সবাই বেড়াতে যায় ট্রেনে, বাসে, গাড়িতে চড়ে। বড় একঘেয়ে হয়ে গিয়েছিল সে সব। তাই ঠিক করলাম, এ বার পুজোয় বেড়াতে যাব মোটরবাইক চড়ে। বাইক চালানো আমার চিরকালের শখ। এমন রোমাঞ্চকর যাত্রার স্বাদ আর কী ভাবেই বা মেলে?
দিনটা ছিল ১ নভেম্বর, লক্ষ্মীপুজোর ঠিক পরের দিন। ভোর ৫টা নাগাদ মোটরবাইকে চড়ে বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য, প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। সঙ্গ দিলেন বন্ধু স্বপন মজুমদার। |
বাইক চালাতে চালাতে মাঝেমধ্যে বিশ্রাম। এ ভাবেই পেরিয়ে গেলাম গয়া, বারাণসী, গাজিপুর। গোরক্ষপুর জেলার বরহালগঞ্জে একটি হোটেলে সে দিন রাতটা কাটালাম। প্রথম দিন আমরা ১৩ ঘণ্টা মোটরবাইক চালিয়ে প্রায় ৬৮০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছি। পরের দিন, ২ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৬টায় আমরা রওনা দিলাম। সে দিন বেলা ১১টা মধ্যে ১২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নেপালের সীমান্ত সুনাওলি পৌঁছালাম। সেখানে মোটরবাইকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে ওখান থেকে সোজা লুম্বিনী পৌঁছলাম। এখানে হোটেলে ঢুকে একটু জিরিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। ৩ নভেম্বর আবার ভোর সাড়ে ৬টায় ব্যাগ গুছিয়ে লুম্বিনী থেকে পোখরার পথ ধরলাম। ভুতুয়াল, তানসেন হয়ে দুপুর ২টোর সময়ে পোখরা পৌঁছলাম। হোটেল খুঁজে সন্ধ্যার মধ্যে পোখরার সব জায়গাগুলি ঘুরে নিলাম। ৪ নভেম্বর হোটেল ছেড়ে ভোর ৫টায় সাহারান কোর্ট সানরাইস পয়েন্টে পৌঁছলাম। সাহারান কোর্টের রাস্তার মতো চড়াই-উতরাই নেপালে আর কোথাও দেখিনি। |
পরের দিন ভোরে সূর্যের প্রথম আলোয় অন্নপূর্ণা পর্বতমালা দেখে অভিভূত হলাম। পরে রওনা দিলাম কাঠমান্ডুুর দিকে। সে দিন রাতে হোটেলে বিশ্রাম নিলাম। পরের দিন ৫ নভেম্বর কাঠমান্ডু শহরের প্রধান প্রধান জায়গাগুলি বাইকে চড়েই ঘুরে নিলাম। ৬ নভেম্বর রওনা দিলাম বাড়ির পথে। হেতওয়া, বীরগঞ্জ, রক্ষাশল হয়ে সন্ধ্যায় পটনা পৌঁছে সেখানেই রাতটা কাটালাম। পরের দিন ভোরে পটনা থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুরের মধ্যে পৌঁছে গেলাম বাড়িতে।
নেপালের লোকজনের আতিথেয়তা আর সুন্দর ব্যবহার মুগ্ধ করেছিল আমাদের। এত দিন হয়ে গেল, এখনও মনে হয় ওখানেই রয়েছি...রেশ এখনও কাটেনি।
|