মশাট আপতাপ মিত্র হাইস্কুল |
প্রতিষ্ঠা ১৯৪৮। ছাত্রছাত্রী ১৫৬৯।
মোট শিক্ষক-শিক্ষিকা ৩৪ জন। শিক্ষাকর্মী ৬ জন।
পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকা ৪ জন। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ২ জন।
২০১২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩৬ জন। উত্তীর্ণ ১২৬ জন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ১১৭ জন। উত্তীর্ণ ১১১ জন। |
|
|
সুভাষচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(প্রধান শিক্ষক) |
|
গ্রন্থাগারের সমস্যা এখনও ভোগাচ্ছে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের |
১৯৪৭ সালে সদ্য স্বাধীনতা লাভের পর পরই এলাকার কিছু বিদ্যোৎসাহী ও প্রগতিশীল মানুষ একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করায় উদ্যোগী হন। ১৯৪৮ সালের ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের পুণ্য জন্মতিথিতে মশাট বারোয়ারিতলায় তৎকালীন মশাট এম ই স্কুলেই এই বিদ্যালয়ের পথচলা শুরু। তখন বিদ্যালয়ের নাম ছিল মশাট উচ্চ ইংরাজি বিদ্যালয়। ১৯৫৯ সালে বিদ্যালয় বর্তমান জায়গায় উঠে আসে। এলাকার শিক্ষাদরদী ব্যক্তি স্বর্গীয় অতুলচন্দ্র কুঁকড়ি সে সময়ে বিদ্যালয়ের জন্য ৫০ শতক জমি ও নগদ ৪ হাজার টাকা দান করেন। স্বর্গীয় আপতাপ চাঁদ মিত্রের আর্থিক সহায়তায় অসম্পূর্ণ ঘরগুলি সম্পূর্ণ হয় এবং বিদ্যালয়ের নামকরণ হয় তাঁর নামেই। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা অত্যন্ত পরিশ্রমের সঙ্গে ও যত্ন নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। দৈনন্দিন পঠন-পাঠনে চার্ট, মডেল ব্যবহার হয়। বিজ্ঞান বিষয়গুলির ক্ষেত্রে প্রোজেকশন-এ কম্পিউটার সিডি-র সাহায্য নেওয়া হয়।
ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষার জন্য বিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থা আছে। তাদের প্রগতিপত্র প্রস্তুতি, অফিস-সংক্রান্ত কাজ সব কিছুই কম্পিউটারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল চালু আছে।
পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রীড়া ক্ষেত্রেও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। তারা ফুটবল, খো-খো ও অ্যাথলেটিক্সে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। জোনাল ফুটবলে আমাদের বিদ্যালয় গত তিন বছরের চ্যাম্পিয়ন।
বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও ল্যাবরেটরিগুলি আরও উন্নত করার প্রয়োজন। চেয়ার-বেঞ্চের সংখ্যাও অপ্রতুল। ঘরের সমস্যা থাকায় ভোকেশন্যাল কোর্স চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। সর্বশিক্ষা মিশন এই বৎসর ১১টি নতুন ঘরের অনুমতি দেওয়ায় সমস্যা কিছু কমবে। বর্তমান সীমানা প্রাচীরটিরও ভগ্নদশা। অবিলম্বে বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনটির সংস্কার প্রয়োজন। ছাদ নতুন করতে হবে, যা অর্থের অভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। বিপদের মধ্যেও সেখানে ক্লাস করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি এই অঞ্চলের সবার সেরা। বিদ্যালয় ও প্রশাসনগত ভাবে অঞ্চল, ব্লক, জেলা ও রাজ্য স্তরের খেলা এই মাঠে সংগঠিত হয়। কিন্তু ডানকুনি-ফুরফুরা শরিফ রেল লাইনের জন্য মাঠের বড় অংশ অধিগৃহীত হচ্ছে। ফলে ছাত্রছাত্রী ও এলাকার ছেলেমেয়েদের খেলার সুযোগ বাধাপ্রাপ্ত হবে। রেলের নিকট বিকল্প জায়গার আবেদন করা হয়েছে। |
আমার চোখে
দেবজ্যোতি দাস
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট বয়) |
|
|
মশাট আপতাপ মিত্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হই ২০০৮ সালে। এই ক’বছরের ছাত্র জীবনের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি বিদ্যালয়টি আমাদের কাছে গর্বের। এখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অত্যন্ত যত্নে শিক্ষা দান করেন। যার প্রমাণ, প্রতি বছর মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতামূলক খেলাধূলা সব কিছুতেই এই বিদ্যালয় এগিয়ে। একটি বিদ্যালয়ে যা কিছু থাকার প্রয়োজন যেমন লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি ইত্যাদি তা সবই আমাদের বিদ্যালয়ে আছে। এই সমস্ত জায়গা থেকে যথেষ্ট পরিবেশ পাই, যা আমাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাহায্য করে। তা সত্ত্বেও এখনও লাইব্রেরিতে শিক্ষার জন্য সাহায্যকারী বই, ল্যাবরেটরিতে আরও সরঞ্জাম প্রয়োজন। আগামী দিনে সব সমস্যা কাটিয়ে আমাদের এই গর্বের বিদ্যালয় এই এলাকার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ে পরিগণিত হবে, আমরা সকলেই এই আশা রাখি। |