এ বারের আই লিগে এই প্রথম হারলাম। ইস্টবেঙ্গল সমর্থক ছাড়াও যাঁরা এই লেখাটা পড়বেন, নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন আমি কতটা ভেঙে পড়েছি। বলে রাখি, রবিবারের স্কোরলাইন যা-ই বলুক, ছেলেদের পারফরম্যান্সে আমি খুব একটা হতাশ নই। গত বারের থেকে তো ভাল জায়গায় আছি। গত বার এই সময়ে কি এত পয়েন্ট ছিল আমাদের? শেষ কবে আমরা দুইয়ের বেশি গোল খেয়েছি, মনে করতে পারেন? আর টিমটার নাম যখন প্রয়াগ, ময়দানের হেভিওয়েট টিম, চ্যালেঞ্জটা তো কঠিন হওয়ারই ছিল।
ডেম্পো শনিবার হেরে যাওয়ায় আজ আমাদের সামনে সুযোগ ছিল এক নম্বরে উঠে আসার। ম্যাচটা জিতলে সেটা হত। কিন্তু কী হলে কী হত, এই দর্শনে আমি বিশ্বাসী নই। জীবনে এ রকম ‘যদি’, ‘হয়তো’, ‘কিন্তু’ কত আসে।
|
ছবি: উৎপল সরকার |
আজ ড্রেসিংরুমে ফিরে দেখলাম, ছেলেরা কী রকম চুপ করে বসে আছে। ওদেরও বলেছি, ভেঙে পড়ার কোনও কারণ নেই। ফুটবলে এ রকম চড়াই-উতরাই কত আসে। ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে এখন এগোতে হবে। তেমনই ওপারা আর বেলো রজ্জাকের মধ্যে কী ঝামেলা হয়েছিল, তা নিয়েও অহেতুক মাথা ঘামাতে চাই না। যেটা আমি দেখিইনি, সেটা নিয়ে আর কী বলব? ম্যাচের পরপরই আমি টানেলে ঢুকে যাই। তখন মাঠে কে কী করেছে, আমি কী ভাবে জানব? রবিবার কিন্তু আমরা মোটেই খারাপ খেলিনি। যতক্ষণ ‘ওপেন প্লে’ চলছিল, বেশি সুযোগ পেয়েছি। প্রথমার্ধে ইসফাক আর পরের দিকে রবিন সিংহ দুটো দারুণ সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু গোল হল না। র্যান্টি আবার হাফ-চান্সেই গোল করে চলে গেল। মার্কারকে বোকা বানিয়ে কী দুর্দান্ত গোলটাই না করল! নিখুঁত ফিনিশিংএকজন ভাল স্ট্রাইকারের যে গুণটা থাকা উচিত, সেটাই দেখলাম র্যান্টির ওই গোলটায়। আমি ভারতীয় ফুটবলে আসার আগে থেকেই সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ওর নাম থাকত।
একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। রবিবার মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে দেখলাম, নাগপুরে আমার দেশ বেশ ভাল জায়গায়। এই টেস্টটা যদি ড্র-ও হয়, ইংল্যান্ড সিরিজটা জিতে যাবে। আমার কাছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের জয় সবচেয়ে স্পেশ্যাল। তবুও বলব, উপমহাদেশে এসে টেস্ট সিরিজ বের করে নেওয়াএটাও কম কৃতিত্বের নয়। মনে হচ্ছে কুক-কেপিদের ক্রিসমাসটা ভালই যাবে।
আর আমার ক্রিসমাস? না, ছুটি নিচ্ছি না এ বার। বাড়ির লোকদের কথা মনে পড়বে। বছরের এই সময়টা পরিবারকে খুব মিস করি। কিন্তু আমার সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমার ক্রিসমাস ক্যালেন্ডারে থাকছে শুধুই ইস্টবেঙ্গল। পুরোদমে ট্রেনিং। ফিরে তো আসতেই হবে আমাদের!
|