|
|
|
|
|
|
|
পাঠকক্ষ কি না সরালেই নয়
|
ঐতিহ্য |
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরোর ওয়েবসাইটে আজও জ্বলজ্বল করছে ৯ অক্টোবর ২০০৯-এর একটা খবর: ‘পাঠকদের দাবিতে স্থির হয়েছে, জাতীয় গ্রন্থাগারের এসপ্লানেড রিডিং রুমটিকে ‘সিটি হাব’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যেখানে গ্রন্থাগারের সব ডিজিটাল রেকর্ড থাকবে। আধুনিক পরিকাঠামোর ব্যবস্থা-সহ এটি সংস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে।’ ৬ এসপ্লানেড ইস্ট-এর এই বাড়িতেই ১১০ বছর আগে কার্জন সাহেবের উদ্যোগে জন্ম ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরির, স্বাধীনতার পরে জাতীয় গ্রন্থাগার নাম নিয়ে যা চলে যায় বেলভেডিয়ারে। কিন্তু নিউজপেপার রিডিং রুমটি থেকে যায় এখানেই। আদিযুগ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত নানা দুর্লভ সংবাদপত্র পড়া যায় এখানে, অবস্থানগত সুবিধার জন্য, বিশেষত হাওড়া-শিয়ালদহ দুটি স্টেশন থেকেই সহজে আসা-যাওয়ার কারণে বহু প্রবীণ গবেষক এটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। |
এসপ্লানেড পাঠকক্ষের ছবি। |
দীর্ঘদিন ধরেই এটিকে বেলভেডিয়ারে নবনির্মিত ভাষা ভবনে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ চলছে, পাঠকদের আপত্তিতে মাঝে মাঝে তাতে ভাটা পড়ে। এখান থেকে মাইক্রোফিল্ম করার জন্য সংবাদপত্র নিয়ে যাওয়া হয় মূল ভবনে, দশক জুড়ে হাজারখানেক খণ্ড এ ভাবে গিয়েছে। কিন্তু তা আর এখানে ফেরেনি, মাইক্রোফিল্ম রোল অল্প কিছু এলেও রিডার মাত্র একটা, তাও প্রিন্টার নেই, ফলে গবেষকদের অসুবিধাই বেড়েছে। আরও অন্তত আট হাজার খণ্ড পত্রিকা এখানে আছে, ক্রমশই তার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। এ বারে সদ্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে সেগুলি স্থানান্তরের জন্য। রিডার্স ফোরামের আশঙ্কা, স্থানান্তরের ফলে এগুলির অবস্থা আরও খারাপ হবে, ভাষা ভবনে গিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা বহু প্রবীণ গবেষক আর কাজই করতে পারবেন না, যেতে পারলেও আদৌ কটা পত্রিকা মিলবে তা-ও সন্দেহ। তার থেকে এই হেরিটেজ কেন্দ্রটি নতুন করে গড়ে তোলা হোক না, এখানেই মাইক্রোফিল্ম করা হোক, পাঠকক্ষটি শীততাপনিয়ন্ত্রিত হোক, পরিকাঠামো উন্নত করা হোক। একদা তো তাই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তিন বছরে কেন মতটা বদলে গেল?
|
পঞ্চম স্মরণ |
উনিশ বছর আগের ৪ জানুয়ারি, রাহুল দেব বর্মন অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন। আর, এই ২০১৩-র ৪ জানুয়ারি ইউফোনি সংস্থা আবার ফিরিয়ে আনল পঞ্চমকে, গোর্কি সদনে তিন দিনের প্রদর্শনীতে। দেওয়ালের অগুনতি অচেনা ছবিতে চমকদার রাহুল-জীবন (সঙ্গে তারই একটি)। ছেলেবেলার ডানপিটে খোকা, শচীনকর্তার কাছে তালিম, বাবার কাছে রাজপাট বুঝে নিচ্ছেন রুবি রায়ের কিশোর-কবি। তারপর সেলুলয়েডে। রাজ কপূর, দেব আনন্দ, রাজেশ খন্না, ঋষি কপূর। কলঙ্কিনী কঙ্কাবতীর শ্যুটিঙে উত্তমকুমারের সঙ্গে গানের আড্ডা। টেবিলে ছড়ানো গানের সিডি ডিভিডি। জ্বলজ্বল করছে তাঁর সুর করা হিন্দি ও বাংলা সিনেমার হাজার পোস্টার। এক জায়গায় রাখা তাঁর ‘কুছ সামান’। গোটা গোটা বাংলা অক্ষরে লেখা চিঠি, প্রিয় পোশাক এবং সেই বিখ্যাত কালো চশমা। প্রদর্শনীঘরেই পঞ্চম প্রসঙ্গে কত গল্প উষা উত্থুপ, অন্তরা চৌধুরি ও সবিতা চৌধুরির। গান কথা ছবিতে জেগে উঠেছিল ষাট-সত্তরের ডিস্কো দশক, যখন মন প্রাণ মাতিয়ে বাতাস ভরাত পঞ্চমী সুর।
|
বেদব্রত |
বাঁ হাতে লেখেন। গান করেন খুব ভাল, রবীন্দ্রনাথ থেকে বাংলা আধুনিক সবই, এমনকী ফ্লোরেন্সে সদ্য পুরস্কৃত তাঁর ‘চিটাগঙ’-এও নিজের গলায় গেয়েছেন, অথচ তালিম নেননি কোনও দিন। তবে ছবি আঁকা শেখা বিড়লা অ্যাকাডেমিতে, ‘সিনেমা নিয়ে মেতে উঠলাম তো ওই ভিস্যুয়াল-এর প্রতি টান থেকেই। এটা আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ যেটা আমার চোখের সামনে নেই সেটা ভিস্যুয়ালি বানিয়ে তুলতে হবে। চিটাগঙ-এ প্রতিদিন শ্যুটিংয়ের আগের রাতে ছবি আঁকতাম, এঁকে সিন-টা সিনেমাটোগ্রাফারকে দিতাম, পুরো ফিল্মের স্ক্রিপ্টটাই আমার হাতে আঁকা।’ আড্ডা দিচ্ছিলেন বেদব্রত পাইন। সম্প্রতি ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ-এর উদ্যোগে নন্দন-এ তাঁর ‘চিটাগঙ’ দেখানো হল, ছবি নিয়ে বললেন রঞ্জিত মল্লিক ও বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, বেদব্রতও সরাসরি কথা বললেন দর্শকদের সঙ্গে। বিজ্ঞানী থেকে এ ভাবে চলচ্চিত্রকার হয়ে ওঠায় কোনও অসুবিধে? ‘পেশাগত সমস্যা তো থাকেই, তবে বিজ্ঞাপনের ছবি করা আর ডিজিটাল ফিল্মমেকিং নিয়ে পড়ানো শুরু করেছি, এরই পাশাপাশি ছবি করা চলবে।’ চল্লিশোর্ধ বেদব্রতর কাছে ছবি করা আর রাজনৈতিক চেতনায় ফেরা সমার্থক।
|
স্মরণে |
আবৃত্তিকার ছিলেন না। পাঠ-আবৃত্তি-শ্রুতিঅভিনয়ের যে বৃহৎ বাজার আজ চোখের সামনে ভরন্ত, সুবীর চট্টোপাধ্যায় তার প্রথম এবং প্রধান রূপকার। শ্যামবাজারে ওঁর প্রতিষ্ঠিত ‘আবৃত্তি পরিষদ’ তার সূতিকাগৃহ। জন্ম ১৯৪৩-এর ১৮ নভেম্বর। চলে গেলেন গত ১২ ডিসেম্বর। কাজি সব্যসাচী, দেবদুলাল, নীলাদ্রিশেখর, গৌরী-পার্থ-প্রদীপ ঘোষ হয়ে তুলসী রায়, অমিতাভ বাগচী, প্রণতি ঠাকুর, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত শ্রুতি-শিল্পের যে পসরা সুবীর সেখানে ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ রিং মাস্টার। বিখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে একই মঞ্চে সুযোগ করে দিতেন শহর-গ্রামের অখ্যাত নবীন কণ্ঠকে। শহর ছাড়িয়ে গ্রাম গ্রামান্তরে আবৃত্তির ওয়ার্কশপ, অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন অকৃতদার মানুষটি। অসুস্থ শিল্পীকে নিয়ে গেছেন দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালে। সব করেছেন, কিন্তু নিজের ব্যাপারটা গোছাতে পারেননি। ৮ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে পাঁচটায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে তাঁর স্মরণ অনুষ্ঠান, আয়োজনে ‘সমকাল’।
|
সংবাদের ভাষা |
‘‘মানুষকে নিশ্চিন্তে মরতেও দিত না সংবাদপত্রের ভাষা, হয় তাঁকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হবে নয় প্রাণপাখি উড়ে যেতে হবে’’ বলছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। গত শতকে সংবাদপত্রের ভাষার বেশ কয়েকটা যুগান্তর দেখেছেন তিনি, সক্রিয় ভাবে জড়িত থেকেছেন তার সঙ্গে। কেমন সেই পরিবর্তনের অন্দর কিংবা বাহির কথা, তাঁর নিজের অভিজ্ঞতাই বা কী? সাধু থেকে চলিত রীতিতে লিখলেই কি সংবাদপত্রের ব্যবসা ভাল হত? এ সব প্রশ্নেরই নিজের জীবন-জড়ানো উত্তর দেবেন নীরেন্দ্রনাথ, ১৩ জানুয়ারি বিকেল ৫ টায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ সভাঘরে শোভাবতী দাস ঘোষ স্মারক বক্তৃতায়। তাঁর বিষয় ‘সংবাদপত্রের ভাষা: সে কাল এ কাল’, সভাপতিত্ব করবেন রমাকান্ত চক্রবর্তী।
|
নির্দেশক |
হালে ‘আ মিডসামার নাইটস ড্রিম’ পরিচালনা করলেও দশ বছর ধরে নাটকের নির্দেশনায় আছেন অবন্তী চক্রবর্তী। আত্মপরিচয়ে নির্দেশকের সঙ্গে থিয়েটার ডিজাইনার বিশেষণটাও পছন্দ করেন তিনি। বছর দুয়েক আগে ইয়েল স্কুল অব ড্রামা-য় স্পেশাল ফেলো ছিলেন ওই নির্দেশনায়। সে বছরই দিল্লির সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি থেকে পান উস্তাদ বিসমিল্লা খান যুব সম্মান। ইবসেনের শতবর্ষে তাঁর ‘আ ডলস হাউস’ অবলম্বনে নিজের অভিনীত প্রযোজনা নিয়ে যোগ দেন অসলো আর সাংহাইয়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। ইউরিপিদিসের ‘মেডেয়া’ অবলম্বনে তাঁর প্রযোজনা এ বার ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-র ভারত রঙ্গমহোৎসবে আমন্ত্রিত। তাঁর সেরা নির্দেশনা টেনিসি উইলিয়ামসের ‘আ স্ট্রিটকার নেমড ডিজায়ার’। কলকাতার আরশি নাট্যদলের নিয়মিত নির্দেশক তিনি। ‘ধ্রুপদী নাটকের ভিতর দিয়ে সমকালীন বাস্তবকে ধরার চেষ্টা করি, খুঁজে নিই মেয়েদের নিজস্ব স্বর।’ মন্তব্য অবন্তীর।
|
সায়ন্তিকার স্বপ্ন |
দ্বিতীয় শ্রেণি থেকেই ছবি আঁকায় ঝোঁক সায়ন্তিকার। বাবা কাজল মণ্ডলের কাজ ঘুরে ঘুরে সাইকেল সারানো। তবু যথাসাধ্য করতেন মেয়ের জন্য। সুঁড়া কন্যা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী গত অগস্টে চেতলা গার্লসে একটি পটচিত্র শিবিরে যোগ দিয়েছিল মণিমালা চিত্রকরের অধীনে। এখানেই ও নজরে পড়ে গবেষক সোমা মুখোপাধ্যায়ের। অতঃপর ফেসবুক পোস্ট থেকে প্রতিভার স্বীকৃতি টেলিগ্রাফ স্কুল অ্যাওয়ার্ডস। সায়ন্তিকা সম্প্রতি যোগ দিয়েছিল শান্তিনিকেতনে যোগেন চৌধুরীর পরিচালনায় একটি কর্মশালায়। এন্টালির এই ছোট্ট মেয়েটির স্বপ্ন, এক দিন বড় শিল্পী হবে।
|
পত্রিকার মেলা |
রবীন্দ্রসদন-বাংলা আকাদেমি প্রাঙ্গণে লিটল ম্যাগাজিন মেলা বসছে ১১-১৫ জানুয়ারি। এ বার নিয়ে ১৫ বার, প্রতি বছরই একই দিনক্ষণে। কিন্তু এ বারের মেলা মাত্রায় অন্য রকম। উদ্বোধন-দিনেই (১১ জানুয়ারি) বিকেল চারটেয় মঞ্চে থাকবেন অগ্রণী সারস্বত-নক্ষত্রেরা শঙ্খ ঘোষ, কেদারনাথ সিংহ, অনুপম মিশ্র, সমীর তাঁতি, জয় গোস্বামী, নবনীতা দেবসেন। উদ্বোধনে উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সাড়ে তিন শতাধিক প্রকাশনার বিপণি থাকবে এ রাজ্যের প্রায় সব প্রান্ত থেকে। মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে রোজ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় চারটি স্মারক বক্তৃতা সেখানে রবীন্দ্রনাথ থেকে সংবাদপত্র, মৌখিক সাহিত্য হয়ে বটতলার মুসলমানি পুঁথি, নবীন-প্রবীণ চিন্তকের বয়ানে।
|
গ্রন্থবিপণি |
ও দাদা, একটা সঞ্চয়িতা হবে? ধুর মশাই, একটা বোম্বেটে নেব বলে কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি, দিন না!... বইপাড়ায় কান পাতলে এই ই-বইয়ের যুগেও এমন আলু-পটল বাজারের ধ্বনি কানে আসে। তবে আশার কথা সময়টা পাল্টাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে গলা শুকিয়ে বই কেনার দিনটাও, বইপাড়ার বাইরেও। নিজে বেছে নেড়ে-ঘেঁটে পছন্দের বইটি কেনার সেই আনন্দ-সংবাদে নতুন সংযোজন হতে চলেছে ১২ জানুয়ারি, শনিবার লেক টাউনে পি ১১৯ ব্লক বি-তে। ওই দিন বিকেল পাঁচটায় আনন্দ পাবলিশার্সের নতুন গ্রন্থবিপণির সূচনা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের হাতে।
|
কারিগর |
|
শীত পড়তেই শহরে হাজির দেশবিদেশের হস্তশিল্পীরা। হস্তশিল্প মেলা, সবলা মেলার পর এ বার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের রোজ গার্ডেনে বসছে কারিগর হাট, ৭-১৬ জানুয়ারি । এবার তাদের থিম ‘বিশ্বশান্তির মাধ্যম শিল্প’। বিদেশি অতিথিদের মধ্যে সাওরি কান্ডা নাচতে নাচতে ছবি আঁকেন। জাপানের মুসাশিনো আর্ট ইউনিভার্সিটির ভিসুয়াল কমিউনিকেশন ডিজাইনের স্নাতক তিনি। সঙ্গীত, বাজনা, নাটক ও নৃত্যের মাধ্যমে শান্তির বাণী প্রচার করবেন দেশ বিদেশের অন্তত ৩০ জন শিল্পী। থাকছে জাপানি কারিউশি ব্যান্ড, ভারত-বাংলাদেশের বাউল-ফকিররা, রাশিয়ার কার্টুন শিল্পী, ছোট দৈর্ঘ্যের নাটক ও পুতুলনাচ। কারিগর হাটে তাদের মুখোশ নাটক পরিবেশন করবে ইতালির দেল আতের্র্। সঙ্গের ছবিতে বহরমপুর থেকে মা-ঠাকুমার সঙ্গে আসা আট মাসের শিশু বাহা, হস্তশিল্প মেলাতে। দূরদর্শন প্রাণিত নামের বাহা বাঁশের ছিলকা-কাটারি নিয়ে খেলতে খেলতেই একদিন হয়ে উঠবে নিপুণ শিল্পী।
|
অভিনেতা |
|
ছবি: হীরক সেন |
অভিনয় তাঁর রক্তে, মাতামহের থেকে পাওয়া, তিনি অভিনয় করতেন নারী-পুরুষ উভয় চরিত্রেই। মা’র গানের গলা ছিল চমৎকার। ‘ছেলেবেলা থেকেই তাই অভিনয় আর গানে অভ্যস্ত হয়ে উঠছিলাম।’ শুভ্রজিৎ দত্তের শৈশবস্মৃতি। তখন থেকেই নাটক করতেন নিয়মিত, পাড়ার বা স্কুলের বন্ধুরা মিলে, পরে শিখেছেন রমাপ্রসাদ বণিকের কাছেও। এখনও গৌতম হালদারের ‘রক্তকরবী’তে বিশু পাগলের চরিত্রে অভিনয় আর গান করেন। সম্প্রতি সন্দীপ রায়ের ‘যেখানে ভূতের ভয়’-এ সত্যজিতের গল্প ‘অনাথবাবুর ভয়’-এ সীতেশ চরিত্রে করলেন, ‘এর আগেও ওঁর ছবিতে অভিনয় করেছি।’ সন্দীপেরও শুভ্রজিৎকে পছন্দের কারণ তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত লাবণ্যময় চেহারা: ‘‘ব্যোমকেশের চরিত্রে ওকে ‘মগ্ন মৈনাক’ ছবিতে দেখে ভাল লেগেছিল।” ব্রাত্য বসুর মঞ্চস্থ ব্যোমকেশ-এ ছিলেন নামভূমিকায়। টিভিতে প্রথম অভিনয় জন হালদারের টেলিফিল্ম ‘চারুলতা’য়। সিরিয়াল করছেন ‘জন্মভূমি’ থেকে, ‘লাবণ্যর সংসার’ ‘খেলা’ ‘একদিন প্রতিদিন’ পেরিয়ে এখন ‘বিন্নি ধানের খই’ ‘ভাষা’। ‘কাজ শিখেছি রবি ওঝা অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় অভিজিৎ দাশগুপ্ত অনিন্দ্য সরকারের কাছেও।’ শুভ্রজিৎ শুটিং শেষ করেই পালান পাড়ায়, বাগবাজারে লাল রোয়াকে বসে চা-সহ আড্ডা দিতে। জানালেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: ‘ইচ্ছে আছে ছবি পরিচালনা করারও।’ |
|
|
সংবর্ধনা |
রবীন্দ্রনাথ নাম রেখেছিলেন নবনীতা। নরেন্দ্র দেব ও রাধারাণী দেবীর সেই মেয়েটি এই ১৩ জানুয়ারি পূর্ণ করবেন তাঁর ৭৫। ছোট থেকেই পায়ের তলায় সর্ষে, বারো বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে দেখে এসেছিলেন যুদ্ধোত্তর ইয়োরোপের চেহারা। জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে অবাক চোখে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ুক্কু মাছ দেখেছিলেন, তখন থেকেই হয়তো তাঁর মনের মধ্যে দু’একটা উড়ুক্কু মাছ বাসা বেঁধেছিল। তাই করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে বা ট্রাকবাহনে ম্যাকমোহনে-র মতো অপরূপ ভ্রমণকথা পেয়েছি তাঁর কাছে। এই শহরে তাঁর মা-বাবার ‘ভালো-বাসা’ বাড়ির উত্তরাধিকার বহন করেন, প্রকৃতির সঙ্গেও তাঁর আত্মীয়তা গভীর। শান্তিনিকেতনে ছাত্রীদের পেয়ারা পেড়ে দিয়েছিলেন উঁচু ডাল থেকে, বলেছেন ‘গাছকে ভালোবাসলে তাদের শরীরের অন্ধিসন্ধি জানা হয়ে যায়, তখন গাছে চড়াটা কোনও ব্যাপারই না।’ তাঁর লেখার পরতে পরতে জড়িয়ে থাকে মেয়েদের নিজস্ব বিশ্বাসের জোর, অনুভবের স্পষ্টতা। তাই দশ বছর আগে মা’র জন্মদিনে গড়ে তুললেন ‘সই’। কবি, গদ্যকার, নাট্যকার, অনুবাদক, সম্পাদক। প্রথম কবিতার বই প্রথম প্রত্যয়, প্রথম উপন্যাস আমি অনুপম। সর্বোপরি প্রাবন্ধিক, তুলনামূলক সাহিত্যের মেধাবী ছাত্রী ও মনস্বী শিক্ষিকা। হার্ভার্ডে এম এ, ইন্ডিয়ানা-য় পিএইচ ডি। অক্সফোর্ডে রাধাকৃষ্ণন স্মারক অধ্যাপক। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার ও পদ্মশ্রী প্রাপক। বাঙালির এই উজ্জ্বল অহংকারকে সংবর্ধিত করবে অহর্নিশ পত্রিকা ১৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে চারটেয় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে। থাকবেন শঙ্খ ঘোষ অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত প্রমুখ। একটু দেরি হয়ে গেল না কি? অনেক আগেই তো তাঁর এ সংবর্ধনা প্রাপ্য ছিল।
শিল্পী: ধীরঞ্জন দাশগুপ্ত |
|
|
|
|
|
|