শৈশবেই শুরু
খুশিতে বাঁচুন
নের আনন্দে মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়াত ছোট অপু। রেলগাড়ি দেখতে দিদির সঙ্গে ছুটে যেত। ছোটা দূর অসৎ এ প্রজন্মের ছোটদের ঘুরে বেড়ানোরই সময় নেই। পড়ার চাপে দিন কেটে যায়। বিনোদন বলতে কম্পিউটার বা টিভি। কিন্তু শরীর শোধ নিতে ছাড়ে না। শুরু হয় ঘাড় ও কোমরে ব্যথা। হতে পারে স্থূলতা, হজমের সমস্যা এমনকী মানসিক অবসাদও।
সব বাচ্চারই কম-বেশি শরীরচর্চার ইচ্ছে থাকে। বাবা-মায়ের উচিত সেই ইচ্ছেটাকে উস্কে দেওয়া। এর জন্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই। বাড়িতেই সহজ কিছু শরীরচর্চা করা যায়। যত অল্প বয়সে শুরু করা যায় ততই ভাল।
সমীক্ষার ফল বলছে বেশি বয়সে শুরু করলে অল্পেই উৎসাহ হারিয়ে যায়। দেখা গিয়েছে ১০ সপ্তাহ শরীরচর্চার পরে ছোটদের অবসাদ কেটেছে। বেড়েছে মনঃসংযোগও।
এ ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদের শিক্ষকের ভূমিকা নিতে হবে। ওয়ার্কআউটের সময়ে বাচ্চাদের ভঙ্গি ঠিক থাকছে কি না, সে দিকে একটু নজর দিতে হবে। সকালে স্কুল থাকলে বিকেলে ওয়ার্কআউট করান। আর দুপুরে স্কুল হলে সকালে। মাত্র কুড়ি মিনিটের জন্য। প্রথমে করান স্টেবিলিটি ওয়ার্কআউট। এতে পসচার ভাল হয়, মেরুদণ্ড শক্তিশালী হয়।

বার্ড ডগ হোল্ড:
ঠিক হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে থেকে ডান হাত সামনে তুলে বাঁ পা-টা শূন্যে টানটান করান। লক্ষরাখুন পিঠ যেন সোজা থাকে। শরীরটা যেন বেশি না কাঁপে। ১০-২০ সেকেন্ড করান। তার পরে অন্য হাত আর পা। দু’দিকেই তিন বার করে রিপিট করান। এতে পিঠের, কোমরের গভীরের পেশি সুদৃঢ় হবে। ঝুঁকে পড়াশোনা করা, টিভি দেখা, ভারী ব্যাগ বহনের জন্য কোমরের ব্যথাকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে। পসচারেও উন্নতি আসবে।

ব্রিজ হোল্ড: পিঠের উপর বাচ্চাকে শোয়ান। তার পরে দু’টি হাঁটু ভাঁজ করে ছবির মতো কোমরটা মাটি থেকে উপরে তুলে ধরে রাখতে বলুন। কোমর ও বুক এক সরলরেখায় থাকবে। এ ভাবে ১০-২০ সেকেন্ড থাকতে বলুন। একটু বিশ্রাম নিয়ে তিন বার রিপিট করান। নিতম্বের পেশি আর কোমরের গভীরের পেশিকে সুদৃঢ় করে। কোমরের ব্যথাকে ঠেকিয়ে রাখে। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস একদম স্বাভাবিক থাকবে।

প্রোন টি রেইজ: ছোটদের মেঝেতে উপুড় করে শোয়ান। এ বার দু’হাতের বুড়ো আঙুল ‘থাম্বস আপের’ ভঙ্গিতে ছবির মতো মাটি থেকে সাধ্যমতো তুলতে বলুন। দ্রুত তুলতে বারণ করুন। মোট দশ বার মাটি থেকে উঠবে আর নামবে। একটু বিশ্রাম নিয়ে দু’ তিন বার রিপিট করান। এতে ঘাড়ের ব্যথা ভাল থাকে। ঝুঁকে পড়ার ফলে কাঁধের পেশিগুলিতে চাপ পড়ে বেশি। এতে কাঁধের আর ঘাড়ের পেশি শক্তিশালী হবে।
বাচ্চাদের শুধু ছুটতে বললে বেশি দিন করবে না। সাইক্লিং-এও বিশেষ উৎসাহ পায় না। খেলাচ্ছলে দৌড়ের কাজটা করিয়ে নিন। তাও ঘরের মধ্যেই।

ফেচ্ দ্য বল: একটি বড় হালকা বল নিন। বাচ্চাকে বলুন আপনি যে দিকেই বলটা ফেলবেন সেটা এক ড্রপ পড়ার পর ধরতে হবে এবং আপনাকে ফেরত দিতে হবে। এক বার ডান দিকে, এক বার বাঁ দিকে। ধীরে ধীরে গতি বাড়ান। মাঝে মাঝে ওকে বোকা বানাতে এক দিকে ফেলার ভান করে উল্টো দিকে দিন। দশ-পনেরো বার বল ফেলার পর দু’মিনিট বিশ্রাম দিন। খেলাটা পাঁচ বার রিপিট করান। বাচ্চার এনার্জি লেভেল এতে বাড়বে। রক্তের সঞ্চালন বাড়বে। মনে স্ফূর্তি আসবে। অতিরিক্ত মেদ ঝরবে।

ক্যারি অ্যান্ড ড্রপ দ্য বল: দু’টি জলের বোতল ১৫ ফুট দূরত্বে রাখুুন। মাঝে একটি বোতল রাখুন। একটা ছোট্ট ক্রিকেট বল নিয়ে দৌড়ে মাঝে রেখে দিয়ে উল্টো প্রান্ত স্পর্শ করেই ফিরে এসে বলটা তুলে নিয়ে শুরুর প্রান্তে আসতে হবে। এ ভাবে পাঁচ বার যাওয়া আর পাঁচ বার আসা। দু’মিনিট বিশ্রাম। পাঁচ বার রিপিট করুন।

—নিজস্ব চিত্র

 



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.