১. নিয়মিত চলবে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট: এই লেখা তৈরি করছি মঙ্গলবার রাতে। শনিবার পৌঁছনোর কথা আমাদের। কিন্তু কোনও নিশ্চয়তা নেই যে আগামী তিন দিনে বোম-টোম পড়ে আবার সব কিছু ঘোলাটে হয়ে যাবে না। আসলে খেলা না হতে হতে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট কেমন অনিশ্চয়তার বলয়ে চলে গেছে। আমাদের দেশে এখন খুব সমালোচনা হচ্ছে পাকিস্তান বোর্ডের। কেন ওরা সফর থেকে এত কোটি টাকা মুনাফা করতে দিচ্ছে ভারতকে। সিরিজের শর্ত অনুযায়ী হোম টিম পাবে পুরো টাকা। ভারতীয় বোর্ড আয় করবে অন্তত ৪৫ কোটি টাকা। পাকিস্তান যাতায়াত আর থাকা খাওয়া ছাড়া আর কিছুই পাবে না। আমাদের দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা দাবি তুলেছেন, ভারতকেও এরকমই সৌজন্যমূলক আচরণ দেখাতে হবে। তাদেরও ফিরতি সিরিজ খেলতে হবে। বাহানা করলে চলবে না। যাতে পাক বোর্ডও ফিরতি সিরিজ থেকে টাকা আয় করতে পারে। সে খেলা দুবাইতেই হোক বা ইংল্যান্ডে।
২. পাক সমর্থকদের সর্বত্র ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা: আমাদের দেশে এই সিরিজ ঘিরে প্রচণ্ড উৎসাহ। অথচ অর্ধেক লোক টিকিটই পাচ্ছে না। পাকিস্তানে মোট তিন জন রেজিস্টার্ড ট্রাভেল এজেন্ট আছে যারা খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করছে। কিন্তু এরাও টিকিট দিচ্ছে শুধু দিল্লি আর কলকাতা ওয়ান ডে-র। আম পাকিস্তানি সমর্থকদের কাছে বেঙ্গালুরু, আমদাবাদ আর চেন্নাই ম্যাচের কোনও টিকিটই নেই। এটা কেন হবে? সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী পাক জনতা যদি খেলাই দেখতে না পায়, তা হলে দু’দেশের মিলনমেলা কি জমবে? |
শাহিদ আফ্রিদি ও সচিন তেন্ডুলকর |
৩. শান্তিপূর্ণভাবে সিরিজ শেষ হওয়া: পাঁচ বছর পর পাকিস্তান আসছে ভারতে। প্রচণ্ড উদ্দীপনা সিরিজ ঘিরে। সব পাক টিভি চ্যানেল এক এক জন এক্সপার্টকে বুক করে ফেলেছে। কিন্তু সিরিজের সাফল্য নির্ভর করবে মানুষে মানুষে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ওপর।
আমার মনে আছে ২০০৫-য়ে আমাদের সমর্থকদের বাসগুলো চণ্ডীগড়ে নামার পর সম্পূর্ণ অপরিচিত স্থানীয় মানুষেরা এসে এক এক জনকে ঘরে তুলেছিলেন। অভিভূত করার মতো ছিল সেই মেহমাননওয়াজি। আমরা চাই এবারও সেই শান্তি আর আতিথেয়তা বিরাজ করুক।
একটা কথা ভারতের মানুষকে বুঝতে হবে যে উগ্রপন্থীদের শিকার দু’টো দেশই। গতকাল রাত্তিরে পেশোয়ারে ফের একটা রকেট লঞ্চার আছড়ে পড়েছে। আবার কিছু প্রাণহানি ঘটেছে। উগ্রপন্থীদের ওপর পাকিস্তানে এমনই বিদ্বেষ যে কাসভের ফাঁসিতে গোটা দেশে তেমন কোনও ভাবান্তরই হয়নি। কাসভের আশেপাশের দু’-একটা গ্রামের প্রতিক্রিয়া বাদ দিলে মনেই হয়নি যে জনমানসে রেখাপাত করার মতো কিছু ঘটেছে। ক্রিকেট সিরিজ যেন উগ্রপন্থায় বিধ্বস্ত দুই দেশের মানুষকে কাছাকাছি আনে।
৪. ভারতের সুস্বাদু সব খাবার: লাহৌরের মোগলাই রান্নার খুব সুখ্যাতি করেন ভারতীয়রা। তাঁরা অনেকেই জানেন না পাকিস্তানিরাও ভারতীয় খাবারের কী ভীষণ ভক্ত।
অনেককে যেমন এখনই বলতে শুনছি, ইডেন ম্যাচ দেখতে যাওয়ার সঙ্গে একটা বাড়তি আকর্ষণ হল কলকাতার মাছ। চিংড়ি তো আছেই।
এ ছাড়াও হরেক রকম মাছ পাওয়া যায় সেই শহরে। পাকিস্তানি সমর্থকদের জিভ কিন্তু এখনই নড়তে-চড়তে শুরু করেছে।
৫. বলিউড ফিল্মের ডিভিডি সংগ্রহ: এটা ভারতে এসে করতেই হবে-জাতীয় মাস্ট লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে। আমাদের দেশে বলিউডি হিন্দি ফিল্মগুলো তাড়াতাড়ি এসে যায় ঠিকই। কিন্তু সেগুলোর প্রিন্ট কোয়ালিটি ভাল থাকে না। তাই নিশ্চিন্ত থাকুন সিরিজে সচিন রান পান বা না পান। সঈদ আজমল উইকেট পান বা না পান। ভারতীয় ডিভিডি-র দোকানে একরাশ পাকিস্তানির ভিড় দেখবেনই। |