নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মমতা জমানায় সরকারি দফতরে বেআইনি ভাবে লোক নিয়োগের অভিযোগে আন্দোলনে নামছে বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই আন্দোলনে শরিক দলগুলিকে পাশে পেতে আগামিকাল, সোমবার বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বাম আমলে বিভিন্ন দফতর, বিশেষ করে পঞ্চায়েতে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কেবল পঞ্চায়েত নয়, কৃষি, সমবায় এবং স্বাস্থ্যেও বাম আমলে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে বলে বর্তমান সরকারের অভিযোগ। বাম জমানায় দীর্ঘ দিন পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য দফতরের মন্ত্রী ছিলেন বর্তমান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সূর্যবাবু ওই অভিযোগকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে বলেছেন, “ওরা তদন্ত করুক।” বাম আমলে শরিক দল ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি-র হাতে থাকা কৃষি, সমবায় বা সেচ দফতরে নিয়োগ নিয়েও তৃণমূল সরকার প্রশ্ন তুলেছে।
তদন্তের নামে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বর্তমানে অস্থায়ী কর্মীদের চাকরি সঙ্কটে পড়তে পারে বলে সিপিএমের আশঙ্কা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। সর্বশিক্ষা অভিযানের জন্য বাম আমলে যে হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল, তাদেরও একাংশ কর্মচ্যুতির আশঙ্কায় ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের উপরে পাল্টা চাপ সৃষ্টি করতে তৃণমূল আমলে
চাকরিতে দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন।
বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ঠিক হয়, তৃণমূল নেতাদের নির্দেশে বিভিন্ন দফতরে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে পাল্টা আন্দোলনে নামা হবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু এবং বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু দু’জনেই জানিয়েছেন, কোনও নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে সরকারি স্তরে বেআইনি নিয়োগ হচ্ছে।
তবে শুধু মাত্র অস্থায়ী নিয়োগই নয়, স্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রেও বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার যে নিয়ম, তা-ও পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বামেরা। |
কর্মসংস্কৃতির উন্নতি হয়েছে: অর্থমন্ত্রী |
নতুন সরকারের আমলে রাজ্যে কর্মসংস্কৃতির উন্নতি হয়েছে। শনিবার মহাকরণে সরকারি কর্মীদের এক অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখন বন্ধের দিন সরকারি অফিসে হাজিরা অনেক বেশি। অর্থ দফতরে উপস্থিতি ৯৮ শতাংশ।” তবে অর্থমন্ত্রীর দাবির সঙ্গে এক মত নন প্রশাসনের একাংশই। তাদের বক্তব্য, ক্ষমতায় এসে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ‘ডু ইট নাও’ স্লোগান দিয়েছিলেন। তাতে সরকারি অফিসে কর্মসংস্কৃতি ফেরেনি। এখন নতুন সরকারের আমলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। মহাকরণ-সহ সব সরকারি অফিসেই কাজ ফেলে রাখা, পরিষেবা পেতে এসে সাধারণ মানুষের হেনস্থা হওয়া, অফিস শুরুর পরে এসে আগে চলে যাওয়ার সংস্কৃতি অব্যাহত। অর্থমন্ত্রী অবশ্য এ দিন মানুষের সঙ্গে কর্মীদের ভালো ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কাজের ক্ষেত্রে সততা, স্বচ্ছতা না থাকলে সরকারি পরিকাঠামো নড়বড়ে হয়ে পড়তে পারে। তাই সরকারি কর্মীদের মধ্যে সততার আশা রাখে সরকার।” তাঁর মতে, “মুখ্যমন্ত্রী দিশা দেখাবেন, সৈনিক হিসেবে আমরা সবাই তা অনুসরণ করব।” |