|
|
|
|
তৃণমূলের বাধা, ফের কাজ বন্ধ কেলেঘাই প্রকল্পে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
তৃণমূলের একাংশের বাধায় ফের বন্ধ কেলেঘাই নদী সংস্কারের কাজ। এই নিয়ে চতুর্থ বার।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে ঢেউভাঙার কাছে কেলেঘাই নদীর উপরে বাঁধ তৈরির কাজ গত সোমবার থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় গুড়গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান আশিস পাত্রের বাধায় এই পরিস্থিতি বলে জেলা পরিষদে অভিযোগ জানিয়েছে সেচ দফতর। তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “যারাই বাধা দিক, প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
তবে জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি ও পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন দু’জনেই জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় এই মুহূর্তে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।
প্রকল্পের সঙ্গে আগাগোড়া জড়িয়ে থাকা রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার প্রতিক্রিয়া, “কোনও কারণে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলে,
যাঁদের বাধায় কাজ হল না, তাঁরা কিন্তু উন্নয়ন-বিরোধী বলেই মানুষের কাছে প্রতিপন্ন হবেন।”
কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাগুই নদী সংস্কারের এই প্রকল্প (৬৫০ কোটি টাকার) রূপায়িত হলে বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার বিভীষিকা থেকে মুক্তি পাবে। দুই মেদিনীপুরের সাতটি ব্লকের প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। চলতি বছরের গোড়া থেকে শুরু হয়েছে কাজ। কিন্তু বারবার বাধা পড়ায় কাজের গতি কমছে। কখনও দাবিমতো টাকা না দেওয়ায় ঠিকাদারদের কর্মীদের হুমকি, মারধরের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ বারের বাধার পিছনেও রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
কেলেঘাই নদীর ঢেউভাঙা থেকে চাবুকিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা সংস্কারের জন্য ৮৫ কোটি টাকার কাজের বরাত পেয়েছে সরকারি সংস্থা ম্যাকিনটস বার্ন। তার অধীনে ঢেউভাঙা ও শিলখালিতে কেলেঘাই নদীর উপরে আড়াআড়ি বাঁধ তৈরির কাজ করছেন স্থানীয় ঠিকাদার তথা যুব তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধান। স্থানীয় রাজনীতিতে নান্টুবাবু এবং আশিস পাত্র পরস্পর বিরোধী গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। নান্টুবাবুর অভিযোগ, “গত সোমবার সকালে আশিস পাত্র লোকজন নিয়ে ঢেউখালি এলাকায় গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। সেই থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।”
আশিসবাবুর দাবি, তিনি কাজ বন্ধ করেননি। তবে তাঁর বক্তব্য, “আমার পঞ্চায়েত এলাকায় বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হলেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এ জন্য জমি অধিগ্রহণ হবে। অথচ, সে সংক্রান্ত নোটিস না দিয়েই কাজ শুরু হওয়ায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত। আমি সেচ দফতরের আধিকারিককে বলেছি, বাঁধ তৈরির আগে আলোচনায় বসুন।”
যদিও সেচ দফতরের একটি সূত্রের দাবি, গত সোমবার আশিসবাবু সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর বিভাগের এক কর্তাকে ফোনে বলেছেন, ওই এলাকায় জমি অধিগ্রহণের নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত বাঁধ তৈরি বন্ধ রাখতে হবে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, সমস্ত নিয়ম মেনেই ওই এলাকায় জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, “তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পটা শেষ হওয়ার কথা। এমন চললে আদৌ তা হবে কি না, সংশয় বাড়ছে।” |
|
|
|
|
|