স্কুল ভোট ঘিরে সংঘর্ষ
বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন ঘিরে রবিবার দুপুরে একের পরে এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না, পটাশপুর, এগরার আলংগিরিতে।
এ দিন ময়না থানার দক্ষিণ চংরাচক সুকান্ত বিদ্যাপীঠের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন ঘিরে স্কুলের কাছে জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূল ও সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। ভোট চলাকালীন সাড়ে ১১টা নাগাদ উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শুরু হয় ইট ছোড়াছুড়ি। লাঠিসোটা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট হয়। মোটর সাইকেলে ভাঙচুর চলে। মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই সিপিএম কর্মীকে আটক করা হয়েছে। পরে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তায় ভোট হয়। নির্বাচনে জয়লাভ করে তৃণমূল। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “অভিভাবকদের সমর্থন পাবে না বুঝতে পেরে এ দিন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা অভিভাবকদের স্কুলে যেতে বাধা দেয়। আমাদের সমর্থকরা প্রতিবাদ করলে তৃণমূল আক্রমণ চালায়। পুলিশ তৃণমূলকে সাহায্য করেছে। তৃণমূল ছাপ্পা ভোট দিয়েই জয়লাভ করেছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে ময়নার তৃণমূল ব্লক কার্যকরী সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, “ভোট চলাকালীন সিপিএমের নেতারা বহিরাগত সমর্থকদের নিয়ে আচমকা হামলা চালায়। ঘটনায় আহত হন আমাদের কয়েকজন সমর্থক। তবে নির্বাচনে অধিকাংশ অভিভাবকদের সমর্থনে আমরা জয়লাভ করেছি।” সংঘর্ষে আহত হন দু’পক্ষের প্রায় ১০ জন। আহতদের মধ্যে পাঁচ জনকে ময়না ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার জন সিপিএম সমর্থক, এক জন তৃণমূলের।
এ দিনই পটাশপুর ১ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সেলমাবাদ সরোজিনী বিদ্যানিকেতনের ভোটকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের পটাশপুর ১ ব্লক সভাপতি শঙ্কর বল্লভের অভিযোগ, “শনিবার সন্ধ্যা থেকেই তৃণমূলের বহিরাগত দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হয়ে বোমাবাজি শুরু করে। সকালে আমরা প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের নিয়ে স্কুলের কাছে দলীয় কর্মী রামপদ হাজরার বাড়িতে যেতেই ঘেরাও করে রাখে তৃণমূলের সশস্ত্র লোকজন। স্কুল ভোটে হার বাঁচাতে পুলিশের সহযোগিতায় পরিকল্পনামাফিক সন্ত্রাস করেছে তৃণমূল।” প্রসঙ্গত, গত বার এই স্কুলে পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধির নির্বাচনে ছ’টি আসনেই জিতেছিল সিপিএম ও কংগ্রেস জোট। এ বার সিপিএম মনোনয়ন জমা দিতে না পারলেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে নেমেছে কংগ্রেস। সিপিএমের সিংদা জোনাল কমিটির সম্পাদক হিতেন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসে আমরা প্রার্থীই দিতে পারিনি।” তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তাপস মাজি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সিপিএমকে ঢাল করে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছিল। হেরে যাওয়ার আশঙ্কাতেই ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে কংগ্রেস। ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে।”
স্কুল ভোটকে কেন্দ্র করে রবিবার বিকালে তৃণমূলে সঙ্গে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল ও সিপিএমের জোটের সংঘর্ষ বাঁধল এগার থানা এলাকার আলংগিরিতে। ঘটনায় ব্যালট ছিনতাই ও ১০-১২টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলে তৃণমূল ও সিপিএম পরস্পররের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ভাঙচুর, লুঠপাট হয়েছে সাইকেল ও মোটর সাইকেল। এতে উভয়পক্ষের ছ’জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আনলেও তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে আলংগিরিতে অবরোধ করেন তৃণমূল বিরোধীরা। নির্বাচন হয়েছে নির্বিঘ্নেই। গত বার এই স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ছ’টি আসনেই জয়ী হয়েছিল তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট। এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোট বেঁধে প্রার্থী দেয় বিক্ষুব্ধ তৃণমূল, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। এর ফলে নির্বাচনে হারের আশঙ্কা ছিল তৃণমূলের। সিপিএমের জেড়থান লোকাল কমিটির সম্পাদক বাদল গিরি বলেন, “হারের আশঙ্কাতেই ভোটদানের শেষ পর্বে তৃণমূল মোহনপুর এলাকা থেকে বাইক বাহিনীর সাহায্যে বেশ কিছু ভুয়ো ভোটার নিয়ে আসে। আমাদেক লোকজন তাদের বাধা দিলে ওরা আক্রমন করে। পাল্টা প্রতিরোধও করা হয়। তাতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেলেও এগরা-মোহনপুর সীমানায় কয়েকশো দুষ্কৃতী জমায়েত করে রাখে।” অভিযোগ অস্বীকার করে এগরা ১ ব্লক সভাপতি সিদ্ধেশ্বর বেরা বলেন, “মোহনপুর এলাকায় আমাদের বেশ কিছু ভোটার ছিলেন। তাঁদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেয় সিপিএম। আমাদের লোকজন প্রতিবাদ করলে ওরা মারধর করে। সাইকেল, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও লুঠ করে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.