ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
বন্ধু বলল, একটু পরেই মাস্টার আসবেন, মাস্টার প্রসাদ করে দিলে তবে আমরা শুরু করব। বসে আছি শিব-মন্দিরের চাতালে। গোল হয়ে। দমদম এলাকায়। আমি তখন সেকেন্ড ইয়ার। মাস্টার এলেন। টেরিলিনের পাঞ্জাবি, বাবরি চুল, পাজামা, রোগা, চিমসে চেহারা। হাড়ের হ্যাঙ্গারে পাঞ্জাবিটা লতপত করছে। গা থেকে আতরের গন্ধ। ওঁর বসার একটা নির্দিষ্ট জায়গা ছিল, একটা আসন পাতাই ছিল। বসলেন।
পাগলরা, ঠিক আছো তো সব?
সমবেত শব্দ হল হ্যাঁ...
সন্ধে হব-হব। মাস্টার কাঁধের ঝোলা থেকে একটা কাঠের বাক্স বের করলেন। হাতির দাঁতের কারুকার্য করা। আমার দিকে তাকালেন। ‘নতুন পাগল?’ বন্ধুটি বলল, ‘আজই প্রথম।’ মাস্টার বললেন, ‘দাও, তামাক দাও।’ ওখানে ৮/১০ জন, নানা বয়সের। রিকশাঅলা, দালাল, রং-মিস্ত্রি। আমার বন্ধুটি ছাত্রনেতা। ও ডিক্লাস্ড হচ্ছিল। সাবঅলটার্নদের সঙ্গে মিশছিল। এক জন বলল, পরশু ছয়শো টাকা জিত্যা নিছি। মাস্টার: ‘কী ঘোড়া?’ ‘আলেকজান্ডার। কাতারের।’ মাস্টার: ‘আমি তো এটাই কইছিলাম না? নিশ্চয়ই ষাট কেজির কম জকি ছিল।’
বাক্সটা থেকে একটা ছুরি বের করলেন প্রথমে। আমি যেহেতু নতুন আমদানি, বললেন, এটাকে কী বলে জানো? রতন-কাটারি। দেখি, বাক্সটার মধ্যে ঘর কাটা। একটা কল্কে, একটা লাল ন্যাকড়া, ছোট-ছোট গোল-গোল সাদা পাথর। জিজ্ঞাসা করি, কল্কেটা রুপো-বাঁধানো বুঝি? মাস্টার: কল্কে বলে না, বাঁশি বলতে হয়। তামাক সেবনের কত রকম বাঁশি হয় জানো? কৃষ্ণ বাঁশি, গণেশ বাঁশি, শঙ্খ বাঁশি, নাগিন বাঁশি, ম্যাগনেট বাঁশি...। এটা হল কৃষ্ণ বাঁশি।
পুরিয়াগুলো খুলছিলেন, আর পরখ করছিলেন। দুটো পুরিয়া ‘বিলো কোয়ালিটি’ বলে বাতিল করলেন। আমাকে বললেন, বাক্সটা আমার বিবাহের যৌতুক। শ্বশুরমশাই ছিলেন নাপিত। বাড়ি-বাড়ি ঘুরতেন আর সব বাড়ির খবর রাখতেন। বেছে বেছে মহাদেব জামাই আনলেন। আমার শ্বশুরমশাইয়ের বাপ এইটা ওঁর ছেলের জন্য এনেছিলেন কাশী থেকে। আমি আর শ্বশুর একসঙ্গে খেতাম। বাঁশি ফেটে যায় বলে স্যাকরা দিয়ে রুপোবাঁধাই করেছি। তিন ভরি রুপো আছে।
একটা চন্দন কাঠের ব্লক ছিল। ওটার নাম প্রেমতক্তি। রতন- কাটারি দিয়ে বাছাই গাঁজা কাটা হচ্ছিল। গাঁজা গাছ দু’রকমের। স্ত্রী গাছ আর পুরুষ গাছ। পুরুষ গাছের পাতায় তেমন নেশা হয় না। স্ত্রী গাছের ফুল-কলিগুলো ছিঁড়ে নিয়ে গাঁজা হয়, বাকি পাতায় ভাং। খুব ভাল করে গাঁজা-কলিগুলো কাটলেন মাস্টার। বীজগুলো বেছে ফেলে বললেন, গোলাপজল দাও।
তিন-চার ফোঁটা গোলাপজল দিয়ে গাঁজা থুড়ি, গাঁজা বলতে নেই তামাক হাতের তালুতে পেষাই হল। সেই সঙ্গে সামান্য খৈনি। আবার পেষাই। খুব ভাল মণ্ড তৈরি হল। কৃষ্ণ-বাঁশির তলায় একটা গোল পাথর। লাল ন্যাকড়াটা জলে ভিজিয়ে চিপে নেওয়া হল। মনে হল ওটা সিল্কের কাপড়। ওকে বলে জামিয়ার। নারকেল দড়ি জ্বালিয়ে, বাঁশির মাথায় চাপা দিয়ে জামিয়ার জড়িয়ে মাস্টারের হাতে দেওয়া হল। মাস্টার পরম ধনের মতো দু’হাত বাড়িয়ে কল্কেটা থুড়ি, বাঁশিটা গ্রহণ করে বললেন
জয় ভোলে বম্ বম্
তুম হামারা, হামারা তোম
দম শটক চল মটকা
যে খায় গাঁজা, সে হয় রাজা
যে করে গাঁজার নিন্দা, ওর বাড়ি জীবনে যাই না
যে বলে তুই গাঁজাখোর, তার মা ডট ডট বাবা চোর...।

প্রায় বিশ পঙ্ক্তির প্রেয়ার সং শেষ করে মাস্টার টানলেন। অনেক ক্ষণ ধরে। দুই গাল ভেঙে যেন এক জায়গায় মিশে গেল। প্রচুর ধোঁয়া। এ বার ডান হাতে বাঁশিটা ধরে বাঁ-হাত কনুইয়ে স্পর্শ করিয়ে পাশের ছেলেটির হাতে দেন। আমার হাতেও আসে। আমি কপালে ছুঁইয়ে ধোঁয়া নেওয়ার চেষ্টা করি, হয় না। মাস্টার শেখানোর চেষ্টা করেন, এই ভাবে ধরতে হয়...। পরে বললেন, বাড়িতে তেল ভরার ফানেলে ভাল করে প্র্যাক্টিস করবা। বাঁশি ঘোরে। এক জন গান ধরে ‘আহা রে গাঁজার নৌকা পাহাড় বাইয়া যায়। গাঁজা খেয়ে শুয়ে আছি, গাছেতে পুষ্করিণী দেখি, কাতল মাছ লাফায়।’
‘গাঁজা নয়, গাঁজা নয়, সিদ্ধি।’ মাস্টারের বোজা চোখ। যেন আপ্তবাক্য বলছেন কোনও প্রজ্ঞাবান। ‘গুরুর নামে সেবন করলে সিদ্ধি, নইলে এটা গাঁজা। সিদ্ধি কী? সিদ্ধি হল আত্মার খোরাক। দেহের ভিতরের যে রাজা, তার খোরাক। আত্মা ক’রকম? ভূত আত্মা, পেত্নি আত্মা, জীব আত্মা, দেবাত্মা আর আত্মা পরমেশ্বর সে-ই রাজা। সে-ই খায় গাঁজা। তুই-আমি খাই না। রাজা খায়। জয় গুরু পাগলচাঁদ গুরু ব্রহ্মচারী সিদ্ধোস্তি ঈশ্বর মহাপ্রভুর চরণে ওং স্বস্তি ওং স্বস্তি। জয় পাগল। বুঝলে, পাগল তিন রকম। বায়ুর পাগল, ভবের পাগল আর ভাবের পাগল। বায়ু চড়া হলে পাগল হয়। আর এই দুনিয়াটাকে ভোগ করার জন্যও পাগল হয় লোকে। ওই জন্য দরকার টাকা। ওরা ভবের পাগল, আর আমরা এখন ভাবের পাগল।’ এক জন বলল, মাস্টার, আগামী শনিবার ব্ল্যাক ডায়মন্ড আছে। তাজাক ঘোড়া। মাস্টারের চোখ বোজাই ছিল। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ঘোড়ার মায়ের নাম?’ ‘ভিক্টোরিয়া।’ ‘জকি?’ ‘হরি সিং।’ ‘হ্যান্ডিক্যাপ কত? চল্লিশের কম থাকলে তিন দশ বাজি ধইরা দাও।’ আমি জিজ্ঞাসা করি, ঘোড়ার রেস-ও জানেন? এত ক্ষণ ভাবের কথা বলছিলেন না? মাস্টার বলেন ‘ওরে পাগল, কেবল মাত্র একটা আকারের তফাত। ভাবের পাগল; আ-কারটা ফালাইয়া দিলেই ভবের পাগল হইয়া যায়। জয় গুরু।’


• সামনের বাড়িতে ভাড়া এল আশি বছরের বুড়ো, মাথায় ঢেউ খেলছে। এ দিকে আপনার
চল্লিশেই বিশাল টাক। বুড়ো আবার দেখিয়ে দেখিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়ায়।
• দুর্দান্ত চুটকি পড়লেন ম্যাগাজিনে। ভাবলেন, কাল
অফিস গিয়ে এইটা বলে হেভি টিআরপি বাড়াব।
রিহার্সাল করে, সবাইকে ডেকে, জমিয়ে বললেন,
হেসে খুনও হলেন। ও হরি, বাকিরা গোমড়াথেরিয়াম।
• দামি হোটেলে খেতে গিয়ে দেখেন, পেট একটুতেই
ভরে গেল। চকিতে ঠিক করলেন বাকিটা প্যাক হবে।
কাল সকালে ওগুলো গরম করে কী দুরন্ত ব্রেকফাস্ট,
ভাবতে ভাবতে প্যাকগুলো ফেলে চলে এলেন।

• দিল্লির গণধর্ষণ-কাণ্ডে দেশজোড়া বিক্ষোভ-হুহুংকারের প্রেক্ষিতে নতুন আন্দোলনের দিশা দেখালেন অভিনেত্রী হুমা কুরেশি, ‘আওরত বনধ’-এর ডাক দিয়ে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ও মিডিয়ায় সোচ্চারে জানালেন এই বনধ-এর মানে: শুধু একটা দিন দেশের সব মেয়েরা একজোট হয়ে ঘোষণা করুন তাঁরা ওই দিনটা ঘরে-বাইরে কোত্থাও কোনও কাজ করবেন না, দোর দিয়ে বসে থাকবেন আর দেখবেন মেয়েদের ছাড়া কেমন চলে, বা আদৌ চলে কি না এ দেশটা। মেয়েরাই রাতে বেরোলে, অমুক পোশাকটা পরলে ধর্ষিত হয়, সব দোষ ওদেরই, এই ধুয়ো-তোলা স্বভাব-হিপোক্রিট মাচো সমাজকে ঢিট করতেই ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’-এর নায়িকার এই বনধ-নিদান, মিলেছে দেদার সমর্থনও। দেশের কর্পোরেট শ্রমশক্তির ৪৫ শতাংশই নারী, তাঁরা এক দিন কাজে না এলে সংস্থাগুলো চোখে সর্ষেফুল দেখবে, বিউটি পার্লার-স্পা-হোটেল-রেস্তোরাঁ-বুটিক-ক্যাব সার্ভিস-বিমান উড়ানের মনিবরা প্রমাদ গুনবেন। লক্ষকোটি হোম-মেকার মায়েরাও একটা দিন চিরাচরিত হেঁশেল না ঠেললে, কাজের মাসি-আয়াদিদি এঁটো বাসন-বাসি কাপড়-রুগির ডায়াপার না তরালে এ মহা-ভারত হাবুডুবু। এক বার বন্ধ-নজির গড়া সম্ভব হলে মেয়েদের ওপর যাবতীয় অন্যায়-জুলুমও পাক্কা বন্ধ, আশা।

• স্বৈরাচারবিরোধী ‘আরব বসন্ত’ আন্দোলনের জেরে সৌদি আরবে পালিয়ে যান টিউনিসিয়ার একনায়ক রাষ্ট্রপতি বেন আলি, তাঁরই জমকালো প্রাসাদ আর বাজেয়াপ্ত করা বিপুল বৈভব নিলামে তুললেন নয়া সরকারের অর্থমন্ত্রক, উদ্দেশ্য নিলাম-লব্ধ ইউরোরাশি দিয়ে দেউলিয়া দেশটাকে চালানো। এক মাস ধরে চলছে প্রদর্শনী, আবালবৃদ্ধজনতা-ছাত্র-ট্যুরিস্ট বহু দূর উজিয়ে এসে টিকিট কেটে দেখে যাচ্ছেন অতিমানবিক স্ক্যাম, দেশের স্বার্থ-সম্পদ ডকে তুলে প্রেসিডেন্সিয়াল আখের গোছানোর বেতমিজ নমুনা। লোকটার রুচি ছিল বটে, নিলামে-ওঠা ৩৯ খানা ফেরারি-পোর্শে-ল্যাম্বরঘিনি-বেন্টলি-ক্যাডিলাক-মার্সিডিজ-বিএমডব্লুর সারি দেখে বাঁকা মন্তব্য চোখ-কপালে আম আদমির। আছে মহার্ঘ আসবাব-কার্পেট-সোনার অ্যানিম্যাল স্ট্যাচু-রুপোর গাছ সহ ১২০০০ বিলাস দ্রব্য, মস্ত ঘরজোড়া প্রাক্তন ফার্স্ট লেডির জামাজুতোব্যাগরত্নালঙ্কার। কেলেঙ্কারির পসরা থেকে পরিষ্কার, কী বিস্তর নয়ছয়ে ট্যাক্সের পয়সা স্ব-ট্যাঁকে পুরেছিলেন দেশনায়ক। নিলাম নিয়ে নয়া সরকার সোৎসাহী, আর ঘরপোড়া দেশবাসীর ভাবনা, পুনরাবৃত্ত না হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষমতার দুর্নীতির বেআব্রু ইতিহাস!

১.২
যত মিলিয়ন ডলার
পুরস্কারমূল্য পেলেন
এ বছর সাহিত্যে
নোবেল-জয়ী মো ইয়ান

এ বছর রেকর্ড সংখ্যক
যতগুলো হিন্দি ছবি
দেশে ১০০ কোটিরও
বেশি মুনাফা করেছে
২২,০০০,০০০০০০০০
এ বছর ভারতীয়
রেলের যাত্রীবাহী বিভাগ
যত টাকার
লোকসানে চলেছে
৯০
বিশ্বের মোট
যতগুলো (রেকর্ড সংখ্যক)
স্টেডিয়ামে খেলেছেন
সচিন তেন্ডুলকর
৩০
এ বছর থেকে এক লাফে যত
মিলিয়ন ডলার বাড়ল অস্ট্রেলীয়
ওপেনের পুরস্কারমূল্য
৬০০০০০০০০০
যত ডলার খরচ করে আমেরিকার এ বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দামি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শিরোপা পেল
৬২.৬
এক বছরে বিশ্ব
জুড়ে ফেসবুকে যত মিলিয়ন
গান শুনেছেন গ্রাহকেরা

৯৮
যত শতাংশ মিল
মানুষ আর শিম্পাঞ্জির
ডিএনএ-র মধ্যে


 

সী

চৌ
ধু
রী
সেই মেয়েটি ইস্কুলে যায়, যাচ্ছে মহাকাশে।
যত্ন করে একুশ শতক তাকেই ছেঁড়ে... বাসে।
অল্প কিছু গল্প গড়ায় রাজনীতি সন্ধানে,
বাকি স্টোরি জলকামান আর ভেন্টিলেটর জানে।
যারা পারে তারা মৃত বৃক্ষেই পুষ্প ফোটাতে পারে।
‘নতুন বছর’ও নিলামে চড়াব। ঘৃত খেয়ে যাব ধারে। তুচ্ছ আঘাতব্যাঘাতকে ভুলে,
মোচ্ছবে যাব কচ্ছটি খুলে।
দেওয়াল সাজাব ভিক্ষেতে পাওয়া নতুন ক্যালেন্ডারে।

লেটারিং বেটারিং


এই ছবির সংলাপ লিখেছেন জয়িতা চৌধুরী, কাঁকুড়গাছি



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.