রাজ্যের নড়বড়ে কোষাগারে আয় বাড়াতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের অন্যতম হাতিয়ার এখন আবগারি শুল্ক। আইনি পথে মদ বিক্রি বাড়িয়ে আয়বৃদ্ধির নিত্য-নতুন পন্থা বার করছেন তিনি। সেই পথেই সম্প্রতি ৪৫০টি দোকানে বিলিতি মদ বসে খাওয়ার স্থায়ী লাইসেন্স (ইন্ডিয়ান মেড ফরেন লিকার, সংক্ষেপে আইএমএফএল অন শপ) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আবগারি দফতর। আগে দোকানগুলির লাইসেন্স ছিল স্বল্পমেয়াদি (টেম্পোরারি)। পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে এক দিনেই ৭১টি দোকানের স্থায়ী লাইসেন্স মঞ্জুর হয়েছে।
আবগারি-সূত্রের দাবি, এর ফলে শুধু লাইসেন্স ফি থেকেই সরকারের ১৮ কোটি টাকা আদায় হবে। আর ওই সাড়ে চারশো দোকানে বিলিতি মদ বিকোলে বাড়তি রাজস্ব আসবে অন্তত তিনশো কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, সুরা-খাতে আয়বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই লাইসেন্সপ্রাপ্ত পানশালায় বিদেশি মদের বোতল ও দেশি মদের দোকানে একটি বিশেষ ব্র্যান্ডের সস্তা বিলিতি মদ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে রাজ্য।
দফতর সূত্রের খবর: প্রেসিডেন্সি ডিভিশনে ৩০টি, বর্ধমান ডিভিশনে ২৯টি এবং জলপাইগুড়ি ডিভিশনে ১২টি দোকানে স্থায়ী অন শপ লাইসেন্স এক দিনে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩৭০টি স্থায়ী লাইসেন্স দিতে জেলা থেকে আবেদনপত্র আনার তোড়জোড় চলছে। পশ্চিমবঙ্গে এখন ১৯১৩টি দেশি ও ৯৪৬টি বিলিতি মদের দোকান আছে, চালু বৈধ বারের সংখ্যা ১১১৭। এ ছাড়া রয়েছে ১৩টি বিলিতি মদের (আইএমএফএল) কারখানা। এই মুহূর্তে রাজ্যে ১৫টি দেশি মদের বটলিং প্লান্ট রয়েছে। আরও ১৫টি বটলিং প্লান্ট খোলার ইচ্ছেপত্র (লেটার অফ ইনটেন্ট) মিলেছে। এক আবগারি কর্তার বক্তব্য: দেশি মদের উৎপাদন ও বিক্রি বাড়লে চোলাইয়ের রমরমা কমবে। বস্তুত চোলাই দমনে লাগাতার অভিযানের ফলে রাজ্য জুড়ে দেশি মদের বিক্রি বাড়ছে। তাতেও আখেরে রাজকোষে আয় বাড়বে বলে কর্তাদের দাবি। পাশাপাশি বিদেশি মদের দোকান-মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক গৌতম মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, গত আট-ন’মাসে তাঁদের বিক্রিও বেড়েছে।
অর্থ দফতর সূত্রের খবর: আবগারি শুল্ক বাবদ রাজ্যের ঘরে এখন মাসে গড়ে দু’শো-আড়াইশো কোটি টাকা আসছে। আইনি পথে মদ বিক্রি বাড়ানোর পরিকল্পনা সফল হলে অর্থমন্ত্রী চলতি অর্থবর্ষে আবগারি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এক অর্থ-কর্তা। |