এনভিএফ এবং হোমগার্ড
চাকরি কই, প্রশ্নে বিব্রত খাদ্যমন্ত্রী
ভা শেষ। মঞ্চ থেকে নেমে আসছেন মন্ত্রী। দর্শকদের ভিড়ের মধ্যে থেকে জনা ছয়েক যুবক উঠে দাঁড়ালেন। চিৎকার করে তাঁরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলেন, “জেলায় জঙ্গলমহলের সব ব্লক থেকেই হোমগার্ড এবং এনভিএফ কর্মী নেওয়া হল। প্রতিশ্রুতি দিয়েও সিমলাপাল থেকে কেন নেওয়া হল না?” ভিড় ঠেলে মন্ত্রী তখন সামনে এগোতে ব্যস্ত। কানে প্রশ্ন যেতেই একটু ফিরে তাকালেন। দলের জেলা স্তরের মেজো-সেজো নেতা-কর্মীদের ভিড় মন্ত্রীকে সামনের দিকে এগিয়ে দিল। গাড়ির দিকে হাঁটা দেন মন্ত্রী। নাছোড় যুবকদের এক জন মন্ত্রীর একেবারে পাশেই চলে আসেন। ফের তিনি গলা চড়িয়ে প্রশ্ন করেন, “আমাদের কি নিয়োগ করবেন না?” এ বার মন্ত্রীর জবাব, “হবে তো।” পাল্টা প্রশ্ন, “কবে?” তত ক্ষণে মন্ত্রী গাড়ির ভিতর।
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের পর বাঁকুড়ার সিমলাপালের বিক্রমপুরেও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে তাঁর দফতরের বিষয় নয়, এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হল মঙ্গলবার। এবং সেই প্রশ্নেরই জবাব জানতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের চারটি ব্লক (সারেঙ্গা, রাইপুর, রানিবাঁধ ও সিমলাপাল) থেকেই বাছাই করা যুবকদের এনভিএফ এবং হোমগার্ড পদে নিয়োগ করার কথা ছিল। কিন্তু বাকি তিনটি ব্লকের যুবকেরা সুযোগ পেলেও ব্রাত্য থেকে গিয়েছে কেবল সিমলাপাল। ক্ষোভ সেখানেই।
বাঁকুড়ায় ধান কেনা শিবিরের ছবিটি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ।
সোমবারই বান্দোয়ানের দুয়ারসিনিতে সেতু না থাকায় মহিলাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে। এ দিন বাঁকুড়াতেও ক্ষোভ তাঁকে পিছু ছাড়ল না। যদিও এখানেও তিনি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার সূচনা করতে এসেছিলেন। তালড্যাংরা, সিমলাপাল ও সারেঙ্গা ব্লকের তিনটি শিবিরে মঞ্চ থেকে চাষিদের হাতে ধান বিক্রির চেক তুলে দেন তিনি। ধান বিক্রি করতে গিয়ে চাষিরা যাতে ফড়েদের ফাঁদে পা না গলান সেই বিষয়ে মন্ত্রী বার বার সতর্ক করেন। কোনও কোনও সভায় চাষিদের মধ্যে কেউ কেউ ধান বিক্রি করতে গিয়ে তাঁদের নানা অসুবিধার কথা বলছিলেন। কিন্তু তাল কেটে দেয় বিক্রমপুরের ওই সভা।
ওই যুবকদের মধ্যে সিমলাপালের বাসিন্দা চিরঞ্জিত দাস, প্রশান্ত শতপথীরা বলেন, “সিমলাপাল ব্লক থেকে এনভিএফ এবং হোমগার্ড নিয়োগ করা হবে বলে থানা থেকে মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু জঙ্গলমহলের অন্য ব্লকের ছেলেরা সেই সুযোগ পেলেও আমাদের নেওয়াই হল না। আবেদন পত্রও বিলি করা হয়নি।” কেন এমনটা হল? সদুত্তর মেলেনি প্রশাসনের কাছেও। খাতড়ার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “জেলা থেকেই ওই নিয়োগের বিষয়টি দেখা হয়েছে। আমরা জানি না।” পুলিশ সুপারকে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “সিমলাপাল থানা মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। ওই থানা এলাকা থেকে এনভিএফ এবং হোমগার্ড নিয়োগ হয়েছে কি না এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। মনে হয় জঙ্গলমহলের পাঁচটি থানা থেকেই নিয়োগ হয়েছে।” একই অবস্থা জেলা প্রশাসনেরও। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মৌমিতা বসু বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের টিপ্পনি, “তৃণমূল সরকারের কাছে শুধু প্রতিশ্রুতিই সস্তা। সিমলাপালে এক জনও এনভিএফ এবং হোমগার্ড হয়নি বলে আমাদের কাছেও খবর রয়েছে।” তাঁর কথারই সমর্থন মিলেছে সিমলাপাল ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহের কথাতেও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “নিয়োগের ব্যাপারটা খোঁজ নিয়ে বলতে পারব। তবে জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরিয়েছি, এটাও সাফল্য।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.