|
|
|
|
অঙ্ক-ভয় কাটাতে চাই সংখ্যার নতুন ভাষা |
রূপসা রায় • কলকাতা |
বারবার বিয়োগ মানে ভাগ, আর বারবার যোগ মানে গুণ। এইটুকু ধরিয়ে দিলেই ছোটদের কাছে অঙ্কটা সহজ হয়ে যায়। এমন সহজ উপায়ে শেখানো যায় ভগ্নাংশও। চাই শিক্ষকের একটু নতুন চিন্তার শক্তি। তার ছাপ কমই পাওয়া যায় স্কুলে, তাই বিশ্ববিখ্যাত গণিতজ্ঞ শ্রীনিবাস রামানুজনের দেশে শিশুদের কাছে আজও অঙ্ক বিভীষিকা।
আজ, শনিবার রামানুজনের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী। দিনটিকে ‘জাতীয় গণিত দিবস’ বলে চিহ্নিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আর ২০১২ সালটিকেই ‘জাতীয় গণিত বষর্’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু রামানুজনের দেশে কেমন চলছে কচিকাঁচাদের গণিতচর্চা?সমীক্ষা বলছে, ভারতে প্রাথমিক শিক্ষায় পড়ুয়াদের অঙ্কের ফল মোটেই ভাল নয়। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াদের অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যা চিনতে পারে না। আর পঞ্চম শ্রেণিতে গিয়ে সহজ ভাগটুকু করতে পারে না তাদের মধ্যে দশজনে সাতজন। অর্থনীতিবিদ জ্যোৎস্না জালান পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গের একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কোচবিহার, বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো অনুন্নত জেলাগুলির ক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণির দশজনে একজন অঙ্কে শূন্য পেয়েছে। স্কুলের ফলেও দেখা যাচ্ছে, চতুর্থ শ্রেণিতেও প্রায় ৬০ শতাংশ পড়ুয়া অঙ্কে ‘সন্তোষজনক নম্বর’ (৩৪) তুলতে পারছে না। মাধ্যমিকে অবশ্য এই রাজ্যে ৮০ শতাংশের উপর পড়ুয়া পাশ করে। কিন্তু তাতে তারা অঙ্কটা শিখছে, একথা বলা যায় না। কলকাতা অঞ্চলের প্রধান পরীক্ষক শিশির সাহু বলেন, “কোনও মতে পাশ নম্বর (২৫) তুলে নিচ্ছে পড়ুয়ারা। কিন্তু, তার মানে এই নয় যে, তারা অঙ্ক শিখছে। অনেকেই স্রেফ মুখস্থ করে অঙ্কে পাশ করে।” শিশিরবাবুর মতে, প্রাথমিক থেকে অঙ্কের ভিত কাঁচা থেকে যাচ্ছে পড়ুয়াদের। তাই উচ্চমাধ্যমিকেও অঙ্ক নিয়ে পড়ার প্রবণতা কমছে। অথচ একটু বদলে দিলেই সহজ হয় অঙ্কের ক্লাস। মালদার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুনীল চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘বারোর নামতা মুখস্থ করতে হবে কেন? এগারোর নামতা সবারই মনে থাকে। বারোর দ্বিগুণ করতে হলে এগারোর দ্বিগুণের সঙ্গে দুই যোগ করো, তিনগুণ করতে হলে যোগ করো তিন।’’ এমন নানা মজার খেলা শিখিয়ে ফল পেয়েছেন তিনি। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুজিত মাহাতো বলেন, পড়ুয়াদের কাছে সংখ্যাগুলো কিছু বিমূর্ত চিহ্ন হয়ে আটকে থাকে। তাই অঙ্কে ভীতি কাজ করে। অথচ ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে বুঝিয়ে দেওয়া যায়, যা ভাগ করা হচ্ছে (একটা রুটি) সেটা লিখব উপরে, আর যতগুলোতে তা ছেঁড়া হল (তিন টুকরো) সেটা লিখব নীচে। তা হলেই সেটা বুদ্ধির মধ্যে চলে আসে।” |
|
|
|
|
|