|
|
|
|
পঞ্চায়েতে চাকরির পরীক্ষা বাতিল হল |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
পঞ্চায়েত কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছে ২ বছর আগে। প্রশ্ন ফাঁস সহ নানা অভিযোগ ওঠায় বাম আমলের সেই চাকরির পরীক্ষা বাতিল করল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। জলপাইগুড়ি জেলার ঘটনা। ওই পরীক্ষা ফের নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০১০ সালে জলপাইগুড়ি জেলার ১০১টি পঞ্চায়েত কর্মী পদের জন্য প্রায় ৩৩ হাজার প্রার্থী পরীক্ষা দেন। বছর খানেক আগে জেলা প্রশাসনের তরফেই পরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা নিয়ে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে রিপোর্ট পাঠানো হয়। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন পরীক্ষায় শুধুমাত্র আগের আবেদনকারীরাই সুযোগ পাবেন। পুরানো আবেদনকারীদের মধ্যে কারও পরীক্ষায় বসার বয়স পেরিয়ে গেলেও ফের সুযোগ পাবেন। পরীক্ষার্থীরা অবশ্য পুরোনো পরীক্ষার ভিত্তিতেই ফল প্রকাশ করে নিয়োগ শুরু করার দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় কী ধরনের অনিয়ম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে? ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হওয়া পরীক্ষা হওয়ার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। জেরক্স করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়ায় প্রশ্নপত্র আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। পরীক্ষার পরে বেশ কিছু উত্তরপত্র বদলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরীক্ষা কেন্দ্রে গণ টোকাটুকি, টাকা লেনদেনের মত একাধিক অভিযোগও ওঠে। বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা থাকতে পারে বলে তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “নিয়োগের পরীক্ষায় নানা ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাই পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। নতুন পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসে নতুন পরীক্ষা হবে।. তবে সে জন্য নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই।”
২০১০ সালের পরীক্ষা ঘিরে সে সময়েই একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। তৎকালীন জেলা প্রশাসনের কর্তারা প্রাথমিক ভাবে একটি তদন্তও করেন। অভিযোগ, সে সময় দায়সারা ভাবে তদন্ত শেষ করা হয়। পরীক্ষা পদ্ধতি এবং তৎকালীন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে মহাকরণেও অভিযোগ যায়। পরীক্ষার বছর খানেক পরে জেলাশাসককে চেয়ারম্যান করে নতুন কমিটি পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্যের পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠিয়ে দেয়। প্রশ্ন উঠেছে, পদ্ধতিতে অনিয়ম খুঁজে পাওয়ায় সে সময় যে প্রশাসনিক আধিকারিকরা পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন তাঁদের ভুমিকা নিয়েও।
পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় ক্ষুব্ধ আবেদনকারীরা। ফল প্রকাশের দাবিতে হওয়ায় বছর দুয়েক ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছেন তাঁরা। কর্মপ্রার্থী যুক্ত সংগ্রাম কমিটি নামে একটি কমিটিও তৈরি হয়েছে। এদিন কমিটির মুখপাত্র কমল দাস বলেন, “জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে অনেক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা পরীক্ষায় বসেছিলাম। সেই পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এটা মেনে নেওয়া যায় না। পুরোনো পরীক্ষার ভিত্তিতেই ফল প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছি। বৃহত্তর আন্দোলনের পথেও যাওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|