|
|
|
|
চিন্তনে চিন্তা নারী-সুরক্ষা |
ভোট-ভাবনা শিকেয় কংগ্রেসে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ধর্ষণের প্রতিবাদের আড়ালে সার্বিক অসন্তোষের ছবিটাই বদলে দিল হিসেব। দলের ভবিষ্যৎ কৌশল স্থির করা থেকে শুরু করে প্রাক-ভোট ঘোষণার খসড়া তৈরির মতো কাজগুলি এখন চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে এ বছরই ১০ রাজ্যে বিধানসভা ভোটও হওয়ার কথা। সেই লড়াইয়ের জন্য দলকে এখন থেকেই প্রস্তুত করতে ১৮ এবং ১৯ জানুয়ারি জয়পুরে চিন্তন বৈঠক ডেকেছিলেন সনিয়া গাঁধী। বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে স্থির হয়েছে, মহিলাদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টিকে সামনে রেখেই বৈঠক শুরু করবেন দলনেত্রী।
চিন্তন বৈঠক থেকেই আম-আদমির কাছে, বিশেষ করে মহিলাদের প্রতি বার্তা দিতে চায় কংগ্রেস। দল ও সরকারের একটি সূত্র বলছে, সেই বার্তাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতেই বিচারপতি বর্মা কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে চিন্তন বৈঠকের আগে। ধর্ষণের শাস্তি আরও কঠোর করা নিয়ে সুপারিশ জানাবে ওই কমিটি। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, চিন্তন বৈঠকের আগে বর্মা কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তা দলের মুখরক্ষার অস্ত্র হয়ে উঠবে। সনিয়া এই বার্তা দিতে পারবেন যে, নারী-সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার যথাসাধ্য তৎপর। দিল্লিতে গণধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে সার্বিক অসন্তোষের প্রকাশ ঘটেছে, এই পথে তা কিছুটা প্রশমিত করা যাবে। |
 |
প্রতিবাদ: দিল্লি ধর্ষণ-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে আমরণ অনশনে সামিল এক যুবক। নয়াদিল্লিতে। ছবি: এপি |
কংগ্রেসের ইতিহাসে এমন বিষয় নিয়ে বৈঠক এই প্রথম। এক দশক আগে সিমলায় অবশ্য বিচার মন্থন শিবির করেছিল কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত সিমলা প্রস্তাবে মহিলাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ ছিল স্রেফ একটি লাইন। তা হল, “কংগ্রেস ২০০২ সালের ১ অক্টোবর মহিলাদের ক্ষমতায়নে যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল, সময় বেঁধে তার রূপায়ণে গুরুত্ব দেওয়া হবে।” কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি আলাদা। রান্নার গ্যাস-সহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এমনিতেই ধাক্কা দিয়েছে হেঁশেলে। তার উপর ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির ঘটনাগুলি মহিলাদের মধ্যে সার্বিক নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরি করছে। মহিলাদের আস্থা ধরে রাখাটা এখন কংগ্রেসের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ধর্ষণে কঠোর শাস্তির পাশাপাশি মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গও চিন্তন বৈঠকে তুলে ধরা হবে।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের ওই কেন্দ্রীয় নেতা মনে করিয়ে দেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নে কম কাজ হয়নি ইউপিএ আমলে। নারীশিক্ষার প্রসার, স্বনিযুক্তি প্রকল্পের ঋণে সুদের হার কমানো, পঞ্চায়েতে অর্ধেক আসন সংরক্ষণ, লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ আইন পাশ, কর্মস্থলে শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে আইন কঠোর করা, বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে সংশোধন সেগুলিরই কয়েকটি। কিন্তু ঠিক মতো এগুলির প্রচার হয়নি বলে মনে করেন সনিয়া। এ নিয়ে সম্প্রতি ক্ষোভও জানিয়েছেন তিনি। চিন্তন বৈঠকে দলকে এ ব্যাপারে আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেবেন দলনেত্রী সনিয়া। |
|
|
 |
|
|