক।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে মনিরুলের পরিবার। প্রধান শিক্ষিকার উপরে হামলার নিন্দা করে হাসনাবাদ চক্রের প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক মিহির মণ্ডল বলেন, “শুধুমাত্র ছাত্রী এবং তফসিলি ও তফসিলি জনজাতি এবং বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাত্রদের পোশাক দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। হয়তো কেউ পোশাক পায়নি। কিন্তু সে জন্য প্রধান শিক্ষিকাকে মারধর মেনে নেওয়া যায় না। ওই শিক্ষিকা যাতে নির্ভয়ে স্কুলে যেতে পারেন সে জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।”
হাসনাবাদ থানার ওসি অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “প্রধান শিক্ষিকার কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে মনিরুলকে ধরতে তল্লাশি চলছে। শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা হবে।”
ঘটনার সূত্রপাত গত ৫ জানুয়ারি। পুলিশ ও স্কুল সূত্রের খবর, সর্বশিক্ষা দফতর থেকে আসা টাকায় ছাত্রছাত্রীদের পোশাক দেওয়া নিয়ে বিতর্ক বাধে। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৭৩ জন। এ ব্যাপারে অভিভাবক, গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্য নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান শিক্ষিকা। বৈঠকে সব ছাত্রকে পোশাক দেওয়ার দাবি ওঠে। এমনকী অনেকে পোশাকের জন্য টাকা হাতে হাতে দিয়ে দেওয়ার দাবিও জানান। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় সরকারি নিয়ম মেনেই পোশাকের জন্য কারও হাতে টাকা দেওয়া হবে না। বদলে পোশাক দেওয়া হবে। সেই হিসাবে সর্বশিক্ষা দফতরের দেওয়া ১৮ হাজার টাকায় ৪৩ জন ছাত্রী এবং দু’জন ছাত্রকে পোশাক দেওয়ার ব্যবস্থা হয় বলে প্রধান শিক্ষিকা জানান। বৈঠকে এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও পাশ করিয়ে নেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ, বৈঠক শেষ হয়ে যাওয়ার পরে প্রায় সকলেই যখন চলে গিয়েছেন সেই সময় তিনি আলমারি গোছাচ্ছিলেন। আচমকাই মনিরুল গাজি নামে ওই ব্যক্তি হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢোকে। তাঁর দিকে তাকিয়ে বলে ‘পোশাক দেওয়ার টাকা নিয়ে তুই বাগড়া দিচ্ছিস’। এই বলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর গালে সজোরে চড় মারে। তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেয়। তিনি চিৎকার করলে লোকজন ছুটে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে তখন মনিরুল গালিগালাজ করতে করতে তাঁকে খুন করার হুমকি দিয়ে ছুটে বেরিয়ে যায়।
বৈঠকে হাজির থাকা গ্রাম শিক্ষা কমিটির সম্পাদক রাজীবুল্লা গাজি বলেন, “মেয়েরা পোশাক পেলে ছেলেরা কেন পাবে না তা নিয়ে বৈঠকে তর্কাতর্কি হয়েছিল। তবে ঘটনাটা ঘটেছে বৈঠক শেষ হয়ে আমরা বাড়ি চলে আসার পরে। এ ধরনের ঘটনা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না।”
মনিরুলের পরিবারের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। স্ত্রী নেহারবানু বিবি বলেন, “কেন গরিব ছাত্ররা পোশাক পাবে না তা জানতে গেলে প্রধান শিক্ষিকাই ওকে খারাপ কথা বলেন। তাতেই আমার স্বামী উত্তেজিত হয়ে চাবি কেড়ে নিয়ে ক্লাস ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। মারধরের ঘটনা সত্যি নয়।” |
|
|
|
|
|