|
|
|
|
আজ শুরু সচিবালয়ের কাজ, মিলবে পুনর্বাসন, আশ্বাস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
আজ, শনিবার থেকে ফুলবাড়ির কামরাঙাগুড়িতে উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সচিবালয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। তবে উচ্ছেদের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন প্রস্তাবিত সচিবালয়ের জমি লাগোয়া এলাকার দোকানদার ও বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে এলাকাটি পরিদর্শন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। যে এলাকায় সচিবালয়টি তৈরি হচ্ছে তার সামনের সীমানা প্রাচীর বরাবর ৩১-ডি জাতীয় সড়কের ধারে একটি বস্তি রয়েছে। সেখানে দোকান এবং বাড়ি মিলিয়ে ৩৬টি পরিবার রয়েছে। তবে কোনও উচ্ছেদ নয়, স্থানীয় দোকানদার এবং বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের কাজ শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
কামরাঙাগুড়ির ওই পরিবারগুলির তরফে জানানো হয়, নতুন এলাকায় জমির ব্যবস্থা করলে সবাই স্বেচ্ছায় এলাকা খালি করে চলে যাবে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা রিকশা চালক মহম্মদ সইদুল বলেন, “দশ বছর ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। রাজ্য সরকার আমাদের ব্যবস্থা করবে এটা আশা রয়েছে। তবে আমরা টাকা চাই না। বসবাসের জমি চাই।’’ এলাকার ছোট পানের দোকানদার মহম্মদ মুস্তাফা বলেন, “দোকান করেই সংসার চালায়। ছোট এক চিলতে জমি না পেলে পথে বসে যাব।” কার্যত একই বক্তব্য ছোট চায়ের দোকানদার বুলবুল হকের। তাঁর কথায়, “মাকে সঙ্গে নিয়ে দোকান করি। দোকান চলে গেলে কী খাব জানি না। দু’মাসের মধ্যে এলাকা সাফা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।” |
|
পরিদর্শনে মন্ত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
এ দিন গৌতমবাবু বলেন, “আমরা কারও চোখের জলের মধ্যে দিয়ে কোনও প্রকল্প করব না। আর এটা মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। সচিবালয়ের নিরাপত্তা, রাস্তার জমির প্রয়োজনীয়তার জন্যই ওই দোকানদার, বাসিন্দাদের সরাতে হবে। কিন্তু ওঁদের জন্য এলাকার অন্যত্র ‘নিজ গৃহ-নিজ ভূমি’ প্রকল্পে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জমির ‘লিজ’ দিয়ে দেওয়া হবে। কারও কোনও ভয় ভীতির কারণ নেই।” মন্ত্রী জানান, এলাকার প্রচুর খালি জমি রয়েছে। আমরা সবদিক দেখে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব। সেখানে বাড়ি ছাড়াও বাসিন্দাদের দোকান করে যাতে সংসার চালাতে পারেন তা দেখা হবে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সচিবালয়ের জন্য আবাসন দফতরের হাত থেকে পাঁচ একর জমি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের হাতে চলে এসেছে। এই বামফ্রন্ট আমলে আবাসন প্রকল্পের এক দফায় শিলান্যাসও হয়েছে। তবে সীমানা প্রাচীর থাকলেও কোনও কাজ হয়নি। নকশা অনুসারে সচিবালয়ের একপ্রান্তে ৩৫ মিটার ‘রেডিয়াসের’ হেলিপ্যাড থাকছে। তার পাশে তিনতলা মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের মূল ভবনটি তৈরি হবে। তার পাশে অডিটোরিয়াম, ভিআইপি গেস্ট হাউস, পার্কিং জোন ছাড়া সুদৃশ্য বাগান গড়ে তোলা হবে। আপাতত ১৪ মাসের সময়সীমা ধরে ৩০ কোটি টাকা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, সচিবালয়ের পাশের অংশে আবাসন দফতরের পরিত্যক্ত আবাসন-সহ আরও পাঁচ একরের মত জমি রয়েছে। সেটিও অধিগ্রহণের চেষ্টা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে সচিবালয়ের সামনে চার লেনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার চেষ্টা চলছে। মাটির নিচের নর্দমা, বিদ্যুতের লাইন, মাঝরাস্তায় বাগান, দুই পাশের চওড়া ফুটপাতের কাজ চলছে। মন্ত্রী জানান, ১৫ মিটারের চওড়া রাস্তা তৈরি হচ্ছে। রাস্তাটি জাতীয় সড়কে পড়বে। সেখান থেকে জলপাইমোড় অবধিও রাস্তা চওড়া হচ্ছে। রাস্তার দু’পাশে আলোর ব্যবস্থা ও বাগান করা হবে। শহরের যানজট এড়িয়ে এনজেপি স্টেশন, বাগডোগরা বিমানবন্দরে যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবেই এলাকাটি বাছা হয়েছে।
|
|
|
|
|
|