|
|
|
|
কেন্দ্রীয় জমি বিলে সিদ্ধান্ত |
বেসরকারি হাসপাতাল-স্কুলের জন্য অধিগ্রহণ নয়
শঙ্খদীপ দাস • নয়াদিল্লি |
বেসরকারি শিল্প, পরিকাঠামো ও সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের এক্তিয়ার রাখা হল ঠিকই। কিন্তু গত কাল যে জমি বিলে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা, তাতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল এবং হাসপাতালের জন্য কোনও ভাবেই জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না সরকার। সেই সঙ্গে কৃষক ও জমির মালিকদের স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখতে চূড়ান্ত জমি বিলে শেষ মুহূর্তে আরও কিছু পরিবর্তন করেছে মনমোহন সরকার।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, কোন কোন পরিকাঠামো প্রকল্পকে জনস্বার্থে প্রয়োজন বলে বিবেচনা করা হবে, তার একটি তালিকা গত মার্চ মাসে চূড়ান্ত করেছে সরকার। এই তালিকা নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে কোনও ধোঁয়াশা না থাকে, সে জন্য চূড়ান্ত বিলে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা হোটেলকে জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় প্রকল্প বলে বিবেচনা করা হবে না। সরকারের অভিজ্ঞতা হল, বিভিন্ন রাজ্যে সরকারের কাছ থেকে জমি নিয়ে বেসরকারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল তৈরি হয় ঠিকই। কিন্তু তাতে নিম্নবিত্ত ও গরিব পরিবারের কোনও উপকার হয় না। উল্টে সরকারের কাছ থেকে জমি নিয়ে ওই সব প্রতিষ্ঠান মুনাফা করে।
চূড়ান্ত বিলটিতে আরও কিছু পরিবর্তন রয়েছে। যেমন সেখানে বলা হয়েছে, জমি অধিগ্রহণের পর কোনও কৃষক বা জমির মালিককে বসবাসের জন্য বিকল্প জমি দেওয়া হলে, সেই জমির রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোনও স্ট্যাম্প ডিউটি লাগবে না। সেই সঙ্গে জমির মূল্য ও সোলাসিয়াম বাবদ যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবে জমির মালিক, তার ওপর কোনও আয়করও দিতে হবে না। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক শীর্ষ সারির কর্তার কথায়, আয়কর আইন অনুযায়ী জমি বাড়ি বিক্রি করে টাকা পেলে তার উপরে কর চাপবেই। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জন্য কাউকে যখন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, তার ওপর আবার কর চাপালে সরকারের নীতিতে স্ববিরোধ থেকে যাবে। তাই এই নীতি নেওয়া হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, সংশোধিত জমি বিলে বলা হয়েছে, সরকারি প্রকল্প বা বেসরকারি শিল্পের জন্য কোনও জমি অধিগ্রহণের পর যদি সেই জমিতে প্রকল্প গড়ে না ওঠে এবং পরবর্তীকালে সরকার যদি জমিটি বিক্রি করে দেয়, তা হলে মুনাফার অর্থের ৪০ শতাংশ মূল জমির মালিকদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ভাগ করে দিতে হবে। গত কাল বিলটিতে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, “সম্ভবত সোমবার জমি বিলটি সংসদে পেশ করা হবে।” তাঁর কথায়, “চূড়ান্ত জমি বিলটি নিয়ে কৃষক সংগঠন, বণিকসভা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান সকলেই সমালোচনা করছেন। আর তার থেকে আমার একটাই কথা মনে হচ্ছে। তা হল, বিলটিতে ভারসাম্য রয়েছে।” কী ভাবে? জয়রাম বলছেন, যদি শুধু কৃষকদের স্বার্থ দেখা হত, তাঁরা চুপ থাকতেন। শুধু শিল্পমহলের কথা মাথায় রাখলে তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকতেন। যখন সকলে সমালোচনা করছে, তখন বোঝাই যাচ্ছে, কোনও একটি মহলকে তুষ্ট করতে এই বিল তৈরি হয়নি। তাই বিরোধীদের প্রতি তাঁর পরমার্শ, “আশা করি, জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে বিরোধী দলগুলিও বিলটিতে সম্মতি দেবেন।” |
|
|
|
|
|