|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
ঔজ্জ্বল্য অনেকটাই বহিরঙ্গে |
জন্মের দেড়শো বছর পেরিয়ে গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁর লেখালেখি নিয়ে বিবিধ বইপ্রকাশের যে বিপুল উদ্যোগ শুরু হয়েছিল সে ধারায় ছেদ পড়েনি। এটা আশার কথা।
কথাটা এখানেই শেষ নয়। শতবার্ষিকীতেও রবীন্দ্রবিষয়ক বহু বই প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু এই দেড়শো বছরের সামগ্রিক উদ্যোগে একটা বিষয় লক্ষ করার। রবীন্দ্র-গবেষণার বই মানেই যে মুষ্টিমেয় কিছু পাঠকের জন্য নিতান্ত অনুজ্জ্বল ‘অ্যাকাডেমিক’ চেহারায় প্রকাশ করা কিছু বই সেই ধারণাটা ক্রমে পাল্টাচ্ছে।
বদলটা, এমনকী, রবীন্দ্র-ভবন প্রকাশনার চেহারাতেও। প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছিল দু-এক বছর আগেই, আজও তা বজায় আছে। তারই সাম্প্রতিক প্রমাণ গীতাঞ্জলি/সং অফারিংস (দ্বিভাষিক সংস্করণ, সম্পাদনা তপতী মুখোপাধ্যায়, অমৃত সেন, ১০০০.০০)। মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটল বিশ্বভারতীতে। ১৯১২-র নভেম্বরে নোবেল-জড়িত বইটির প্রথম প্রকাশ লন্ডনের ‘দি ইন্ডিয়া সোসাইটি’ থেকে। এ বছর সেই ঘটনার শতবর্ষ। আর ২০১৩-য় রবীন্দ্রনাথের নোবেল-প্রাপ্তির শতবর্ষ। এই দুই উপলক্ষেই গীতাঞ্জলির সাম্প্রতিক সংস্করণটির প্রকাশ।
অবশ্য একে নিছক সংস্করণ বললে ভুল হবে। পাণ্ডুলিপিচিত্র-সহ মূল বাংলা কবিতা, তার অনুবাদ, আনুষঙ্গিক তথ্য, নোবেল-ভাষণ, নানা জনের লেখা চিঠিপত্র-টেলিগ্রাম, বিদেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত নোবেল-প্রাপ্তির সংবাদের কর্তিকা এবং বহু ছবি নিয়ে ডাবল মিডিয়াম সাইজে আর্ট পেপারে ছাপা বইটি যথার্থ নতুন প্রকাশ। সমীরণ নন্দী-কৃত প্রচ্ছদটিও শিল্পিত, সংযত।
গুণ বিচারের আগে দর্শনের বিচারটাই এ বইয়ের ক্ষেত্রে মুখ্য ছিল, কারণ এর ভিতরে যা আছে তা একেবারে অপ্রকাশিত নয়। একটি বইয়ের কথা এক্ষুনি মনে পড়ছে, প্রণতি মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত গীতাঞ্জলি Gitanjali রূপে রূপান্তরে কবি এক জাগে (পুনশ্চ)। আর একটি, বিশ্বভারতী ও ইউবিএসপিডি-র যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত গীতাঞ্জলি-র দ্বিভাষিক সংস্করণ। তবু এই নতুনটিও সংগ্রহযোগ্য, ছবি আর পাণ্ডুলিপি মিলিয়ে এর বিন্যাসের জন্য। সংগ্রহযোগ্যতা আরও বাড়ত যদি ইংরেজি কবিতার পাণ্ডুলিপিচিত্র, কোনও কোনও অলংকরণও থাকত। শান্তিনিকেতনের যে সাদা-কালো ছবিগুলি ছাপা হয়েছে তার অধিকাংশ যে শম্ভু সাহার তোলা সে স্বীকৃতি জরুরি ছিল। আর, রবীন্দ্রনাথের ছবিগুলির স্থান-কাল, যতদূর জানা যায়, উল্লেখ করা উচিত ছিল। |
|
|
|
|
|