বৃহস্পতিবারেও দিনভর কুয়াশায় ঢাকা থাকল উত্তরবঙ্গ। আকাশে মেঘ থাকায় সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। কুয়াশার কারণে এ দিন সকাল থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পরপর আটটি বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়। কুয়াশা থাকলে শুক্রবারেও একাধিক বিমান বাতিল হয়ে যেতে পারে বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা। মেঘে ঢাকা আকাশ, কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডা হাওয়াতিনের ছোঁয়ায় উত্তরবঙ্গের স্বাভাবিক জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। এদিন সকালে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে ঝিরঝির করে বৃষ্টিও হয়েছে। ফলে শীত আরও বেড়ে যায়। যদিও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, তাপমাত্রা হঠাৎ করে কমে গেলে কুয়াশা জমে ঝরতে শুরু করে। |
জলপাইগুড়ি শহরেও এ দিন ভোরে তেমনই হয়েছিল। শহরের শান্তিপাড়া, দিনবাজার এলাকার অনেক দোকান বৃহস্পতিবার সারাদিন বন্ধ ছিল। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবারের তাপমাত্রাও কম ছিল। জলপাইগুড়ির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এদিন স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৯ ডিগ্রি কমে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ওঠানামা করেছে। যদিও এ দিন সকালে তাপমাত্রা আরো কম ছিল। সকাল আটটা নাগাদ জলপাইগুড়িতে ১১ ডিগ্রি, শিলিগুড়িতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে জানা গিয়েছে। কোচবিহারের দিনের তাপমাত্রাও এ দিন প্রায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যায়। দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল মাত্র ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকেও গত কয়েকদিনের তুলনায় ঠান্ডা ছিল বেশি। সকালে গ্যাংটকের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রিতে নেমে যায়। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার কিছুটা শীতল ছিল। তবে যে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে শীত এবং কুয়াশা বেড়েছে সেটি উত্তরবঙ্গের আকাশ থেকে পূর্ব দিকে সরতে শুরু করেছে, নতুন করে কোনও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উড়ে না এলে শুক্রবার থেকে উত্তরবঙ্গ জুড়েই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে।” বাগডোগরা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ দিন বিমান বাতিলের জেরে বিপাকে পড়েন প্রায় হাজারখানেক যাত্রী। দিল্লি থেকে বাগডোগরাগামী একটি বিমান বাগডোগরায় পৌঁছায়। দৃশ্যমানতার অভাবে বিমানটি কয়েক মিনিট আকাশে চক্কর খেয়ে গুয়াহাটি চলে যায়। |
বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কল্যাণ কিশোর ভৌমিক বলেন, “খারাপ আবহাওয়ার জন্য কোনও বিমান নামা ওঠা করতে পারেনি। এ দিন দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই, গুয়াহাটি মিলিয়ে আটটি বিমানের চলাচলের কথা ছিল। বিকালে প্রতিটি বিমান সংস্থা বিমানগুলি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে।” খারাপ আবহাওয়া বা কম দৃশ্যমানতার জন্য ইন্সস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) বাগডোগরায় না থাকায় সমস্যা হচ্ছে বলে কল্যাণবাবু জানিয়েছেন। এর আগে ১০ ডিসেম্বর একই কারণে বাগডোগরায় সব বিমান বাতিল হয়েছিল। শহরের পর্যটন সংস্থার কর্তা সম্রাট সান্যাল জানান, প্রতি বছরই ১৮ ডিসেম্বর থেকে বড়দিনের মরসুম শুরু হয়ে যায়। এদিন প্রায় ৪০০ মত পর্যটক বিমান বাতিল হওয়ায় এই অঞ্চলে আসতে পারেনি। উল্টোদিকে, শিলিগুড়িতে আটকে ২৫০ মত পর্যটক। তাঁরা ট্রেন, বাস এবং গাড়িতে কলকাতা, গুয়াহাটি রওনা হয়েছেন। অনেকে হোটেলে গিয়েছেন। বাগডোগরার আধুনিকীকরণ না হওয়ায় এই সমস্যা চলছে বলে সম্রাটবাবু জানান। |