চালকের তৎপরতায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল মালদহগামী সাহেবগঞ্জ-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার ট্রেন। শনিবার দুপুরে মালদহ টাউন স্টেশনের আগে মালঞ্চপল্লি রেলগেটের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। রেল সূত্রের খবর, লাইন মেরামতি করা হলেও নির্ধারিত দূরত্বে লাল পতাকা ছিল না। পাশাপাশি, খোলা লাইনে সিগন্যাল দিয়ে ট্রেনটিকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। শেষ মুহুর্তে জরুরি ব্রেক কষে ট্রেনের চালক ট্রেন থামনোর চেষ্টা করেন। এতে যাত্রীবাহি কামরাগুলি বেঁচে গেলেও ইঞ্জিনটি লাইনের বাইরে ছিটকে লাইনচ্যুৎ হয়ে যায়। এতে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আপ লাইনে প্রায় চারঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
রেল কর্মীদের গাফিলতিতেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন মালদহ ডিভিশনের ডিআরএম রবীন্দ্রর কুমার গুপ্ত। তিনি বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। যাঁরা দোষী বলে দেখা যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রেলের অফিসারেরাই জানিয়েছেন, চালক যদি সময়মত জরুরি ব্রেক কষে ট্রেন থামানোর চেষ্টা না করত তবে ট্রেনটি লাইন থেকে ছিটকে ২০ থেকে ২৪ ফুট নিচে গিয়ে পড়ত। তাতে বড় দুর্ঘটনা শুধু নয়, হতাহতের সম্ভাবনা ছিল। |
ওই ট্রেনের চালক লালন কুমার সিংহ বলেন, “সিগন্যাল পেয়ে মালদহ টাউনের মাত্র ১০০ মিটার দূরে লাল পতাকা দেখে জরুরি ব্রেক কষে ট্রেন থামানোর চেষ্টা করি। ট্রেনের ৯ টি কামরাকে বাঁচাতে পারলেও ইঞ্জিনকে বাঁচাতে পারিনি।” ট্রেনটির গার্ড এনএস আর কিনডো বলেন, “চালক সময়মত জরুরি ব্রেক না মারলে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ত।”
রেল সূত্রের খবর, গত সাতদিন ধরে মালঞ্চপল্লি রেলগেটের দুইপাশে লাইন মেরামতের কাজ চলছে। এদি সকাল থেকে আপ লাইনের একটি লাইন খুলে নতুন লাইন বসানোর কাজ চলছিল। রেলের নিয়ম অনুসারে কাজের অংশের থেকে কম করে ১২০০ মিটার আগে লাল পতাকা লাগানো থাকে। তার পরে আরও দুই দফায় পতাকা লাগানো হয়। ট্রেনটি এসে পতাকার সামনে দাঁড়ায়। এর পরে সময়মত সিগন্যাল দিয়ে ট্রেনটিকে ওই লাইনে বা অন্য লাইন দিয়ে পার করানো হয়। এই ক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ।
অন্য দিকে, শুক্রবার রাতে ডুয়ার্সের বানারহাট লাগোয়া ডায়না সেতুর উপর রেল লাইনের ৫ ফুট লম্বা পাত সহ বেশ কয়েকটি নাটবল্টু চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। নজরদারির সময় ৪-৫ জনকে সেগুলি খুলতে দেখে গ্যাংম্যানরা তাড়া করলেও দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পরে পাত এবং নাটবল্টু লাগিয়ে দেওয়া হয়। রেল চলাচলে তেমন ব্যাঘাত ঘটেনি বলে দাবি করেছেন আলিপুরদুয়ারের ডিভিশনাল কর্মাশিয়াল ম্যানেজার অলকানন্দ সরকার। |