মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা, ক্ষোভ নিহত কংগ্রেস নেতার পরিবারে
সুবিচারের আশায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘বহু চেষ্টায়’ দেখা করতে পারেননি বলে জানালেন হাবরার নিহত কংগ্রেস নেতা বাপি চৌধুরীর মা।
২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বর হাবরার প্রফুল্লনগরে একটি রক্তদান শিবিরে দুষ্কৃতীদের বোমা-গুলিতে নিহত হন বাপিবাবু। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হতে হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী রঞ্জিত রায় ওরফে নিগ্রোকেও। এই ঘটনায়রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন শুরু হয়। কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে ফাটলের সম্ভাবনাও দেখা দেয়। কারণ, খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাজু দাম তৃণমূলের ছত্রচ্ছায়ায় ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। দলের প্রথম সারির এক নেতার সঙ্গে রাজুর ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। কংগ্রেস-তৃণমূলের রাজ্যস্তরের নেতারা হাবরায় আসেন। দফায় দফায় মিছিল, পাল্টা মিছিল চলে বেশ কিছু দিন ধরে। ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়ে সিপিএম। বাপিবাবুর স্ত্রী কাকলিদেবীর সঙ্গে দেখা করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাহুল গাঁধী রাজ্য সফরে এলে তাঁর সঙ্গেও দেখা করেন কাকলিদেবী।
পুলিশ জানায়, ওই খুনের ঘটনায় রাজু-সহ অভিযোগ দায়ের হয় ১৬ জনের বিরুদ্ধে। যাদের মধ্যে ১৪ জনকেই পরে গ্রেফতার করা হয়। মূল অভিযুক্ত রাজু এখনও ফেরার। এলাকা দখল, তোলাবাজি, সাট্টা-জুয়ার নিয়ন্ত্রণ-সহ একাধিক কারণে বাপির উপরে দুষ্কৃতীরা হমলা চালায় বলে তদন্তে জানতে পারে পুলিশ।
সন্তানশোকে কাতর রেবাদেবী। ছবি: শান্তনু হালদার।
বৃহস্পতিবার, বাপি খুনের তিন বছর পূর্তিতে হাবরায় এক স্মরণসভায় সেখানে হাজির ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবী ঘোষাল-সহ একাধিক নেতা। বাপিবাবুর মা রেবাদেবী বলেন, “বুদ্ধদেববাবুর সঙ্গে দেখা করার পরে কিছু দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু মূল অভিযুক্ত এখনও ফেরার। পুলিশ তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। যারা ধরা পড়েছিল, তাদের কেউ কেউ জামিন পেয়েছে।” রেবাদেবীর দাবি, ছেলের শোকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাপিবাবুর বাবা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার বহু চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ছেলের খুনের ঘটনার সুবিচার চান মা। রাজুকে মাঝে মধ্যে এলাকায় দেখা যায় বলে দাবি বাপিবাবুর আত্মীয়দের।
দেবীবাবু বলেন, “এই মামলায় শুনানির নামে প্রহসন শুরু হয়েছে।” তাঁর কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও লাভ হবে না। কারণ মূল অভিযুক্ত তাঁরই দলের এক বড় গাছের আশ্রয়ে রয়েছে। ওই বড় গাছ আবার মুখ্যমন্ত্রীর খুব কাছের। প্রশাসনও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনি।”
কংগ্রেসের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “মূল অভিযুক্ত এক সময়ে সিপিএম নেতাদের আশ্রয়ে ছিল। ঘটনার পিছনে কী কারণ, তা না খুঁজে কংগ্রেস এখন সিপিএমকে রক্ষা করতে নেমেছে।” দোষীদের গ্রেফতার করে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র দাবি তুলেছেন তিনিও।
অন্য দিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে এ দিন প্রফুল্লনগরে রঞ্জিতের স্মৃতিতে মৌনী মিছিল হয়। শহিদ বেদিতে মাল্যদানও হয়েছে। পরে স্থানীয় একটি সভাগৃহে স্মরণ-অনুষ্ঠানে রঞ্জিতের মা দীপ্তি রায়-সহ পরিবারের লোকজন হাজির ছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর নন্দা চক্রবর্তী বলেন, “ওঁরা কখনও মুখ ফুটে কিছু দাবি করেননি। তবে যত দূর পারি ওই পরিবারকে সাহায্য করছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.