নদী এখনও ভেঙে পড়েনি। বর্ষার আগ্রাসনও নেই তার। কিন্তু গঙ্গার পাড় বরাবর মাটি মাফিয়ারা নদী-ভাঙনের জমি প্রস্তুত করে রাখছে।
হ্যাঁ, এটাই ঘোর বাস্তব। রাতভর ট্র্যাক্টর বোধাই হয়ে সে মাটি হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায় কখনও বা প্রোমোটারদের জলা বুজিয়ে বাড়ি তৈরির ব্যবসায় সঙ্গত দিতে। আর এসব জেনেও কার্যত চোখ বুজে রয়েছে প্রশাসন। আতঙ্কে আগামী বর্ষার দিন গুনছেন বহরমপুর লাগোয়া সাটুই-চৌরিগাছা পঞ্চায়েতের কাঁঠালিয়া গ্রামের বান্দিারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অন্তত ৩০টি ট্রাক্টর বোঝাই মাটি রাতারাতি পাড়ি দিচ্ছে অজানা গন্তব্যে। কাজ হচ্ছে রাতভর। কিন্তু কারা এ কাজ করছে? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার কয়েকটি ইট ভাটার মালিকেরা এর সঙ্গে যুক্ত। মাটি বোঝাইয়ের জন্য ট্রাক্টরের লম্বা লাইন রাত থেকেই পড়ছে। ক্রমাগত ট্রাক্টর চলাচলের ফলে গ্রামের মাটির রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। |
কিন্তু প্রসাসন কী করছে? বহরমপুরের মহকুমাশাসক অধীরকুমার বিশ্বাস বলেন, “ভাগীরথীর পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার ফলে বর্ষার সময়ে এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিতে পারে। ভাঙন ঠেকাতে গেলে অবিলম্বে মাটি কাটা বন্ধ করতে হবে।” কিন্তু বন্ধ করছেন না কেন? তিনি জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেচ দফতরের জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রশাসন। তবে এ সব নিছকই মুখের কথা। এখন পর্যন্ত মাটি কাটাও অব্যাহত। আতঙ্কও মোছেনি মানুষের। তাঁরা বলছেন, “পাড়ের মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময়ে ফরাক্কা ব্যারেজের ছাড়া জলে ভাগীরথী ফুলে-ফেঁপে উঠবে। তখন আলগা হয়ে যাওয়া পাড়ের মাটি জলের তোড়ে ভেসে যাবে। ব্যাপক আকারে এলাকায় ভাঙন দেখা দেবে।” কিন্তু মাটি মাফিয়াদের ভয়ে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ করা তো দূরঅস্ত্ সামান্য প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারছেন না।
সাটুই-চৌরিগাছা পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কংগ্রেসের দিলীপ নন্দী বলেন, “এলাকার প্রভাবশালী লোকজন ওই পাড়ের মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত। তাতে সব রাজনৈতিক দলের লোকজনের মদত রয়েছে। ফলে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে যেমন গ্রামবাসীদের সাহসে কুলোচ্ছে না।” |