মা দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন। সেই মতো মৃত্যুর পর তাঁর দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যালে দান করা হয়েছিল। কিন্তু মায়ের ইচ্ছাকে সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজন দেহদান নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি। সেই উদ্দেশ্যে তাই এগিয়ে এলেন ছেলে। খড়্গপুর আইআইটির অধ্যাপক সিদ্ধার্থ সেনের উদ্যোগে রবিবার দেহদান নিয়ে এক আলোচনাসভা হল খড়্গপুরের প্রেমবাজারে। স্থানীয় মৈত্রী ভবনে আয়োজিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতার গণদর্পণের সাধারণ সম্পাদক ব্রজ রায়। ব্রজবাবুই ছিলেন সভার মুখ্য বক্তা। অন্যদের মধ্যে ছিলেন তৃপ্তি চৌধুরী, শ্যামল সেনগুপ্ত প্রমুখ। |
আলোচনাসভা। —নিজস্ব চিত্র। |
সিদ্ধার্থবাবুর মা সাবিত্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে গত ৪ ডিসেম্বর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। সাবিত্রীদেবী তেভাগা আন্দোলনের সহযোগী ছিলেন। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে। সিদ্ধার্থবাবু খড়্গপুর আইআইটির অধ্যাপক। সেই সূত্রে প্রায় ৮ বছর ধরে তিনি ছেলের সঙ্গে আইআইটি ক্যাম্পাসের আবাসনে থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ৪ ডিসেম্বর সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন সাবিত্রীদেবী। মৃত্যুর পর পরিবারের লোকজন তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ করেছেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর দেহদান করা হয়। দেহদান নিয়ে সমাজের সর্বস্তরেই সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই স্মরণসভার পাশাপাশি এক আলোচনাসভা আয়োজনের উদ্যোগ নেন সিদ্ধার্থবাবু। ঠিক করেন, মরণোত্তর দেহদান কী জন্য প্রয়োজন, তা মানুষের কাছে তুলে ধরবেন। সেই মতো রবিবার বিকেলে প্রেমবাজারের মৈত্রী ভবনে এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “মা দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন। সেই মতো মৃত্যুর পর তাঁর দেহদান করা হয়েছে। আমাদের সকলেরই উচিত মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করা। মায়ের ইচ্ছেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। সেই উদ্দেশ্যেই এই আলোচনা সভার আয়োজন।” সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেহদানের প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বই তুলে ধরেন উপস্থিত সকলে। তাঁদের বক্তব্য, চিকিৎসা-বিজ্ঞানের উন্নতির জন্যই দেহদান করা প্রয়োজন। দেহদান করলে তা চিকিৎসা-বিজ্ঞানের কাজে লাগে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অন্যের জীবন বাঁচাতে পারে। সঙ্গে, মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করার জন্য সকলের কাছে আবেদনও রাখা হয়। |