ডিভিসি-র নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘিরে রইল জমির প্রশ্ন। শোনা গেল, জমির প্রশ্নে একই দলের (কংগ্রেস) নানা স্তরের নানা স্বরও। যা প্রত্যক্ষ করলেন খোদ কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে রবিবার কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী যখন প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন, তখন কিছুটা দূরে পরিবারপিছু চাকরির দাবিতে হাতে পোস্টার-ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন প্রকল্পের জমিহারারা। পাশে বিক্ষোভ চলছে সিপিএমের। সেই একই দাবিতে এ দিনই অনুষ্ঠান ‘বয়কট’ করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। আমন্ত্রণ পেয়েও যাননি জেলার একমাত্র মন্ত্রী এবং স্থানীয় বিধায়ক। এই জমির প্রশ্নেই এ দিন রাজ্যকে তুলোধোনা করলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। সেই জমির প্রসঙ্গেই ধর্নামঞ্চ করে জমিহারাদের সুরে সুর মিলিয়েছেন কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। জমিহারাদের দাবিকে সমর্থন করতে হয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়াকেও। |
সেই জমি-জটেই বারবার ব্যাহত হওয়া প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত করতে হাতে মাইক্রোফোন ধরে এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ডিভিসির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ সেনের আর্জি, “ওয়াটার করিডর ও রেল করিডরের জমি অধিগ্রহণে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। আপনারা সহযোগিতা করুন। না হলে প্রকল্পের কাজে দেরি হয়ে যাচ্ছে।” শেষ পর্যন্ত মাঠে নামতে হয় জ্যোতিরাদিত্যকে। কংগ্রেসের ধর্না-মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীকে বলতে হয়, “আপনাদের দাবি আমি শুনেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি রূপায়ণে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।”
পাঁচ বছর আগে রঘুনাথপুর মহকুমার নিতুড়িয়া ও রঘুনাথপুর ২ ব্লক এলাকার একাংশে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে শুরু করেছে ডিভিসি। প্রথম পর্যায়ে হচ্ছে ১,২০০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট। মূল প্রকল্পের কাজ শেষ দিকে হলেও জমির অভাবে রেল করিডর ও ওয়াটার করিডর এখনও অসম্পূর্ণ। এই অবস্থাতেই দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস হল এ দিন। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০ হাজার কোটি বিনিয়োগের কথা ডিভিসি-র। |
রুখাসুখা এই জেলাতেও বারবার জমি-প্রশ্নে হোঁচট খেতে হয়েছে ডিভিসিকে। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ কবে শেষ হবে, সে প্রশ্ন থাকছে। সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া বলেন, “ডিভিসি এখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়া শুরুর পরে এলাকায় তিনটি বড় মাপের ইস্পাত কারখানার (জয় বালাজি, শ্যাম স্টিল ও আধুনিক গোষ্ঠী) প্রস্তাব এসেছিল। জমি-জটে গত দেড়-দু’বছরে প্রকল্পগুলির কাজ কিছু এগোয়নি।” কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীকে ওই দাবিতে স্মারকলিপিও দেয় জমিহারা কমিটি। |