ক্লাসে উপস্থিতির হার কম থাকায় তিন ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দিতে চাননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে সেমেস্টারের পরীক্ষা বয়কট করে বিক্ষোভ দেখালেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (ইউআইটি) প্রথম ও তৃতীয় বর্ষের প্রায় ছ’শো পড়ুয়া। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, হাজিরা কম থাকা ছাত্রদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া সম্ভব নয়।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ক্লাসে উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের কম হলে সেই পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। কিন্তু এ বার দেখা গিয়েছে, এই নিয়ম জারি থাকলে বহু ছাত্রছাত্রীই পরীক্ষা দিতে পারবেন না। তাই ন্যূনতম উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু তাতেও দেখা যায়, বেশ কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থী বাদ পড়ে যাচ্ছেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম উপস্থিতির হার ৪৫ শতাংশ ধার্য করেন। কিন্তু সেই হাজিরাও না থাকায় তিন ছাত্র পরীক্ষা দিতে পারবেন না জেনে পড়ুয়ারা দাবি করতে থাকেন, উপস্থিতির হার আরও ৪০ শতাংশ করতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি।
এ দিন প্রথম ও তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমেস্টার শুরুর দিন ছিল। কিন্তু পরীক্ষার্থীরা হলে ঢুকতে অস্বীকার করেন। তাঁরা কলেজ চত্বরে দিনভর বিক্ষোভ দেখান। এর জেরে এ দিন ওই দুই বর্ষের কোনও পরীক্ষা হয়নি। পরীক্ষার্থীদের দাবি, অন্য বছর হাজিরা নিয়ে এত কড়াকড়ি করা হয় না। এ বার কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁদের দাবি মানেননি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিভাগ প্রামাণিক বলেন, “উপস্থিতির হার ৪৫ শতাংশের নীচে নামানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। এ কথা পরীক্ষার্থীদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
এ দিনই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমএ পরীক্ষা পিছনোর দাবিতে রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়ের কাছে বিক্ষোভ দেখায় এক দল ছাত্র। নেতৃত্ব দেন টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্ভীক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দাবি, ৪ জানুয়ারি থেকে কৃষ্ণসায়র উৎসব উপলক্ষে মাইক বাজবে। তাতে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অসুবিধা হবে। তাই অন্তত দু’সপ্তাহ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা। রেজিস্ট্রার বলেন, “এই সমস্যা আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিচার করতে চাই। এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |