প্রাথমিক ভাবে আমন্ত্রণ পেয়েও হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিতে পারল না রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি)। কারণ সংস্থার অন্যতম প্রধান অংশীদার চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আপত্তি মেনে নিয়ে আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রতিযোগী সংস্থা হিসেবে ইন্ডিয়ান অয়েলের সামনে সংস্থা সম্পর্কে তথ্য জানাতে আপত্তি জানায় চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। অন্য দিকে ইন্ডিয়ান অয়েলকে ‘স্ট্র্যাটেজিক বিনিয়োগকারী’ হিসেবে পেতে আগ্রহী রাজ্য।
সোমবার মুম্বইয়ে ‘ব্যাঙ্কার্স মনিটরিং গ্রুপ’-এর সঙ্গে বৈঠক করে সংস্থার দুই প্রধান অংশীদার রাজ্য সরকার ও চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। গ্রুপের তরফে উপস্থিত ছিলেন আইডিবি আই ও স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কর্তারা। রাজ্য সরকারের পক্ষে বৈঠকে যোগ দেন শিল্প সচিব চঞ্চলমল বাচাওয়াত, রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের এমডি কৃষ্ণ গুপ্ত এবং নিগমের আর এক কর্তা অজয় পান্ডে। চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর তরফে হাজির ছিলেন পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়।
এ দিনের বৈঠকে সংস্থা বাঁচানোর জন্য ঋণ চাওয়ার পাশাপাশি হলদিয়া পেট্রোকেমে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, শেয়ার বিক্রির প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগের কথাও জানিয়েছে রাজ্য। |
গত সপ্তাহেই হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর শেয়ার বিক্রির পথে এক ধাপ এগিয়েছিল রাজ্য সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়া দেখাশোনাকরার জন্য পরামর্শদাতা সংস্থা ডেলয়েটকে নিয়োগ করেছে রাজ্য।
রাজ্য সরকার হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর অংশীদারি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বদ্ধপরিকর। নিলাম করে তাদের শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত সমস্ত স্তরেই শিলমোহর পেয়ে গিয়েছে। এমনকী, কী ভাবে এই শেয়ার বিক্রি হবে, তার প্রথম থেকে শেষ পদক্ষেপ পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে দিয়েছে অর্থ দফতর।
গত অক্টোবর মাসেই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, পেট্রোকেমে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হবে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সে কথা ঘোষণা করা হয়। শেয়ারের পরিমাণ নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া ও তারপর সচিব পর্যায়ের কমিটিতে তা নিয়ে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করার কথা ছিল। কমিটি হয়েছে ৩ জনকে নিয়ে।
সরকারের দাবি অনুযায়ী এই শেয়ার বিক্রি করার যে-পদ্ধতি নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তা সর্বাঙ্গীন ভাবে স্বচ্ছ। অর্থ দফতর থেকে কেপিএমজি-র মতো প্রায় ১৬টি সংস্থার একটি প্যানেল তৈরি করে দেওয়া হয়। যে-সংস্থাগুলি এই প্যানেলে ছিল, তাদের এ ধরনের নিলামের সহায়ক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে। এদের মধ্যে থেকে ডেলয়েটকে বেছে নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজ্য সরকার ও চ্যাটার্জি গোষ্ঠী, দু’পক্ষই নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনও পক্ষই মুখ খোলেনি। |