আজ শেষ দফা
মোদীগ্রামের আবেগেও ভরসা কই দামোদরের ছেলের
বাবার চায়ের দোকানে বাসন মাজত, চা দিত। আর এখন? দামোদরের সেই ছেলেটা দিল্লি যাচ্ছে। দেশের মুখিয়া হয়ে।
রাত পেরোলে গুজরাতে শেষ ভোট। ফল বেরোতে আরও তিন দিন।
পাশা কোন দিকে? কে জানে!
জানে বোধহয় মোদীর ছেলেবেলা। ভদনগরের অলিগলি। যে গলি দাপিয়ে বেড়াতেন নরেন্দ্র মোদী। জানে বোধহয় ক্রিকেট মাঠ। রোজ বিকেলে যেখানে খেলতেন। জানে বোধহয় বি এন হাইস্কুল। নাটক করে পয়সা জমিয়ে যে স্কুলের পাঁচিল হয়েছিল। জানেন হয়তো মণিবেন। যাঁর কোলে বড় হয়ে মোদী আজ মস্ত নেতা। কিংবা দশরথ মোদী। তর্কে যিনি কখনওই জিততে পারলেন না। জানতে পারেন হরিশ পটেল। মোদীর সঙ্গে গানে পাল্লা দেওয়া হল না। বা শর্মিষ্ঠা হ্রদ। সাঁতার কেটে যেখান থেকে জ্যান্ত কুমিরছানা ধরে এনেছিলেন মোদী। জানতে পারে দামোদরের চায়ের দোকান। স্কুলের ফাঁকে সকাল-বিকাল যেখানে ছুটতেন। বাবার পরিশ্রম লাঘবে। ভদনগরের ভোট? গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে।
ঘরে-ঘরে রেষারেষি। শ’টাকার বাজি। কে প্রথম বলেছে, মোদী এক দিন প্রধানমন্ত্রী হবে? এ বাজিতে কেউ হারেন না। শ’টাকা কেউ পানওনা।
সঙ্ঘের কাছাকাছি আসার পর মোদীর ভাবনার উত্থান। ছেলেবেলায় এই গ্রামেই পরিবার বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু মোদী আর ঘরমুখো হননি। সে বাড়ি এখনও আছে। কিনেছেন অন্য কেউ। বাবার চায়ের দোকানও বিক্রি হয়েছে। অনেক বছর মা হিরাবেন ছিলেন বাড়িটিতে। মোদী তাঁকে আমদাবাদে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ভদনগর মোদীকে ভোলেনি। মোদীও নয়। এ গ্রামকে ছোট শহর বানানো, রাস্তা তৈরি, সৌর বিদ্যুৎ, মন্দির, মেলা, কারখানা, রোজগার সবই মোদীর দান। মোদী যতই দূরে থাকুন, ভদনগর আজও মোদীময়। মোদীর মায়েরও বিশ্বাস, ছেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন।
অথচ আবেগ যত বেশি, সমস্যা তার চেয়েও বেশি। শুধু গুজরাতের লড়াই-ই নয়, দিল্লির পথ প্রশস্ত করার লড়াইও মোদীকে লড়তে হচ্ছে একাধারে। তার মধ্যেই এমন ত্রিকোণমিতির লড়াই আগে কখনও লড়তে হয়নি মোদীকে। বিজেপি, কংগ্রেস, কেশুভাই পটেল। কেশুভাই মোদীর কত ভোট কাটেন, তার দিকে নজর কংগ্রেসের। মোদীর বিকল্প মুখ তুলে ধরতে পারেনি কংগ্রেস। পোস্টারেও নেই সনিয়া-মনমোহন-রাহুল। তবু মোদীর আসন কমাতেই এককাট্টা বিরোধী শিবির। আসন কমলেই কংগ্রেসের জয়। বলা হবে, মোদী-জাদু ভ্যানিস।
প্রথম দফায় রেকর্ড ভোট। এই উৎসাহ মোদী-বিরোধীও হতে পারে। কিন্তু এককাট্টা বিরোধীদের হাত থেকে মোদীকে বাঁচাতেও এই উৎসাহ হতে পারে। ঝুঁকি নিচ্ছেন না মোদী। কাল শেষ ভোটের আগে গলা ফাটিয়ে সমর্থকদের ভোট দিতে বলছেন। দ্বিতীয় দফায় শহর এলাকার রেকর্ড ভোটই স্বস্তি দিতে পারে মুখ্যমন্ত্রীকে।
মোদী জানেন, তাঁর দলের বিধায়কদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ আছে। তবু প্রার্থী বদলাতে পারেননি। পাছে বিক্ষুব্ধ হয়ে বিরোধী শিবিরে যোগ দেন! গোটা প্রচার তাই নিজের কাঁধেই নিয়েছেন। প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন। পৌঁছতে চেয়েছেন আরও মানুষের কাছে। বলতে হচ্ছে, “বিজেপির প্রার্থী কে, ভুলে যান। পদ্মে আপনার ভোট মানে আমাকেই ভোট। রাহুল গাঁধীর মতো আমার বাবা তো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। এমনকী গ্রামের সরপঞ্চও কোনও দিন হননি। আপনাদের শক্তিতেই গুজরাতে উন্নয়ন করেছি। আরও উন্নয়নের জন্য আবার ভোট দিন।” এ বার ভোটে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন মোদী। ভোট বাজারে বেচছেন নিজেকে। ভাল হলে ব্র্যান্ড মোদীর জয়, মন্দ হলে মোদীরই হার। লড়াই তাই মোদী বনাম মোদীর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.