পশ্চিমবঙ্গে নতুন ক্যাম্পাস চালু করার সময়সীমা জানিয়ে দিল দেশের পয়লা নম্বর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস (টিসিএস)। ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরের শেষেই চালু হয়ে যাবে রাজারহাটে ৪০ একর জমিতে তৈরি এই ক্যাম্পাস।
জমি হাতে পাওয়ার প্রায় তিন বছর পরে সমস্ত সরকারি অনুমোদন পায় এক হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ব্যবসা করা এই সংস্থা। ফলে কাজ শুরু করতেই দেরি হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার কলকাতায় টিসিএস-এর অন্যতম কর্তা অজয় মুখোপাধ্যায় জানান, শুরু করতে দেরি হলেও প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। প্রথম দফার কাজ শেষ হলে এখানে কর্মসংস্থান হবে ৭০০০ জনের। পরবর্তী পর্যায়ে ৯৫০০ কর্মী নিয়োগ করা হবে।
সব মিলিয়ে এই বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে ১,৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে বলে জানান টিসিএস কর্তৃপক্ষ। সংস্থার চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার এস মহালিঙ্গমের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা অটুট রয়েছে। প্রকল্পের জন্য স্থানীয় মেধা -সম্পদ ব্যবহারের দিকেই নজর দেবেন তাঁরা।
অন্য দিকে সিআইআই-এর এক সভায় টিসিএস-এর প্রকল্পের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “আমরা জমি দিয়েছিলাম। সংস্থা প্রকল্প গড়ছে, খুবই ভাল কথা।” এর সঙ্গে সিঙ্গুরে টাটাদের কারখানার প্রসঙ্গ জড়াতেও নারাজ তিনি। ওই বিষয়টি বিচারাধীন বলে কোনও মন্তব্য করতে না-চাইলেও তাঁর দাবি, টাটা গোষ্ঠী বা কোনও লগ্নিকারীর তাঁরা বিরুদ্ধে নন। সিঙ্গুরে কোনও বিনিয়োগকারী নয়, নীতির প্রশ্নেই তাঁরা বিরোধিতা করেছেন। শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য, টাটাদের আরও অনেক লগ্নি এ রাজ্যে হয়েছে এবং হচ্ছেও।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এই প্রকল্প চালু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল ২০১১ সালে। রাজারহাটে টিসিএস-এর এই প্রকল্প ঘিরে প্রশাসনিক ঢিলেমির অভিযোগ ওঠে। ২০০৮-এ একর প্রতি দেড় কোটি টাকা দরে জমি কিনলেও এত দিন প্রকল্পের কাজে এক পাও এগোতে পারেনি সংস্থা। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে গিয়ে পদে পদে প্রশাসনের চৌকাঠে ঠোক্কর খেয়েছে তারা।
২০০৯ সালে জমি হাতে পায় টি সি এস। তার পরেও দু’বার জমির পুনর্বিন্যাস হয়। চৌকো আকারের জমি এখন ইংরেজি অক্ষর ‘এল’ আকারের দাঁড়িয়েছে। তাও মেনে নিয়েছিল সংস্থা। কিন্তু এর পরে লাল ফিতের ফাঁসে আটকে যায় প্রকল্প তৈরির নকশাই। তার কারণ নকশা অনুমোদন করার জন্য যে-পরিকাঠামো প্রয়োজনীয়, তাই ছিল না রাজারহাট অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থা নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)-র। |