গুপ্তিপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়
গ্রামবাসীদের চাপে পিছু হঠলেন বিক্ষোভকারীরা
রুখে দাঁড়ালেন গ্রামবাসীরাই।
অকৃতকার্য মেয়েদের পাস করানোর দাবিতে দলবল নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে আসা মানুষজন সরে পড়লেন গ্রামবাসীদের চাপেই। শুক্রবার দুপুরে হুগলির গুপ্তিপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে দেখা গেল এই দৃশ্য। গ্রামবাসীরা পাশে দাঁড়ানোয় স্বস্তি পেলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবারেও ওই স্কুলে বিক্ষোভ হয়। ঘেরাও করা হয় শিক্ষিকাদের। ঘেরাও ওঠে পুলিশের মধ্যস্থতায়। এ দিন পুলিশকে হস্তক্ষেপই করতে হল না। স্থানীয় বাসিন্দারাই সামলালেন পরিস্থিতি।
এ বার ওই স্কুলে ১৮০ জন ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছিল। গত ১১ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ হয়। তাতে দেখা যায়, ৩১ জন মেয়ে পাস করতে পারেনি। অভিভাবকেরা ওই মেয়েদের পাস করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান প্রধান শিক্ষিকা বনানী নিয়োগী পালকে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই অনুরোধ মানেননি। সেই কারণে বৃহস্পতিবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখান ওই সমস্ত ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা। ঘণ্টা দু’য়েক বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভকারীরা হুমকি দিয়ে গিয়েছিলেন, মেয়েদের পাস করানোর আশ্বাস দেওয়া না হলে শুক্রবার আরও জোরদার বিক্ষোভ দেখানো হবে।
এই ঘটনার কথা গ্রামে রটে যেতেই মানুষজন ক্ষুব্ধ হন। তাঁদের বক্তব্য, যারা পাস করতে পারেনি, তারা আবার চেষ্টা করুক। পরের বার নিশ্চয়ই পাস করবে। কিন্তু এ ভাবে জোর করে পাস করাতে গেলে উল্টে ওই বাচ্চাদেরই ক্ষতি করা হবে।
শুক্রবার দুপুরে কিছু অভিভাবক মেয়েদের নিয়ে স্কুলে আসেন। কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার তাঁদের জানিয়ে দেন, অকৃতকার্য মেয়েদের কোনও মতেই পাস করানো হবে না। কেননা, তারা খুবই কম নম্বর পেয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে দুপুর ১টা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে আশপাশের শতাধিক গ্রামবাসী স্কুলে চলে আসেন। ‘কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে হবে’ বলে বিক্ষোভকারী অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে বচসা। তার পরে কথা-কাটাকাটিতে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। একসময়ে মাঝেই প্রধান শিক্ষিকার ঘরে তালা লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের তালা খুলতে বাধ্য করেন। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের সম্মিলিত চাপের মুখে স্কুল চত্ত্বর থেকেই সরে পড়তে বাধ্য হন বিক্ষোভকারীরা। এর মাঝেই অবশ্য পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। যদিও, উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে আসায় তাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়নি।
গ্রামবাসীদের পক্ষে নিরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এক জন অভিভাবক স্কুলে ভাঙচুর চালানোর হুমকি দেন। তখনই গ্রামবাসীরা ক্ষেপে ওঠেন। তখনই ওঁদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। স্কুলে কোনও ধরনের অভব্যতা আমরা সহ্য করব না। আবার যদি কোনও বিক্ষোভ হয়, তা হলে গ্রামবাসীরাই প্রতিরোধ করবে। তখন কিন্তু ছেড়ে কথা বলবেন না গ্রামবাসীরা।” স্কুল সূত্রের খবর, অকৃতকার্য মেয়েদের অভিভাবকদের মধ্যে অনেকেই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। কয়েক জন অভিভাবকই এ দিন বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন। এক গ্রামবাসীর কথায়, “শুধু আন্দোলন করেই কাউকে পাস করানো হলে খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। আমরা তা চাই না।”
কি বলছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ?
পরিচালন কমিটির সম্পাদক প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, “দলমত নির্বিশেষে গুপ্তিপাড়ার মানুষ এসেছিলেন। তাঁরাই বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করেন। যে ভাবে মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে স্বস্তি পেয়েছি।” অকৃতকার্য মেয়েরা আগামী বার পড়তে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়াশোনার খরচ বহন করবে বলে প্রসেনজিৎবাবু জানিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা বনানীদেবীর সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি মোবাইল ধরেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.