এখন শুধু বারোটা বাজার অপেক্ষা, পিটারের ‘আর্ক’ এক্কেবারে তৈরি। কারণ,আগামী কালই নাকি ধ্বংস হতে চলেছে পৃথিবী। তাই নোয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আগেভাগেই এক বিশাল নৌকো তৈরি করে ফেলেছেন নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা পিটার ফ্র্যাঙ্ক ভ্যান ডার মির। দেশটা একেই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশ কিছুটা নীচে। পিটারের আশঙ্কা প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সবার আগে ডুববে নেদারল্যান্ডস-ই।
সত্যিই কি এমন কিছু হবে? কালই কি তবে শেষ দিন? ইতিহাসবিদরা জানাচ্ছেন, মায়া সভ্যতার ক্যালেন্ডারে ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বরের পর আর কোনও তারিখের অস্তিত্বই নেই। তা থেকেই সব জল্পনা। এমনও হতে পারে, কোনও কারণে নষ্ট হয়েছে ক্যালেন্ডারটির পরের তারিখগুলি। কিন্তু মায়া সভ্যতার ইতিহাস বলছে অন্য কথা। ঈশ্বর চার বারের চেষ্টায় করেছিলেন পৃথিবী। মিলেছিল প্রাণের স্পর্শ। ৫১২৫ বছর করে টিকে থাকার পর এর আগে তিন বার পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যায়। চতুর্থ পৃথিবীতেই বাস করছি আমরা। |
পিটার ফ্র্যাঙ্ক ভ্যান ডার মিরের নৌকো। ছবি: পিটিআই |
জর্জিয়ান ক্যালেন্ডার বলছে, পৃথিবীর সূচনা ৩১১৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ১১ অগস্ট। সে হিসেব মতো ২০১২-তেই ৫১২৫ বছর হচ্ছে পৃথিবীর। এই ২০১২-এর২১ ডিসেম্বরেই শেষ মায়া ক্যালেন্ডার। দু’য়ের মধ্যে তৈরি হওয়া এই যোগসূত্র কি নেহাৎই কাকতালীয়? বিশ্ব-জুড়ে তৈরি হয়েছে নানা গুজব। শুধু আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই চিনে এক দিনে আটক করা হয়েছে ১০০০ জনকে। যদি বেঁচে যান, তাই আগেভাগেই দরকারি জিনিস কিনে রাখছেন বহু রুশ নাগরিক। মার্কিনরা আরও এক ধাপ এগিয়ে। তাঁরা গোটা আশ্রয় শিবিরই কিনতে ব্যস্ত। ফরাসিরা চড়ছেন বুগারাশ পাহাড়ের চূড়ায়। তাঁদের বিশ্বাস, ভিন গ্রহের প্রাণীরা এসে সকলকে উদ্ধার করবে।
পিটারও এমনই এক জন। তাঁর বিশ্বাস, বাইবেল মেনে পৃথিবী এ বার প্রবল জলোচ্ছ্বাসের মুখোমুখি হবেই। নৌকায় আত্মীয়দেরও জায়গা রেখেছেন তিনি। ৫০টি আসন রয়েছে নৌকোয়। খরচ পড়েছে প্রায় ১১ হাজার পাউন্ড।
মায়ার ইতিহাস বলছে, কাল এক বিশাল শক্তি উৎপন্ন হবে। ঝড় উঠবে সূর্যে। আর তা থেকে তৈরি হবে ভয়াবহ সুনামি। নাসা অবশ্য এক কথায় নস্যাৎ করেছে এ সব আশঙ্কা। তবে কি না, কথায় বলে, যা রটে তার কিছুটাও তো বটে। তাই আপাতত ‘মায়া-জ্বরে’ ভুগছে গোটা দুনিয়া। |