লালগোলার গ্রন্থাগার বিষয়ে গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সাহিত্য-সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক লালগোলার রাজার নাম যোগেন্দ্রনারায়ণ রায় লেখা হয়েছে। এর আগে বহরমপুরের ‘গ্রান্টহল’ সম্পর্কিত বির্তকে বিষাণ গুপ্ত ও সায়ন্তন মজুমাদারের চিঠিতে একই রকম ভুল নামে লালগোলার রাজাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। লালগোলার রাজার প্রকৃত নাম যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়। বিদ্যাসাগরের উত্তর পুরুষ সুধাকর চট্টোপাধ্যায়ের লেখা যোগীন্দ্রনারায়ণের জীবনী গ্রন্থে যোগীন্দ্রনারায়ণ এবং লালগোলার রাজপরিবারের অনুমোদিত ও প্রদত্ত তথ্যে যোগীন্দ্রনারায়ণ লেখা রয়েছে। গ্রান্টহলে, হাসপাতালে, এমনকী মুর্শিদাবাদ জেলা গেজেটিয়ারে শ্রদ্ধাভাজন সৌমেন গুপ্ত, বিষাণ গুপ্ত প্রমুখেরা যোগীন্দ্রনারায়ণকে যোগেন্দ্রনারায়ণ করে দিয়েছেন। চর্যাপদের পুঁথিটি মুদ্রিত রূপ পেয়েছিল যোগীন্দ্রনারায়ণের অর্থ সাহায্যে। ভূমিকায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। মুদ্রিত ওই গ্রন্থ থেকে নামটি দেখে নেওয়া যায়। রামেন্দ্রসুন্দরের বৈবাহিক যোগীন্দ্রনারায়ণ অর্থ সঙ্কটে শান্তিনেকেতনকে নিশ্চিত বন্ধ হওয়া থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর একটি ছবি চেয়ে ছিলেন। যোগীন্দ্রনারায়ণ প্রচার বিমুখ ছিলেন। দান ছিল তাঁর ধর্মচর্চার অঙ্গ। তিনি ছবি দেননি শান্তিনিকেতনে। বিষয়টি নিয়ে রবীন্দ্রনাথ একাধিক চিঠি লিখেছিলেন। প্রশান্ত পালের রবি-জীবনীতে বিষয়টি চিঠি-সহ আলোচিত হয়েছে। সেখানেও নামটি যোগীন্দ্রনারায়ণ লিখিত হয়েছে। লালগোলা জনশ্রুতির নাম করে নীহারুল ইসলাম লিখেছেন যে, অপুত্রক মহেশনারায়ণ দত্তকপুত্র যোগীন্দ্রের পড়াশোনার সময় অনেক বইপত্র কিনেছিলেন। সুধাকর চট্টোপাধ্যায়ের তথ্যানুসারে যোগীন্দ্রকে দত্তক নেওয়ার প্রতিশ্রুতির পরে পরেই কাশীতে মহেশের দেহান্ত হয়। লালগোলায় দত্তকপুত্র যোগীন্দ্র যখন আসেন এবং বহরমপুর তিনি যখন বিদ্যালয়ে ভর্তি হন তখন মহেশনারায়ণ জীবিত ছিলেন না। লোককথা আকর্ষনীয় কিন্তু তথ্য হিসাবে নির্ভরযোগ্য নয়। যোগীন্দ্রনারায়ণকে ইংরেজ সরকার বহু উপাধি এবং শংসাপত্র দিয়েছিলেন। সেখান থেকেও শুদ্ধ নামটি উদ্ধার করতে পারেন। ভদ্রলোকেরা যোগকে শ্রদ্ধা করেন, ‘যোগী’ তো লৌকিক ধর্মের প্রতিনিধি। মুর্শিদাবাদের ‘যোগী’ তাই ভিক্ষা, বা গুরুত্ব পায়নি।
শক্তিনাথ ঝা, বহরমপুর
|
নওদা থানার কেদারচাঁদপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পীরতলা খালের উপর ২৫ মিটার দীর্ঘ একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। শাল কাঠের ওই সেতুটি বর্তমানে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে ওই সেতুর প্রতিটি খুঁটি নড়বড়ে ও পচা। ওই সেতুর এক দিকে রয়েছে ঝাউবোনা গ্রামের তিন ভাগের এক ভাগ বসতি, দাঁড়পাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, নির্বাচনী একটি বুথ ও অধিকাংশ কৃষি জমি। অন্য পাড়ে একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র একটি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধমিক বিদ্যালয়, হাইমাদ্রাসা, বাজার-হাট, স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ সব কিছু। ওই সেতুটি ৩-৪টি গ্রামের সংযোগস্থলে। ওই সেতু দিয়ে এক সময় গরুর গাড়ি, রিকশা-সহ সব কিছু পারাপার হত। কিন্তু জরাজীর্ণ ওই সেতু দিয়ে ১০-১৫ বছর ধরে গরুর গাড়ি, রিকশা পারাপার বন্ধ। বহু দফতরে, অনেক রকমারি পদ্ধতিতে জানানো সত্ত্বেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। তাই ফের দাবি জানাই, কংক্রিটের সেতু করা হোক।
হামিম হোসেন, ঝাউবোনা |