গ্রামবাসীদের রোষের বলি হল একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ।
চলতি বছরে ডুয়ার্সে এ নিয়ে জনতার শাসনে মারা গেল অন্তত সাতটি চিতাবাঘ। বনকর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও তাঁদের বিশেষ কিছু করার ছিল না। মারমুখী জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার আগেই বাঁশ, লাঠি, লোহার রড, যে যা পারেন তাই দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় শ্বাপদটিকে।
শনিবার সকালে জলপাইগুড়ির চা বাগান লাগোয়া লোকালয়ে ঢুকে পড়া ওই চিতাবাঘটি নজরে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাহাড়পুর এলাকার জালিয়াপাড়া-দাসপাড়ায় ‘গ্রামে বাঘ পড়েছে’ রটতেই লাঠিসোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। হই চই শুনে চিতাবাঘটি তিস্তার চরে নেমে যায়। আসেন বনকর্মীরা। তাঁরা ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাকে কাবু করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু গায়ে গুলি লাগলেও অর্ধচেতন অবস্থাতেই সে বনকর্মীদের উপরে ঝাপিয়ে পড়ে। গুরুতর জখম হন দুই বনকর্মী। আহত হয়েছেন দুই স্থানীয় গ্রামবাসীও। গ্রামবাসীরা এরপরেই ঝাঁপিয়ে পড়েন ঘটনাস্থলেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় তাকে।
শুধু তাই নয়, চিতাবাঘটির দেহ থেকে লোম, গোঁফ, নখ তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী ২ বিভাগের ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “মনে হচ্ছে চিতাবাঘটি বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চল থেকে বেরিয়ে এসেছিল। তার থাবায় দু-জন গ্রামবাসীকে জখম করেছে। বনকর্মীরাও ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। চিতাবাঘটির দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।”
গ্রামবাসীরা জানান, জলপাইগুড়ির চা বাগানগুলিতে চিতাবাঘের হানার ঘটনা নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই তারা লোকালয়েও চলে আসে। কিন্তু বনকর্মীদের আসতে সময় লাগল কেন? বাসিন্দারা জানান, সকাল ৯-টা নাগাদ বনকর্মীদের খবর দেওয়া হলেও অন্তত দু-ঘণ্টা পরে বনকর্মীরা পৌঁছন। একাধিক পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের দাবি, বনকর্মীরা একটু আগে পৌঁছলে চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে মারার ঘটনা এড়ানো যেত। বনকর্মীদের দেরি দেখেই আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বলে তাঁদের অভিযোগ। |