|
|
|
|
ক্ষুদ্রশিল্পীদের পরিচয়পত্র বিলিতে দেরি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
প্রত্যেক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পীকে পরিচয়পত্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। সেই মতো পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ শুরুও হয়। তবে এখনও লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি। অথচ, এই কার্ড থাকলে তবেই শিল্পীরা স্বাস্থ্যবিমার কার্ড পাবেন। ব্যাঙ্ক ঋণের জন্য ক্রেডিট কার্ড পাবেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে ১ লক্ষ শিল্পীকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত তা পেয়েছেন ৩৬ হাজার শিল্পী। প্রকল্প রূপায়ণে নজরদারির অভাবই এর জন্য দায়ী বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৫ হাজার পরিচয়পত্র এসে জেলা এবং ব্লক স্তরে পড়ে রয়েছে। তা বিলি করা হয়নি। জেলা শিল্প কেন্দ্রের অবশ্য আশ্বাস, ওই সব পরিচয়পত্র দ্রুত বিলি করার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রহ্লাদ হাজরা বলেন, “রাজ্য থেকে আসা অধিকাংশ পরিচয়পত্রই বিলি হয়েছে। কিছু বিলি হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব ওই সব পরিচয়পত্র বিলির চেষ্টা চলছে।”
রাজ্যের নতুন সরকার ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পের বিপণনে উদ্যোগী হয়েছে। পাশাপাশি শিল্পীদের মানোন্নয়নেও উদ্যোগী হয়েছে। জেলা শিল্প কেন্দ্রের এক আধিকারিক বলেন, “এই শিল্পের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সব রকম ভাবে বাজার বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে শিল্পীদের নানা সমস্যায় আছে। তাঁদের কথা ভেবে সরকার পরিচয়পত্র তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে।” স্বাস্থ্যবিমা কার্ড দেখিয়ে চিকিৎসার জন্য বছরে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় মিলতে পারে। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ড দেখিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে ৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেতে পারে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যে ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পীর সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ। পশ্চিম মেদিনীপুরেই রয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষ। জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রয়েছে। কোথাও মাদুর তৈরি হয়, কোথাও পট। কোথাও বা বাঁশ কেটে তৈরি হয় নানা জিনিস। খড়্গপুর মহকুমার সবং, পিংলা ও তার আশপাশে এলাকায় ক্ষুদ্র-কুটির শিল্পীদের বসবাস বেশি। জেলায় মোট ১ লক্ষ শিল্পীকে পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পনা মতো এখনও সকলকে পরিচয়পত্র দেওয়া যায়নি। এ নিয়ে শিল্পীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জেলায় ৫৪ হাজার ৯২৭ জন শিল্পীর কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। মেদিনীপুরে (সদর) রয়েছেন ৪ হাজার ২০৭ জন, খড়্গপুরে ৪০ হাজার ৯৮৮ জন, ঝাড়গ্রামে ৬ হাজার ৪১ এবং ঘাটাল মহকুমায় ৩ হাজার ৬৯১ জন। পরিচয়পত্র তৈরির জন্য রাজ্যের কাছে সব মিলিয়ে ৫৪ হাজার ৯১৬টি আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে। ৫১ হাজার ২৬৩টি পরিচয়পত্র রাজ্য থেকে জেলায় পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। তবে সেগুলি এখনও বিলি করা হয়নি। সব মিলিয়ে ৩৬ হাজার ৭২৫ জন শিল্পী পরিচয়পত্র পেয়েছেন। অর্থাৎ, ১৪ হাজার ৫৩৮টি পরিচয়পত্র বিলি না হয়ে জেলা এবং ব্লক স্তরে পড়ে রয়েছে। কেন এই পরিস্থিতি? জেলা শিল্প কেন্দ্রের এক আধিকারিক বলেন, “সাধারণত, পঞ্চায়েত সমিতির বৈঠক ডেকে পরিচয়পত্র বিলি করা হয়। বিভিন্ন এলাকায় এ ভাবেই পরিচয়পত্র বিলি হয়েছে। কিছু পরিচয়পত্র এখনও জেলা এবং ব্লক স্তরে পড়ে রয়েছে। দ্রুত তা বিলি করার চেষ্টা চলছে। ব্লক স্তরে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|