হাড়কাঁপানো ঠান্ডা প্রাণঘাতীও হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
প্রবল ঠান্ডায় আসানসোলে মৃত্যু হয়েছে চার অজ্ঞাতপরিচয়ের। মৃতেরা প্রত্যেকেই গৃহহীন বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বুধবার বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এখনও পর্যন্ত ঠান্ডায় চার জনের মৃত্যুর রিপোর্ট পেয়েছি। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতেরা সকলেই পুরুষ। তাঁদের সকলেরই বয়স ৬০ বছরের আশপাশে। মঙ্গলবার সকালে আসানসোল স্টেশনের কাছে, তপসি বাবমন্দিরের কাছে ও হাটন রোড লাগোয়া এলাকা থেকে একটি করে দেহ আসানসোল হাসপাতালে আনা হয়। বুধবার সকালে রাহা লেনের কাছে আরও একটি দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক পরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। দুর্গাপুর-আসানসোলে বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ছিল। |
|
|
ঠান্ডা থেকে বাঁচতে।
চাঁচলে বাপি মজুমদারের তোলা ছবি। |
ঠান্ডার সঙ্গেই বেড়েছে শীতবস্ত্রের বিক্রি।
বালুরঘাটে অমিত মোহান্তের তোলা ছবি। |
|
এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রির কাছাকাছি ছিল মেদিনীপুর শহরেও। বাঁকুড়ায় বুধবার ছিল মরসুমের শীতলতম দিন। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরুলিয়া জেলা আবহাওয়া কেন্দ্র সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ দিন জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরুলিয়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা দিব্যেন্দু দাস জানান, গত দশ বছরে ডিসেম্বর মাসের শেষে এ ধরনের ঠান্ডা পুরুলিয়ায় পড়েনি। ২০০৩-এর জানুয়ারি মাসে পুরুলিয়াতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বার আবহাওয়ার এই দশা চললে জানুয়ারি মাসেই সে রেকর্ড ভাঙ্গবে বলে আশঙ্কা জেলা প্রশাসনের। পুরুলিয়ার জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি বলেন “স্বাভাবিকের থেকে তাপমাত্রা অনেকটাই নেমেছে। ঠান্ডায় মৃত্যুর খবর নেই। তবে.বিডিও-দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।” |
ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আগুনের আশ্রয়ে। শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
কনকনে ঠান্ডার কবলে উত্তরবঙ্গও। মঙ্গলবার থেকে বইছে হাড়-হিম করা বাতাস। দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে ২৪ ঘণ্টায় মালদহে ৮, কালিম্পঙে ৩, গ্যাংটকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। বুধবার শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি দুই শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরবঙ্গের আকাশ থেকে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা সরে গেলেও তার প্রভাবেই কনকনে হাওয়া দিতে শুরু করেছে। পশ্চিমি ঝঞ্ঝা চলে যাওয়ার সময়ে শূন্যস্থান পূরণ করতে উত্তর দিক থেকে তুষারাবৃত হিমালয় পেরিয়ে ক্রমাগত হাওয়া ঢুকছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, আজ, বৃহস্পতিবার তুলনামুলক ভাবে তাপমাত্রা বাড়বে। তিনি বলেন, “আরও একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা দু’-তিন দিনের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে ঢুকে পড়তে পারে। ফের কুয়াশা, বৃষ্টি এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।” |