|
|
|
|
অবৈধ স্কুলগাড়ি ধরার অভিযান শুরু নতুন বছরে |
অশোক সেনগুপ্ত |
কেবল হুমকি দিয়েই খালাস। বেআইনি স্কুলগাড়ি বন্ধ করার বিষয়ে বাম সরকারের পথেই হাঁটছে তৃণমূল সরকার। মহাকরণে পালাবদলের পরে সরকার বলেছিল, বেআইনি স্কুলগাড়ি চালাতে দেওয়া হবে না। কিন্তু, সেই ঘোষণা বাস্তবায়িত হয়নি। অভিযোগ, বৃহত্তর কলকাতার প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্কুলগাড়ির ৯০ শতাংশই ব্যবসা চালাচ্ছে বৈধ নথি ছাড়া। এ বার ফের রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে কড়া অভিযান চালানো হবে বেআইনি স্কুলগাড়ির বিরুদ্ধে।
নথিবিহীন স্কুলগাড়ি বিরুদ্ধে বারংবার প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’। যে সব বাস ছাত্রছাত্রী ও অফিসকর্মীদের আনা-নেওয়ার কাজ করে, এটি তাদের প্রধান সংগঠন। প্রতিবাদে কর্মবিরতিও করেছে তারা। সংগঠনের সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ফি বছর আমরা সরকারকে মোটা টাকা কর দিই। ওরা কী ভাবে কর না দিয়ে ব্যবসা করে?”
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের বক্তব্য, “বেআইনি ব্যবসা নিশ্চয়ই সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা সবার সঙ্গেই কথা বলেছি। নথিবিহীন স্কুলগাড়ি এক দিনে বন্ধ করা যাবে না। ১ জানুয়ারি থেকে আমরা বিশেষ অভিযান শুরু করছি।”
বৃহত্তর কলকাতায় স্কুলগাড়ি প্রায় সাড়ে তিন হাজার, এ কথা জানিয়েছেন স্কুলগাড়ি মালিকদের সংগঠন ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক আবির রায়। তিনি স্বীকার করেন, এর প্রায় ৯০ শতাংশেরই বৈধ নথি নেই। তা হলে কেন এ ভাবে ব্যবসা করছেন? আবিরবাবু বললেন, “আমরা কর দিয়েই ব্যবসা করতে চাই। সরকার নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করেও তা রূপায়িত না করলে আমারা কী করব?” তিনি জানান, ২০১০-এ তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী কলকাতায় স্কুলগাড়ি বৈধকরণের রূপরেখা তৈরি করেন। কিন্তু বারবার তদ্বির করেও ৮২টির বেশি স্কুলগাড়ি আইনি নথি পায়নি। আবিরবাবু স্বীকার করেন, কলকাতা সংলগ্ন তিন জেলায় বৈধ নথি আছে প্রায় ২৭৫টি স্কুলগাড়ির।
যেখানে ৯০ শতাংশ স্কুলগাড়ির বৈধ নথি নেই, সেখানে কী ভাবে নিয়মের শিকলে বাঁধা হবে সেগুলি? এর ধাক্কা এসে পড়বে পড়ুয়াদের উপরে। মুশকিল-আসানের পথ খুঁজতে তাই পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে মহাকরণে বৈঠকে বসেন স্কুলগাড়ির মালিক-সংগঠনের সম্পাদক আবিরবাবু। তাঁদের তরফে সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, বিধি মেনে ‘ইউরো থ্রি’-এর ১৪ বা তার বেশি আসনের গাড়িগুলিকে স্কুলগাড়ি হিসেবে চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক। ১ জানুয়ারির সময়সীমা বাড়িয়ে এর মধ্যে বিধি মেনে পর্যায়ক্রমে স্কুলগাড়িগুলিকে বৈধতা দেওয়ার অনুরোধও করেছে মালিক সংগঠন।
এ বিষয়ে মদন মিত্র বলেন, “আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। বাম আমলে যে অনিয়মের পাহাড় জমেছে, তা সাফ করতেই আমাদের রীতিমতো মুশকিলে পড়তে হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|