রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার টানা বিপর্যয় প্রশ্ন তুলে দিল কোচ ডব্লিউ ভি রামনের ভবিষ্যত নিয়ে। এবং যা পরিস্থিতি, তাতে বাংলার ক্রিকেট-আকাশে যদি বিপর্যয়ের মেঘের এমন ঘনঘটা চলতেই থাকে, তা হলে রামনের চুক্তির পূর্ণনবীকরণ না-ও হতে পারে।
মঙ্গলবার রাজকোটে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লাঞ্চের আগেই গুটিয়ে যায় বাংলা। মাত্র ১৬০ রানে শেষ দ্বিতীয় ইনিংস। আর হারের ব্যবধান? বেশি নয়, ২৭০ মাত্র!
ঘরের মাঠে গুজরাতের বিরুদ্ধে নিশ্চিত ছ’পয়েন্ট ফেলে আসা। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে বিশ্রী হার। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে কোনও মতে এক পয়েন্ট। শেষে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমন দুর্দশা। এর পর বিস্ফোরণ, বিতর্কের ‘ককটেল’ না ঘটলেই বোধহয় আশ্চর্যের ছিল।
ক্রিকেটাররা তো বটেই, তবে বেশি করে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে বাংলা কোচ ডব্লিউ ভি রামনকে। নেপথ্যে, রাজকোটের স্পিনিং ট্র্যাকে তাঁর এক স্পিনার নিয়ে নামার সিদ্ধান্ত! অথচ হাতে অরিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন। পনেরোতেই ছিলেন। যিনি বাঁ-হাতি স্পিনার বলে পরিচিত। সিএবি-র মতে রামনের এই সিদ্ধান্ত ‘ঐতিহাসিক ভুল’। কর্তাদের কেউ কেউ এমনও বলে দিচ্ছেন, অন্যান্য ক্রিকেট সংস্থার মতো সিএবিও পারফরম্যান্স বোঝে। রঞ্জিতে যদি শেষ পর্যন্ত এই হাল হয়, বছরের শেষে নতুন কোচের কথা ভাবতে হবে! সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে পরিষ্কার বলে দিলেন, “সৌরাষ্ট্র যে পিচে তিন স্পিনার খেলাতে পারে, আমরা কেন এক স্পিনারে? কোন যুক্তিতে? রামন অতীতে ট্রফি দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু রঞ্জি ট্রফিটাই আসল। সেখানে তো হাল খারাপ। তা হলে স্থানীয় কোচেরা কী দোষ করল?”
কর্তারা আরও চটেছেন টিমকে ফেলে রামনের আগেভাগে শহরে চলে আসার খবরে। বাংলা ফিরছে বুধবার। কিন্তু রামন এ দিনই শহরে ঢুকে পড়েছেন। টিমের এক সিনিয়র ক্রিকেটার বলেই ফেললেন, “জন্মে এ জিনিস দেখিনি। অবস্থাটা কী, বুঝে নিন।”
অবস্থার নমুনা চাই?
এক) টিম স্পিরিট বলে কোনও নাকি বস্তু নেই। মুম্বই ম্যাচের পর বাদ পড়া কোনও কোনও ক্রিকেটার শহরে ফিরে ঘনিষ্ঠমহলে বলে ফেলেছেন, “মনে হচ্ছে হাজত থেকে মুক্তি পেলাম!”
দুই) নির্বাচকরা টিমের সঙ্গে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন। মধ্যপ্রদেশ ম্যাচের পর থেকে। কারণ সেখানে নাকি উপস্থিত নির্বাচককে দল নির্বাচনে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
তিন) টিমের জঘন্য স্ট্র্যাটেজি। কোনও ম্যাচে নামছে আট ব্যাটসম্যান। কখনও আবার টার্নারে নামানো হচ্ছে এক স্পিনার।
নির্বাচকরা যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বললেও কম বলা হয়। তাঁরা মোটামুটি ঠিকতই করে ফেলেছেন, টিম ফিরলে জরুরি বৈঠক ডাকা হবে। টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে জবাবদিহি চাওয়া হবে টানা বিপর্যয় নিয়ে। এক নির্বাচক ফুঁসতে ফুঁসতে বলছিলেন, “ওরা দেখে বুঝতে পারে না, কোনটা টার্নার, কোনটা নয়? অরিত্র চট্টোপাধ্যায়কে কী আমরা ঘুরতে পাঠিয়েছিলাম?”
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মনোজ তিওয়ারির বাকি রঞ্জি থেকে ছিটকে যাওয়া। বাকি দু’টো ম্যাচে অধিনায়ক কে হবেন? নির্বাচকরা ঠিক করেছেন, ঋদ্ধিমান সাহাকেই বলা হবে। |